টঙ্গীর তুরাগ তীরে লাখো ধর্মপ্রাণ মানুষের উপস্থিতিতে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে মানুষ ছুটে এসেছেন মোনাজাতে শরিক হতে। রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়। 

রোববার সকাল থেকেই আখেরি মোনাজাতের কারণে ইজতেমা মাঠের আশপাশের সড়কের যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত ছিল। যারা ইজতেমার ময়দানে পৌঁছাতে পারেননি তারা পথে-ঘাটে, বাস, রিকশা, আশপাশের মসজিদ, দোকান-পাটে বসেও মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন। ফেসবুক লাইভ, এফএম রেডিও, হ্যান্ড মাইক, মসজিদের বড় মাইক ও অনলাইনের মাধ্যমে ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন। 

সম্মিলিত আমিন, আমিন ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো ইজতেমা ময়দান। সর্বস্তরের মানুষ অশ্রুসিক্ত নয়নে আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। সেই প্রার্থনার তরঙ্গ এসে মিলেছে দূর-দূরান্তে হাত উঠানো মানুষের মাঝেও।

মোনাজাতে নিজেদের হৃদয়ের আবেগ-অনুভূতি আল্লাহর কাছে তুলে ধরেছেন, অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ‘আমিন’, ‘আমিন’ ধ্বনি আর চোখের পানিতে বুক ভাসিয়েছেন তারা। 

আব্দুল্লাহপুর ব্রিজের পাশে মসজিদের মাইক থেকে ভেসে আসছে ইজতেমার ময়দানের আখেরি মোনাজাতের ধ্বনি।  ‘আমিন’, ‘আমিন’ বলে নিজেদের সপে দিচ্ছেন খণ্ড খণ্ড দলে বিভক্ত হয়ে সড়কে বসে পড়া মানুষেরা।

টঙ্গী ব্রিজের পাশে অস্থায়ী চায়ের দোকান বসানো খলিলুর রহমান তার দোকানের ব্রেঞ্চগুলো ছেড়ে দিয়েছেন দোয়ায় অংশ নেওয়ার জন্য। তিনি বলেন, প্রতি বছরই এখানে মাইকে মাধ্যমে শুনে মুসল্লিরা এখানে মোনাজাতে অংশ নেন। এখানে অনেকে রেডিও বা লাইভ শুনে অথবা মসজিদের মাইকে দোয়া শুনে তারা অংশগ্রহণ করেন। আজও মাইকে শুনে এখানে হাজার হাজার মুসল্লি দোয়ায় অংশ নিয়েছেন।

আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন ইজতেমায় তাবলিগের শীর্ষ মুরব্বি দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভী। এর আগে তিনি হেদায়েতি বয়ান করেন। হেদায়েতি বয়ান বাংলায় তরজমা করেন মাওলানা আব্দুল্লাহ মনসুর।

৬২ দেশের প্রায় ৮ হাজার ও দেশের লাখ লাখ মুসল্লির আগমনে মুখর ইজতেমা ময়দানসহ টঙ্গীর আশপাশ। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শনিবার (২১ জানুয়ারি) রাত থেকেই ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেন মুসল্লিরা। শীত উপেক্ষা বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে জড়ো হয়েছেন লাখো মুসল্লি। 

গত ১৫ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। মাওলানা জুবাইরের অনুসারীরা এতে অংশগ্রহণ করেন। এরপর চারদিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি শুরু হয়েছে দ্বিতীয় পক্ষের (মাওলানা সাদের অনুসারী) বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন। আজ আখেরি মোনাজাতে মধ্য দিয়ে এই পর্ব শেষ হবে।

এএসএস/ওএফ