বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেছেন, ধর্ষণ একটি পাশবিক অপরাধ। পৃথিবীজুড়ে এটা চলছে। বয়স, অবস্থানগত দিক থেকে প্রত্যেকেই ঝুঁকিতে আছেন। ধর্ষণ কেবল জেন্ডার নয়, সামাজিক ইস্যুও। নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে সবাইকে আন্দোলনে যুক্ত হতে হবে। পাশাপাশি নারীবান্ধব নীতিমালা ও আইন বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের কমিশন অন দ্য স্ট্যাটাস অব উইমেনের (সিএসডব্লিউ) ৬৫তম অধিবেশনে ‘রেপ ইজ অ্যা ক্রাইম অ্যাগেইনস্ট হিউম্যানিটি; ইমপেক্ট অব কোভিড-১৯ পেনডেমিক’ শীর্ষক ইভেন্টে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ফওজিয়া মোসলেম বলেন, সমাজ, নীতিনির্ধারক, সরকারকে সচেতন হতে হবে। বৃহৎ পরিসরে কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। পরিবারে জেন্ডার সমতাপূর্ণ রীতিনীতি চর্চা করতে হবে, প্যারেন্টিং কালচারের (পিতামাতার সংস্কৃতি) সঙ্গে বৈষম্যমূলক সামাজিক সংস্কৃতিরও পরিবর্তন করতে হবে। নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আন্দোলনে সবাইকে যুক্ত হতে হবে, আইন সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।

সভার শুরুতে কি-নোট পেপার উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী নারীর প্রতি সহিংসতার পরিসংখ্যান হতাশাজনক। জাতিসংঘ নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার উত্থানকে ‘ছায়া মহামারি’ হিসেবে অভিহিত করে এবং সহিংসতা বন্ধ করার জন্য বিশ্বব্যাপী সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়ার কথা বলে।

তিনি বলেন, করোনার মধ্যে বিপুল সংখ্যক নারী পোশাক শিল্প ও অন্যান্য খাত থেকে চাকরি হারিয়েছেন। শ্রমজীবী নারীদের চাকরি হারানোর ফলে ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।

সভায় অংশ নেওয়া বক্তারা বলেন, যেকোনো দুর্যোগে নারীর অবস্থা হয় আরও নাজুক। করোনা পরিস্থিতিতেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। করোনাকালীন নারীরা ঘরে অবস্থান করলেও সেখানে পরিবারের পুরুষ সদস্যদের দ্বারা সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের মূল কারণ ক্ষমতা কাঠামোয় পুরুষের আধিপত্য, সমাজে প্রচলিত বৈষম্যমূলক পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি। দেখা গেছে মাত্র ২ শতাংশ ঘটনার বিচার হয়। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে দেখা যাচ্ছে নানা আইন হয়েছে কিন্তু বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. তানিয়া হক; ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও সমন্বিত উন্নয়ন কর্মসূচি বিভাগের ডিরেক্টর আন্না মিনজ; সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম।

জেইউ/এসকেডি