কাস্টমসের নিলামের কাগজ ব্যবহার করে চোরাচালান হচ্ছে পোশাক। চট্টগ্রামে এস এ পরিবহন কুরিয়ার সার্ভিসের সামনে থেকে কাপড়ের বড় একটি চালান আটকের পর বেরিয়ে আসে এ তথ্য।

গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরের কোতোয়ালি থানার কাজির দেউরি এলাকা থেকে ৫২ লাখ টাকার চোরাই কাপড়ের চালান আটক করে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এরপরই বেরিয়ে আসে অভিযুক্ত নজরুল ইসলামের কাপড় চোরাচালানের অভিনব পদ্ধতি।

অভিযোগ উঠেছে, একবার চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম থেকে কাপড়ের একটি চালান ক্রয় করেছিলেন অভিযুক্ত নজরুল। এরপর সেই কাগজপত্র ব্যবহার করে বিভিন্ন পোশাক কারখানা থেকে চোরাই কাপড় সংগ্রহ করে পরিবহন এবং খোলাবাজারে বিক্রি করছেন তিনি। 

কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার একটি পোশাক কারখানার গোডাউন থেকে একটি চালান পাচার হওয়ার তথ্য পেয়ে মাঠে নামে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। নজরদারিতে তারা দেখতে পায়- একটি কাভার্ডভ্যানে করে কর্ণফুলী উপজেলায় মালামাল লোড হয়ে চালানটি সরাসরি নগরীর কাজির দেউরি এস এ পরিবহনের সামনে চলে আসে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টায় সংস্থাটির কর্মকর্তারা চালানে থাকা মালামাল জব্দ করে।

নিলামের মাধ্যমে এসব কাপড় ক্রয় করা হয়েছে বলে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে দাবি করেন চালানের মালিক নজরুল ইসলাম। জব্দ তালিকা থেকে জানা যায়, এ চালানে মোট কাপড় রয়েছে ৮ হাজার ৬১২ কেজি। আর এটির বাজারমূল্য আনুমানিক ৫২ লাখ টাকা।

নিলাম সংক্রান্ত কাগজপত্রে দেখা গেছে, ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর নিলাম থেকে কাপড় ক্রয় করেন নজরুল ইসলাম। ১০ হাজার ৬৯৪ কেজি ওজনের চালানটি ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আমদানি করা হয়েছিল। আর কাপড়গুলো ছিল এক রঙের।

তবে অভিযানে জব্দ হওয়া কাপড়ে ২০২২ সালের সিল পাওয়া যায়। একইসঙ্গে চালানে আট রঙের কাপড় পাওয়া গেছে। এতে করে প্রমাণিত হয় আটক হওয়া চালান এবং কাগজ উপস্থাপন করা চালান এক নয়।

কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক উত্তম চাকমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, চট্টগ্রাম নগরের টেরিবাজার থেকে চালানটি লোড করা হয়েছিল বলে এস এ পরিবহনের কাগজে উল্লেখ করা হয়। তবে সিসিটিভি ফুটেজে বিশ্লেষণ করে দেখা যায়- গাড়িটি কর্ণফুলী থেকে লোড হয়ে চট্টগ্রাম পৌঁছায়। আবার ৫৫ হাজার টাকা বুকিং দিয়ে চালানটি নারায়ণগঞ্জে পাঠানোর কথা ছিল। যদিও ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে সরাসরি কাভার্ডভ্যানে সহজেই নারায়ণগঞ্জ পণ্য পৌঁছানো যায়। এ থেকে বুঝা যায় এটি চোরাই মালামাল।

তিনি আরও বলেন, নজরুল একবার নিলামে কাপড় কিনে সেই কাগজ চোরাচালানের কাজে ব্যবহার করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে নগরীর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

এমআর/এমজে