বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আগে কে শ্রদ্ধা জানাবেন— এ নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আগে শ্রদ্ধা জানাতে দ্রুত অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে উঠে যান। এসময় তার পায়ে থাকা জুতা খোলেননি। পরে জুতা পায়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের পুষ্পস্তবক অর্পণের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

বিষয়টি নিয়ে সাতকানিয়াসহ চট্টগ্রামে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কেউ কেউ বলেছেন, তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান অনিচ্ছাকৃত ভুলটি করেছেন। যদিও উপজেলা চেয়ারম্যান বলেছেন, জুতা নয়, মোজা পায়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়েছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষ্যে সাতকানিয়া উপজেলা কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধুর একটি অস্থায়ী প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়। এতে ফুল দিতে আসেন উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব চৌধুরী এবং ইউএনও ফাতেমা তুজ জোহরাসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা। শুরুতে ইউএনও ফুল দিতে চান। তবে তাকে বারণ করেন উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব। তিনি বলেন, প্রোটোকল অনুযায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান সিনিয়র। এজন্য তিনি আগে ফুল দেবেন। এ নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ইউএনওর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। কিছুক্ষণ পর সেখানে আসেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন হাসান চৌধুরী। এরপর তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানকে নিয়ে ফুল দেন। এসময় জুতা না খুলে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রতিকৃতিতে উঠে যান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব বলেন, আগে কে ফুল দেবে এটা নিয়ে এমনি কথা হয়েছে, বাকবিতণ্ডা না। তাছাড়া আমার পায়ে মোজা ছিল। ওইটা জুতা না।

স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা বলছেন, উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব একজন জনপ্রতিনিধি। তিনি আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি যদি জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে জুতা পায়ে উঠে যান তা দুঃখজনক। জুতা নিয়ে প্রতিকৃতিতে ওঠার বিষয়টি নিয়ে উনার প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত। এছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে ইউএনও ঠিক কাজ করেননি। কারণ উপজেলা চেয়ারম্যান গুরুত্বপূর্ণ জনপ্রতিনিধি।

এ বিষয়ে সাতকানিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন হাসান চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলে, কে আগে ফুল দেবে এটা নিয়ে একটু কথাবার্তা হয়েছে। আমি যদিও একটু পরে গেছি। নিয়ম অনুযায়ী আগে উপজেলা চেয়ারম্যান ফুল দিয়েছেন।

চেয়ারম্যানের জুতা পায়ে ওঠার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা দেখলাম। আমিও সঙ্গে উঠেছিলাম। তবে আমার পায়ে জুতা ছিল না।

জানতে চাইলে সাতকানিয়ার ইউএনও ফাতেমা তুজ জোহরা ঢাকা পোস্টকে, উপজেলা চেয়ারম্যান আগে ফুল দিতে চেয়েছেন এবং উনি দিয়েছেন— এতটুকু, এর বেশি কিছু না। উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের মধ্যে সুসম্পর্ক আছে। তাছাড়া কারো জুতা পায়ে থাকার বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না।

জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান এক জনপ্রতিনিধি। তার সঙ্গে ইউএনও মিলেমিশে কাজ করবেন। বাকবিতণ্ডার বিষয়টি আমি শুনিনি। এ ধরনের কিছু না হওয়া ভালো। হয়ত কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকতে পারে। আগামী মিটিংয়ে দুজনের কাছ থেকে বিষয়টি জানব।

এমআর/এসএসএইচ/