নির্বাচন কমিশন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রকল্পের মেয়াদ আরও ছয়মাস থেকে একবছর বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান। 

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান। 

প্রকল্প পরিচালক জানান, এক্ষেত্রে তারা দুটি পরিকল্পনা রেখেছেন—একটি খরচ বৃদ্ধিসহ আর অন্যটি খরচ বৃদ্ধি ছাড়া। খরচ বাড়ানোর আসলে খুব একটা নেই। সম্প্রতি প্রকল্পটিকে ‘বি’ ক্যাটাগরি করা হয়েছে। যার ফলে খরচে কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। সেক্ষেত্রে অনেক জায়গায় অর্থ পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বকেয়া কিছুটা থেকেই যাবে।

তিনি বলেন, নতুন প্রস্তাব যাওয়ার আগেই প্ল্যানিং কমিশনে আমরা একটা রিভাইস ডিপিপি দিয়ে রেখেছিলাম। সেটাকে তারা ফেরত পাঠিয়েছে। গত বছর জুন মাসে পাঠিয়েছিলাম, যে আমাদের একটা রিভিশন প্রয়োজন। একটা প্রজেক্ট করতে গেলে সময় দরকার হয়। এখনো জুন, ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জুনে শেষ করার পরিকল্পনা আছে।

প্রকল্প চালাতে গিয়ে নানা ধরনের আর্থিক খাত তৈরি করতে হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যেগুলো প্রাথমিক ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল না। সেসব প্রকল্পের প্রপোজাল রেডি করে দিচ্ছি। একটা হচ্ছে এক্সটেনশন। বাট একটা রিভিশন দরকার। রিভিশনটা এক্সটেনশনসহ করা দরকার। সামনে ইলেকশন আছে সেটাকে ধরে একটা রিভিশনের পিরিয়ড ধরে প্রোজেক্টটি ক্লোজ করা। ইসি সচিবালয় যেটাকে গ্রহণযোগ্য মনে করবে, তারা সেটাকে গ্রহণ করে অনুমোদনের ব্যবস্থা করবে। 

তিনি আরও বলেন, চলমান ইভিএম প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাপারে আমরা এখনো প্রস্তাব দেইনি। পূর্বের প্রকল্প প্রস্তাবনা যেটা ছিল, যেটা চলমান আছে। সেই ডিপিপির একটা রিভিশন দরকার। সেই রিভিশন নিয়ে একটা প্রস্তাবনা আমরা রেডি করছি। সচিবালয়ের সঙ্গে আমাদের মৌখিকভাবে কথা হয়েছে। তারা বিভিন্ন গাইডলাইন দিয়েছে। সেগুলোর আলোকে আমরা প্রস্তাব রেডি করছি। সচিবালয় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। 

ইভিএম সংরক্ষণে গোডাউন ভাড়া সংক্রান্ত জটিলতা সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রকল্প কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্প থেকে কোনো গোডাউন ভাড়া নেওয়া হয়নি। আসলে এ বিষয়ে আমরা ওইভাবে চিন্তা করিনি। তবে এবার চেষ্টা করব। গোডাউন ভাড়ার বিষয়ে আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। তারা গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে রেফার করেছে। সেখান থেকে এটাকে ভেরিফাই করা হবে। সেটা হয়ে গেলে ভাড়ার জটিলতা দূর হবে। বিএমটিএফের সঙ্গে যে বকেয়া আছে সেটা প্রকল্প থেকে যাবে না রাজস্ব থেকে যাবে—এটা তখন সিদ্ধান্ত হবে। 

ইভিএম মেশিনের কিইউসি সম্পর্কে জানতে চাইলে রাকিবুল হাসান বলেন, পাঁচটি অঞ্চলে কিইউসি শেষ করা হয়েছে। তবে ঠিক কতগুলো ত্রুটিপূর্ণ সে ব্যাপারে আরেকটু সময় লাগবে। 

পাঁচটি অঞ্চলে ভালো-খারাপের অনুপাত কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ভালো-খারাপের বিষয় নয়। মেশিন ভালো আছে। কিন্তু অমাদের মেশিনের কিছু সার্ভিসিং দরকার। কিছু মেশিন একদমই খারাপ হয়ে গেছে। তবে কী ধরনের খারাপ এটা আগেই আসলে বলা সম্ভব না। 

নির্বাচন পরিচালনা করতে একটি সেফ স্টক রাখতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্টকটা রাখার জন্য বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিকে (বিএমটিএফ) একটা মেশিন স্টক করতে হচ্ছে। মেশিন মেরামতের জন্য এবং ভোটের জন্য নতুন মেশিন সংরক্ষণ করতে হয়। যার ফলে ওভাবে ক্যালকুলেশন করা এখনো সম্ভব হয়নি।

কত শতাংশ ইভিএম ত্রুটিপূর্ণ পাওয়া গেছে জানতে চাইলে প্রকল্প কর্মকর্তা বলেন, অঞ্চলগুলো যেভাবে ইভিএম নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছে, সেভাবে মতামত নিয়ে ইভিএমগুলো পাঠিয়েছি। বিএমটিএফের কাছ থেকে ফাইনালি একটা রিপোর্ট  পাব। বিএমটিএফ যেগুলোকে ত্রুটিপূর্ণ বলবে সেগুলো আমাদের রিপেয়ার করে দেবে। ধারাবাহিকভাবে নির্বাচন চলছে, তাই বিএমটিএফকে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকতে হচ্ছে। বিএমটিএফের পক্ষে এতগুলো মেশিন যাচাই-বাছাই সম্ভব নয়। তারা ধীরে ধীরে যাচাই-বাছাই করবে, যা এখনো প্রসেসে আছে। মার্চের মধ্যে কিইউসি শেষ করার চেষ্টা চলছে।

এসআর/কেএ