নির্বাচন কমিশনে (ইসি) রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা নতুন দলগুলো নিয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। তিনি বলেছেন, ১০০ নম্বরের মধ্যে একশই পেতে হবে। এক নম্বর কম পেলেও তাদের নিবন্ধন দেওয়া হবে না।

রোববার (১২ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন>>জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে চায় ২১০ সংস্থা

নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন আবেদন চেয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ৯৩টি রাজনৈতিক দলের আবেদন জমা পড়ে। চালানের টাকা ও সঠিকভাবে নিবন্ধনের আবেদন ফরম পূরণ না করায় ১৪টি দলের আবেদন বাতিলের সুপারিশ করেছে এই কমিটি। এ ছাড়া ৭৭টি দলকে আবেদন সম্পূর্ণ করার জন্য চিঠি দেওয়ার পক্ষে তারা। এছাড়া দুটি দল নিজেরাই তাদের আবেদনপত্র প্রত্যাহার করে নেয়।

কমিশন আইন দ্বারা পরিচালিত হয় জানিয়ে মো. আলমগীর বলেন, ‘কারো ভাবনা দ্বারা পরিচালিত হয় না। আইন ও বিধিতে যা কিছু দেওয়া আছে সে শর্ত যারা শতভাগ পূরণ করতে পারবে তারা নিবন্ধন পাবে। যারা একটি মাত্র পূরণ করতে পারবে না, তারা পাবে না। একশতে একশ পেতে হবে। নিরা নব্বই পেলেও হবে না।’

আরো পড়ুন>>ইভিএম নির্ভরযোগ্য, এটা নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই : সিইসি

শর্টলিস্ট করা হয়নি জানিয়ে মো. আলমগীর বলেন, শুধুমাত্র যারা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন দুটো দল। বাকিগুলোর সংখ্যা বলতে পারব না। তাদের কাগজপত্র শর্টেজ ছিল। ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল, যারা দিয়েছেন তাদেরগুলো আমরা দেখব। আর যারা দিতে পারেননি তারা সেগুলোও আমরা দেখব। তারপর কমিশন দেখবে যাচাই বাছাই করে। যাচাই বাছাই শুরু হয়ে গেছে। জুনের মধ্যে চূড়ান্ত করব।

নাজমুল হুদার দলকে তো নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের তো আর কিছু করার নেই। উনি মারা গেছেন উনার দলের যারা আছেন তারা সিদ্ধান্ত নেবেন পরবর্তী চেয়ারম্যান কে হবেন বা কী হবে। সেটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। নিবন্ধন দেওয়ার প্রক্রিয়া বিধি অনুযায়ী হবে বলে জানান তিনি।

আরো পড়ুন>>‘ইসির অনুমতি ছাড়া কাউকে বদলি করা যাবে না’

নতুনদের অনেকেই সরকার দলের পছন্দের বাইরে আছে। এক্ষেত্রে প্রভাবমুক্ত থেকে নিবন্ধন দেবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবানে তিনি বলেন, আইন ও বিধি অনুযায়ী যারা পাওয়ার যোগ্য তারা নিবন্ধন পাবে, যারা পাওয়ার যোগ্য নয় তারা পাবে না। আইনের বাইরে কোনো কিছু বিবেচ্য বিষয় নাই। যাদের কাগজপত্র ঠিক আছে, তাদেরটাই কেবল মাঠ পর্যায়ে যাচাই হবে। বাকিগুলো হবে না। কোনো রাজনৈতিক সুপারিশ আসেনি। কোথাও থেকে কোনো সুপারিশ আসবেও না।

মো. আলমগীর বলেন, স্পষ্ট করেই বলা আছে। আমাদের বলার কিছু নাই। যেমন যদি মনে করেন ধর্মীয় বা জাতিগত বৈষম্য রাখা হয়, ঘৃণা ছড়ানো হয় এমন কিছু গঠনতন্ত্রে থাকে। তাদের যে কমিটি যেগুলো আছে, সেগুলো ঠিকমত না হলে সংবিধান বিরোধী কিছু থাকলে পাবে না। আইনে এবং বিধির বাইরে কিছুই চলবে না। আমরা আইন এবং বিধি অনুযায়ী দেখব। অন্য কিছু দেখার সুযোগ নাই।

আরো পড়ুন>>ধর্মভিত্তিক দলগুলোর নেতৃত্বে নারীর অবস্থান ‘শূন্য’

নিবন্ধনের শর্ত অনুযায়ী নতুন দল হিসেবে নিবন্ধিত হতে হলে একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দেশের কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি এবং সদস্য হিসেবে অন্তত ১০০টি উপজেলা/মহানগর থানায় প্রত্যেকটিতে কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন সম্বলিত দলিল থাকার শর্ত পূরণ করতে হবে। ২০০৮ সাল থেকে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে দলের নিবন্ধন প্রথা চালুর পর ৪৫টি দল নিবন্ধন পায়। এরমধ্যে ৫টি দলের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় বর্তমানে নিবন্ধিত রয়েছে ৪০টি দল।

এসআর/এমএ