ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিষ্কার এবং আলোকিত থাকায় আশপাশের এলাকার মশাগুলো বিমানবন্দরে এসে উৎপাত করে। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মশার উপদ্রবের বিষয়ে এই ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেবিচক মশক নিধনে লার্ভা ধ্বংসকরণ, নিয়মিত ফগিং, পতিত জমি ও জলাশয়ের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে; যা অন্যবারের চেয়ে বড় পরিসরে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজের জন্য সেই এলাকার ডােবা-জলাশয়গুলো ভরাট করা হয়েছে। বেবিচক আবাসিক এলাকাতেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং খাল ও জলাশয়গুলাে থেকে মশা নিধনকল্পে কচুরিপানা অপসারণের বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। 

এছাড়াও বিমানবন্দর এলাকায় মশক নিধন কর্মকাণ্ড তদারকির জন্য ২১ জানুয়ারি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। তারপর এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় একটি টাস্কফোর্স গঠন করে। টাস্কফোর্সে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দু'জন যুগ্মসচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর, সিটি করপােরেশন ও বেবিচকের প্রতিনিধি রয়েছেন। এই টাস্কফোর্সের সদস্যরা বেবিচকের মশকনিধন কার্যক্রমগুলাে সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। 

বেবিচক বলছে, বিশেষজ্ঞের মতে মশা প্রায় ৫ কিলােমিটার পর্যন্ত আসতে পারে এবং আলো দেখলে চলে আসে। বিমানবন্দর পরিষ্কার ও আলােকিত হওয়ায় রাত হওয়ার সাথে সাথে পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে মশা চলে আসে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিমানবন্দর ও এর আশপাশের এলাকাগুলােতে মশক নিধন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য সংঘবদ্ধ কার্যক্রম অপরিহার্য। বিমানবন্দর এলাকার আশপাশে বসবাসরত জনসাধারণ এবং জনস্বার্থে নিয়োজিত সিটি কপোরেশনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে। 

মশা নিধন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গতকাল বিমানবন্দর রেল স্টেশনের পেছনে, হাজী ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা, আশিয়ান সিটি এবং দক্ষিণখান বাজার এলাকা পরিদর্শন করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ সময় বিমানবন্দরের পেছনে রেলওয়ের একটি খাল, সিভিল এভিয়েশনের একটি খালি জায়গায়, হাজী ক্যাম্পের পাশে সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা একটি জলাশয়সহ আশিয়ান সিটির বিভিন্ন স্থানে ময়লা-আবর্জনা, নোংরা-বদ্ধ পানি, কচুরিপানা এবং অসংখ্য মশার লার্ভা দেখতে পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেয়র। জায়গাগুলো পরিদর্শন শেষে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন। 

বিমানবন্দর স্টেশনের পেছনের অংশ পরিদর্শনকালে আতিকুল ইসলাম বলেন, এটি রেলওয়ের জায়গা। পাশে সিভিল এভিয়েশনের জায়গা। সেটার অবস্থা আরও খারাপ। আমরা চেষ্টা করছি যেগুলো আমাদের জায়গা, সেগুলো পরিষ্কার করতে। কিন্তু রেলের ও এভিয়েশনের জায়গাগুলো, তাদের পরিষ্কার করা উচিত। আমরা সিভিল এভিয়েশনকে ইতিপূর্বেও বিষয়টি বলেছি। এখন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার নেই।

তিনি আরও বলেন, যে যার যার মতো চলছে। গালি খাচ্ছি আমরা। এটি হতে পারে না। সিভিল এভিয়েশনের এরিয়া বাউন্ডারি দেওয়া, এর ভিতরে যাওয়া যাবে না। সিভিল এভিয়েশনকে বারবার বলা হচ্ছে, এগুলো পরিষ্কার করার জন্য। এখানে কোটি কোটি মশার লার্ভা। সিভিল এভিয়েশনকে কিছুদিন আগে আমরা একটি ভেহিকেল ফগার মেশিন দিয়েছি, যাতে তারা মশা নিধন করতে পারে।

এআর/এনএফ