বাস থেকে প্রতিবন্ধী নারীকে ধাক্কা: চালক-হেলপার রিমান্ডে
ঢাকার কেরানীগঞ্জে চলন্ত বাস থেকে বাকপ্রতিবন্ধী এক নারী যাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় ‘এন মল্লিক’ পরিবহনের বাসের চালক ও হেলপারের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
তারা হলেন- বাসচালক মো. সবুজ (২৫) ও হেলপার মো. নাহিদ (১৯)।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (১০ মার্চ) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাইরুজ তাসনীম শুনানি শেষে রিমান্ডের এ আদেশ দেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে আসামিদের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিত বিচারক তাদের দুই দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (৯ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, বাকপ্রতিবন্ধী ওই নারীকে বাস থেকে ফেলে দেওয়ার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ঘটনাটি মানুষের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ওই নারীকে যে পাশবিক নির্যাতন করে ফেলে দেওয়া হয়েছে তা সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করেছে। পরে ঘটনাটি র্যাবের সাইবার ইউনিটের নজরে এলে র্যাবের গোয়েন্দা ও র্যাব-১০ এর একটি টিম বাসের হেলপার ও চালককে আটকের জন্য অভিযান পরিচালনা করে।
পরে র্যাব-১০ এর একটি দল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টা ২২ মিনিটে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ধলেশ্বরের কুচিয়ামারা এলাকা থেকে বাসচালক মো. সবুজ (২৫) ও হেলপার মো. নাহিদকে (১৯) আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন, নগদ ৮০০ টাকা ও একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স (হালকা যানবাহন) জব্দ করা হয়। এ সময় বাসটিও জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানিয়েছে যে বাকপ্রতিবন্ধী ওই নারী কেরানীগঞ্জের কোনাখোলা এলাকা থেকে বাসে ওঠেন। পরে তার কাছে হেলপার ভাড়া চাইলে তিনি তাকে কাগজে কলমে লিখে জানান যে তার কাছে পর্যাপ্ত টাকা নেই। এই কথা শোনে হেলপার ক্ষিপ্ত হয়ে ওই নারীর সঙ্গে তর্কাতর্কি করেন। ওই নারীর সঙ্গে এমন আচরণ করতে দেখে বাসের অন্য যাত্রীরাও হেলপারকে বাধা দেয়। কিন্তু সে কারো কথা না শুনে এক পর্যায়ে চালকের নির্দেশে ওই নারীকে চলন্ত বাস থেকে ছুড়ে ফেলে দেয়।
পরে স্থানীয়রা ওই নারীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। এ ঘটনায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করেন বাকপ্রতিবন্ধী নারীর এক স্বজন।
তিনি আরও বলেন, আমরা তদন্তে জানতে পারি ওই নারী এন মল্লিক পরিবহনের নিয়মিত যাত্রী ছিলেন। পরিবহনের একজন কর্মকর্তা বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় ওই নারীর জন্য ভাড়া শিথিল করেছিলেন।
চালক ও হেলপার পালিয়ে গিয়েছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঘটনার পর চালক ও হেলপার স্বাভাবিকই ছিলেন। কিন্তু ঘটনাটি ভাইরাল হওয়ায় তারা পালিয়ে যায়। পরে তাদের আটক করা হয়।
টিএইচ/জেডএস