যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই গানে সাড়া দিয়ে একাই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ করতে মাঠে নেমেছে কিশোরগঞ্জের ছেলে মো. মোখলেছুর রহমান (সাগর)। গলায় প্লাস্টিকের শিকলে বেধে কিছু প্রতীকী চাল, ডাল নিয়ে এই অনিয়মেন বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন এই যুবক।

শুক্রবার (১০ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই যুবককে এক হাতে জাতীয় পতাকা আরেক হাতে মাইক নিয়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ করতে দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, মোখলেছুর নিজের গলায় প্লাস্টিকের শিকলে বেধে রেখেছেন প্রতীকী কিছু চাল, ডাল, এক জোড়া ডিম, চারটি খেজুর, একটি পানির বোতল, কিছু ছোলা বুট, একটি চিপসের প্যাকেট, একটি সাবান, ছোট একটি কাপড় ধোয়ার পাউডারের প্যাকেট, একটি ওষুধের প্যাকেট, ছোট একটি গুড়ো দুধের প্যাকেট ও একটি বিস্কুটের প্যাকেট। এগুলোর পাশাপাশি কাগজে প্রিন্ট করে লেখা রয়েছে- গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল ও পরিবহন ভাড়া এবং গরু, খাসি ও বয়লার মুরগি ও মাছের দাম কমানোর দাবি। আর কপালে বাধা জাতীয় পতাকা এবং গায়েও জাতীয় পতাকা প্রিন্ট সম্বলিত টি-শার্ট। আর এক হাতে ছোট একটি পাইপে বাধা জাতীয় পতাকা, অন্য হাত হ্যান্ড মাইক। সেই মাইক দিয়ে রমজানের আগে দ্রব্যমূল্যের দাম কমাতে সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছেন।

মোখলেছুর জানান, রাজধানীর তেজগাঁও কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেছেন তিনি। এখন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করছেন। চাকরির পাশাপাশি ২০১৩ সাল থেকে এককভাবে মানুষের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রতিবাদ করে আসছে। আগামীতেও করে যাবেন।

প্রথম দিকে এসব নিয়ে মানুষ অনেক হাসিঠাট্টা করতো বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, সামনে রোজা। এখনি দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে মানুষের অবস্থা খুবই খারাপ হবে। নিম্ন আয়ের মানুষ এখনি দুইবেলা খেতে পারেন না। দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার যে হিড়িক চলছে তার লাগাম টেনে না ধরা গেলে কিছুদিন পরে মানুষকে না খেয়ে থাকতে হবে। তার আশা, সরকার এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

এই প্রতিবাদ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কানে পৌঁছাবে কিনা তিনি নিজেও জানেন না। তারপরও তিনি নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন অবস্থায় একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, এই একজন সাগর কি পারবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রুখতে?

এএইচআর/এমজে