গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে বিশ্ব ইজতেমায় যেন হকারদের সংখ্যা বাড়ছেই। প্রতিনিয়ত শত শত নতুন নতুন হকারের মিলনমেলা বসছে এখানে। বিকিকিনিতে যেন ইদ লেগেছে হকারদের। লাখ লাখ মুসল্লি দেখে দামও হাঁকাচ্ছে দ্বিগুণ।

রোববার ইজতেমা ময়দানে সরেজমিনে দেখা যায়, আব্দুল্লাপুর, টঙ্গী ব্রিজ, টঙ্গী এলাকার আশপাশের রাস্তা সব জায়গায় হকার আর হকার। ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের কাছে জায়নামাজ, টুপি, তসবিহ বিক্রি করেছে তারা। এছাড়াও বিক্রি করছেন শীতের কাপড়, ব্রেজার, মাপলার, কান-টুপিও।

নিম্নমানের জায়নামাজ বিক্রি করছেন ১০০ টাকা। যেটা সাধারণত বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। ৬০ টাকার নামাজের পাটি বিক্রি করছেন ১৬০ টাকা। ১০ টাকার টুপি বিক্রি করছেন ২০ টাকা। ১০০ থেকে ১২০ টাকার লম্বা পাটি বিক্রি করছেন ৩০০-৩৬০ টাকা। বাচ্চাদের পান্জাবি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। আর ৩০ টাকার মোজা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।

এছাড়াও শীতের চাদর বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা পিস এবং ব্রেজার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। আরও নানা পণ্যও মিলছে ইজতেমা ময়দানের আশেপাশে।

এদিকে ইজতেমা মাঠের পাশেই টুপি বিক্রি করছিলেন আজিজুল হক নামে এক ব্যক্তি। কেমন বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভালই বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসাও ভালো হচ্ছে।

প্রকৃত মূল্যের চেয়ে বেশি রাখছেন কী না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা কাছ থেকে যেমন রাখতে পারছি, সেই দামে বিক্রি করছি। কাস্টমার আসলে ফেরত দিচ্ছি না।

তিনি টুপির পাশাপাশি জায়নামাজ, আতর এবং তসবিহ বিক্রি করছেন।

ব্রেজার বিক্রি করছেন মিন্টু মিয়া নামের আরেক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারে থাকি, আমার বড় ভাই এই এলাকায় ব্লেজার বিক্রি করেন। আমি তাকে সহযোগিতা করতে আজকে এখানে দোকান নিয়ে বসেছি, বিক্রিও ভালই হচ্ছে। মোনাজাত শেষে চলে যাবো।

রামপুরা থেকে বন্ধুদের সঙ্গে আসা রইসুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখানে প্রতিটি জিনিসের দাম প্রায় ডাবল চাচ্ছে তাই না কিনেই চলে যাচ্ছি।

এদিকে বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে রোববার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষেরা ইজতেমার মাঠে উপস্থিত হয়েছেন। সবাই আখেরি মোনাজাতে দেশ, জাতি ও মানবতার জন্য দোয়া করছেন। বিশ্ব শান্তি ও কল্যাণ চেয়ে মহান আল্লাহর দরবারে আকুতি জানাচ্ছেন, করছেন পাপ থেকে মুক্তির মিনতি। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ থেকে ইজতেমা ময়দানে এসেছেন রিপন মিয়া। তিনি জানান, আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে রাতেই ইজতেমা ময়দানে এসেছি।

আনিস নামের আরেক মুসল্লি জানান, শেষ রাতে সাভার থেকে মোটরসাইকেলে চড়ে ইজতেমা মাঠে এসে ফজরের নামাজ আদায় করেছেন। এরপর তিনি আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে বসেছেন। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়ে দুপুরে তিনি সাভারে ফিরে যাবেন।

এমআই/এমজে