নির্বাচন ও গণতন্ত্রের সংকট বিষয়ক গণসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণকালে রাজধানীর শাহবাগে প্রকৌশলী ম. ইনামুল হককে লাঞ্ছনার ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ৩২ বিশিষ্ট নাগরিক।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে এ নিন্দা প্রকাশ করা হয়। একইসঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।

বিবৃতিতে তারা বলেন, প্রকৌশলী ইনামুল হক গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার নিয়ে কথা বলায় শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন। এ হামলায় একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমরা গভীর বেদনাদাহত, বিক্ষুব্ধ ও স্তম্ভিত। এটা নিছক ব্যক্তির ওপর হামলা নয়, এর সঙ্গে অধিকার ও নাগরিক মর্যাদার প্রশ্নটি জড়িত। আমরা ৩২ জন নাগরিক এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সে সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে/ব্যক্তিবর্গকে শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

তারা আরো বলেন, আমরা গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পেরেছি যে, গত ২৪ ডিসেম্বর জনাব ইনামুল হক রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় তার কয়েকজন সহযোগীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিদ্যমান রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় নির্বাচন ও গণতন্ত্রের সংকট নিয়ে আলাপ করছিলেন ও গণসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করছিলেন। যা তার সংবিধান প্রদত্ত নাগরিক অধিকার। যে কোনো নাগরিকেরই দেশের রাজনীতি নিয়ে কথা বলা, সমালোচনা করা ও সভা-সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু এসময় জনাব ইনামুল হককে যেরকম ন্যক্কারজনক শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার ও হেনস্থা করা হয়েছে তা সুস্পষ্টভাবে একজন নাগরিকের মত প্রকাশের অধিকার ও সভা-সমাবেশের অধিকারের ওপর মারাত্মক আঘাত।

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে তারা বলেন, আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি যে জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র ও বাংলাদেশের সংবিধানে সংরক্ষিত স্বাধীন মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অঙ্গীকার সুরক্ষাসহ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ১৬ বাস্তবায়নে রাষ্ট্র ও সরকারের অঙ্গিকার বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করছি, অবিলম্বে প্রকৌশলী জনাব ইনামুল হককে হেনস্থাকারী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। অন্যথায় এটি বিচারহীনতার আরেকটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। 

বিবৃতিতে সাক্ষর করেছেন যারা-

১. অধ্যাপক মাহবুব উল্যাহ ২. অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী ৩. অধ্যাপক আসিফ নজরুল ৪. অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম ৫. অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দিন খান ৬. অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান ৭.অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমেদ ৮. ড. মাহবুব হোসেন ৯. সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলি ১০. মানবাধিকার কর্মী নুর খান লিটন ১১. অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ ১২. সৈয়দ আবদাল আহমদ ১৩. ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ১৪. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শামীমা সুলতানা ১৫. কবি আবদুল হাই শিকদার ১৬. অধ্যাপক কামরুন্নেসা খন্দকার ১৭. পরিবেশ ও জলবায়ু নীতি বিশ্লেষক এম জাকির হোসেন খান ১৮. কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক মাহবুব মোর্শেদ ১৯. ড. মুনির উদ্দিন আহমেদ ২০. ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ২১. গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মারুফ মল্লিক ২২. সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া ২৩. মো. সাইমুম রেজা তালুকদার ২৪. ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান ২৫. ব্যারিস্টার জিশান মহসিন ২৬. কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র ২৭. মোহাম্মদ শামসুদ্দিন ২৮. শেখ রোকন ২৯. কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক এহসান মাহমুদ ৩০. লেখক ও গবেষক জাকারিয়া পলাশ ৩১. ডেন্টিস্ট জাফর মাহমুদ ৩২. আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক।

এইচআর/এফকে