বার্ষিক বিক্রয় তিন কোটি টাকা এমন দেশীয় খাবারের হোটেল ও রেস্তোরাঁর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বাধ্যতামূলকের আদেশ বাতিল চায় বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি।

রোববার (১৪ মার্চ) বিকেলে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রাক বাজেট আলোচনায় সংগঠনটির সভাপতি মো. ওসমান গনি এ প্রস্তাব দেন।

তিনি বলেন, দেশীয় খাবারের হোটেল ও রেস্তোরাঁর মধ্যে যাদের বার্ষিক বিক্রয় তিন কোটি টাকা তাদের ইএফডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দেশীয় রেস্তোরাঁ ও গ্রামীণ দই-মিষ্টির দোকানগুলোর বেশিরভাগ মালিকই অর্ধ শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত। এসব দোকানে মালিক নিজেই সব দায়িত্ব পালন করেন। তাই এসব দেশীয় রেস্তোরাঁ ও গ্রামীণ দই-মিষ্টির দোকানে ইএফডি মেশিন সংযোজন করা সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, হোটেল-রেস্তোরাঁ ও দই-মিষ্টি খাতে মূসক (মূল্য সংযোজন কর) নিবন্ধন বাধ্যতামূলক ও ত্রি-স্তর মূসক করা হলে অনেক জটিলতা আপনা-আপনি কমে যাবে। জটিলতা ও হয়রানি কমায় রাজস্ব আদায় বহুগুণে বাড়বে এবং করদাতা ও কর আদায়কারী কেউই কোনো দুর্নীতি করার সুযোগ পাবেন না। দেশীয় খাবারের যেসব রেস্তোরাঁর বার্ষিক বিক্রয় তিন কোটি টাকা সেসব প্রতিষ্ঠানের জন্য ৩ শতাংশ ভ্যাট করার দাবিও জানান তিনি।

সমিতির পক্ষে প্রস্তাবনায় বলা হয়, ছোট বড় এসি কিংবা নন এসি সব খাদ্য স্থাপনাকে ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। সব খাদ্য স্থাপনার ভ্যাট রেয়াতের হার নির্দিষ্ট করে দেওয়া যেতে পারে।

এ বিষয়ে সংগঠনের নেতারা বলেন, দেশীয় খাবারের হোটেল-রেস্তোরাঁ ও দই- মিষ্টির দোকানে ব্যবহৃত অধিকাংশ উপকরণ কৃষিজাত পণ্য বিধায় ভ্যাট নেই। কিছু উপকরণ ভ্যাট পরিশোধ করেই বাজারে আসে। তার ওপর বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির বিলের সঙ্গে ভ্যাট যুক্ত থাকে। কিন্তু বাস্তবসম্মত নানা কারণে মালিকরা রেয়াত নিতে পারেন না। সুতরাং দেশীয় খাবারের হোটেল ও রেস্তোরাঁর রেয়াতের হার করে দেওয়া হোক।

অন্যদিকে দেশীয় খাবারের যেসব রেস্তোরাঁর বার্ষিক বিক্রয় ৬ কোটি টাকা, সেসব প্রতিষ্ঠানের জন্য ৬ শতাংশ হারে মূসক আরোপ করে বাকি রেস্তোরাঁর ১০ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করে মালিক সমিতি।

প্রাক-বাজেট আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন ব্যাটারি ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এবিএমইএবি), ট্যুরিস্ট গাইড অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও ট্যুর অপারেটর অব বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ। এতে সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। এনবিআরের পক্ষ থেকে সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, সদস্য সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, সদস্য মো. মাসুদ সাদিকসহ বাজেট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 
আরএম/আরএইচ