শ্রমিক সংকটের কারণে নির্ধারিত সময়ে নির্মাণ করা যায়নি স্টল

আজ দুপুরে অমর একুশে বইমেলা ২০২১-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী থিমকে সামনে রেখেই সাজানো হয়েছে মেলা প্রাঙ্গণ। যদিও এখন পর্যন্ত স্টল নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি অর্ধশত প্রকাশনী।

বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) বিকালে বইমেলা ঘুরে দেখা যায়, পারিজাত প্রকাশনী, কথা প্রকাশ, বাংলা প্ৰকাশ, জাতীয় সাহিত্য প্রকাশ, আলোর ভুবন, বিশ্ব সাহিত্য ভবন, তাম্রলিপি, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সসহ প্রায় ৫০টি স্টলের কাজ এখনো চলছে। কোনো কোনোটির ৫০ শতাংশ কাজ এখনও শেষ হয়নি। তবে কাজ চললেও কয়েকটি প্রকাশনী বই বিক্রি শুরু করেছে।

স্টল নির্মাণ শেষ না হলেও বই বিক্রি শুরু করেছে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স 

পারিজাত প্রকাশনীর প্রকাশক শওকত হোসেন লিটু ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্বাভাবিক সময় ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা হওয়ার কথা। কিন্তু এ বছর বইমেলা হবে কি না তা নিয়ে শঙ্কা ছিল। পরবর্তী সময়ে মেলা করার সিদ্ধান্ত নিলেও আমরা শ্রমিক পাইনি। শেষদিকে শ্রমিক পাওয়ায় আমাদের কাজ এখনও শেষ হয়নি।

কথা প্রকাশের ম্যানেজার মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, প্রতিবার আমরা স্টল নির্মাণের জন্য ১৫-২০ দিন সময় পাই। কিন্তু এবার পেয়েছি মাত্র ৮-৯ দিন। এ সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা কঠিন। তবুও আজকের মধ্যে আমরা কাজ শেষ করতে পারব আশা করছি।

এ বিষয়ে সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এবার মেলায় ৮৩৪টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তাই কয়েকটি স্টল হয়তো এখনও কাজ শেষ করতে পারেনি। আজকের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বইমেলায় ঘুরতে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খালেদ মাহমুদ বলেন, আজ মেলার প্রথম দিন তাই জনসমাগম অনেক কম। তাছাড়া অধিকাংশ স্টলের কাজ এখনও শেষ হয়নি। করোনার কারণে সবকিছুতেই ব্যাঘাত ঘটছে। তা কাটিয়ে উঠতে আরো সময় লাগবে। সব কিছু ঠিক থাকলে সামনের দিনগুলোয় মেলা আরও জমে উঠবে।

আরিফ নামে আরেক দর্শনার্থী বলেন, বইমেলা নিয়ে আগ্রহ খুব বেশি। তাই প্রথমদিনই ঘুরতে এসেছি। মেলায় একদমই ভিড় নেই, তাছাড়া স্টল নির্মাণ, বই সাজানোসহ যাবতীয় কাজ চলছে। সবমিলে এখনও বইমেলার আমেজ শুরু হয়নি। আশা করি, শিগগিরই বইমেলা পুরনো রূপে ফিরবে।

এখনও অর্ধেক কাজ শেষ হয়নি খান ব্রাদার্সের

আয়োজকরা জানান, এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশের জন্য রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে দিয়ে নতুন করে একটি প্রবেশ ও বের হওয়ার পথসহ তিনটি গেট থাকবে। রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের প্রবেশ গেটের পাশে পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও থাকবে। বিশেষ দিনগুলোয় লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, বাংলা একাডেমির ফেলো এবং রাষ্ট্রীয় সম্মাননাপ্রাপ্ত নাগরিকদের জন্য প্রবেশের বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য মেলাজুড়ে তিন শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টিসহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা বিবেচনায় নিয়ে মেলার অকাঠামো নির্মাণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চারটি জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ভিড় এড়াতে স্টলের সামনে রাখা হয়েছে ফাঁকা জায়গা। সংক্রমণ প্রতিরোধে স্টলের দূরত্বও বাড়ানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৫ লাখ বর্গফুট এলাকাজুড়ে এবারের বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে। অংশ নিয়েছে ৫৪০টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। এবারের বইমেলায় সর্বোচ্চ প্রাধান্য পাচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। মেলায় আগতদের জন্য মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ২৮ দিনব্যাপী মেলা শেষ হবে ১৪ এপ্রিল। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলা। তবে শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলা প্রাঙ্গণ।

এইচআর/এসকেডি/এমএমজে