কখনো সেনাবাহিনী, কখনো র‍্যাব বা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কর্মকর্তা! এসব পরিচয়ে প্রতারণা করে বেড়াতেন মো. রিয়াদ বিন সেলিম (২৪)। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তিনি নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেও পরিচয় দিতেন। 

শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম র‍্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবছার এ তথ্য জানান।

সম্প্রতি র‍্যাব পরিচয়ে একজনের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে রিয়াদকে আটক করা হয়।

রিয়াদের গ্রামের বাড়িয়া পটিয়া পৌরসভা পাইকপাড়া এলাকায়। তিনি নগরের চান্দগাঁও থানার হাজিরপুল এলাকায় থাকতেন। তার বাবার নাম মো. সেলিম উদ্দিন।

প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন পরিচয়পত্র (ছবি : সংগৃহীত)

র‍্যাব জানায়, রিয়াদ পেশায় একজন গাড়িচালক। তিনি একসময় ডিবির এক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক হিসেবে চাকরি করেছেন। সেসময় থেকে তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির কাজ করে দেওয়ার নামে টাকা নেওয়া শুরু করেন। একপর্যায়ে এটিকেই তিনি পেশা হিসেবে বেছে নেন। তার সেনাবাহিনীতে যোগদানের বড় শখ ছিল। সেই শখ পূরণের আশায় ২০১৯ সালে তিনি সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পদবীর একটি পরিচয়পত্র বানান। এরপর এটি দিয়ে তিনি সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোরের আওতাধীন বিভিন্ন ঠিকাদারের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা লাভের চেষ্টা করেন। একই সঙ্গে তিনি কখনো ইঞ্জিনিয়ার, কখনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিতেন।

এদিকে, এসব পরিচয় একাধিকবার ব্যবহার করে ফেলায় তার শখ জাগে র‌্যাবের কর্মকর্তা হওয়ার। এরপর তিনি র‍্যাবের অফিসিয়াল নম্বরের সঙ্গে মিলিয়ে একটি সিম সংগ্রহ করেন। ওই নম্বর দিয়ে বিভিন্ন লোকজনকে ফোন দিয়ে ওয়ারেন্ট-মামলার কথা বলে টাকা আদায় করতেন। সবশেষ এক ভুক্তভোগীকে হুমকি দেওয়া হলে তিনি বিষয়টি চট্টগ্রাম র‍্যাবকে অবহিত করেন। এরপর শুক্রবার (১০ মার্চ) অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র‍্যাব।

চট্টগ্রাম র‍্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবছার বলেন, আটকের পর সেলিমের মোবাইল চেক করে জানা যায়, তিনি অনলাইনে বিভিন্ন পণ্য অর্ডার করতেন। পরে র‍্যাব পরিচয়ে বিনামূল্যে এসব পণ্য পাওয়ার চেষ্টা করতেন। তিনি প্রথম স্ত্রীর পরিচয় লুকিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। এ বিষয়ে নগরের চকবাজার থানায় তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে মামলা রয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। 

এমআর/কেএ