মশা চিনিয়েছিল খাল, খননে পানি প্রবাহ ফেরাচ্ছে ডিএনসিসি
উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টর সংলগ্ন খিদির খালে পানি প্রবাহ ফিরছে
গত ১৬ মার্চ উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরে সমন্বিত মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। একইদিনে মশক নিধনকর্মীদের মনিটরিংয়ের জন্য বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালু করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। এরপর তিনি মশক নিধন কার্যক্রম পরিদর্শনে বের হন।
মশক নিধন কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে মেয়র দেখতে পান খিদির খালের সংযোগ (স্লুইস গেটের কাছে) মাটি দিয়ে ভরাট করে ‘সাফা টাওয়ার’ নামে প্রস্তাবিত একটি বহুতল মার্কেট সেলস অফিস নির্মাণ করে রেখেছে। এতে খালে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানে কলাগাছ, কচুগাছ, আগাছা ও জঙ্গলে পরিপূর্ণ। এটি মশার প্রজননস্থলেও পরিণত হয়েছে। তাই আতিকুল ইসলাম ভবনটি ভেঙে ফেলার জন্য তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন। নির্দেশনার পর এই অফিস এবং পার্শ্ববর্তী দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়।
বিজ্ঞাপন
এখন সেই খালে খনন কাজের পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। শুক্রবার (১৯ মার্চ) খিদির খালের এই অংশে গিয়ে দেখা যায়, মাটি তোলার বিশেষ গাড়ির মাধ্যমে অবৈধ দখলে থাকা জায়গা উদ্ধার করা হচ্ছে। পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা খালটি পরিষ্কার করছেন।
সেদিন (১৬ মার্চ) মেয়র আতিকুল ইসলাম ঘোষণা দিয়েছিলেন, অবৈধভাবে নির্মিত কোনো স্থাপনা ভাঙতে কোনো বৈধ নোটিশ দেওয়া হবে না। খালের জায়গায় সব ধরনের অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলা হবে। দখল করা এই স্থানটি পুরোটাই সিটি করপোরেশনের। এটি খালের ওপরে। তারা কীভাবে এই জায়গাটি দখল করল? দুই পাশে খিদির খাল মাঝখানে এই জায়গা। অবৈধভাবে কোনো কিছুই দখল করে রাখা যাবে না।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (১৯ মার্চ) এই খালের খনন কাজ পরিদর্শনে আসেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। এসময় ঢাকা পোস্টের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আজ যে জায়গাটিতে দাঁড়িয়ে আছি এটি খিদির খাল। এটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫১ নম্বরে ওয়ার্ডে অবস্থিত। গত ১৬ মার্চ আমরা এখানে এসে দেখলাম খালটির বামে এবং ডানে কানেক্টিভিটি নেই। দখল করা জায়গার নিচ দিয়ে একটা ড্রেন করে রাখা হয়েছিল। খাল দখল করে কারা এখানে এমন কাজ করল?
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বারবার বলছেন জলধারাকে কোনোভাবেই ভরাট করা যাবে না। তারপরও তারা এটা দখল করল, ভরাট করল। এরা অত্যন্ত শক্তিশালী কিন্তু আমরা জনগণকে নিয়ে এখানকার ভবন ভেঙে দিয়েছি, দখল হওয়া জায়গা উদ্ধার করেছি। আমার কাছে অনেক ফোন এসেছিল সময় চেয়ে, আমি কিন্তু সেসব কথা শুনিনি।
মেয়র বলেন, গত পরশু থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এই দখল হওয়া খালের জায়গায় দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে। এখন খালের গতি অনেকটা ফিরে এসেছে। এটা কিন্তু প্রমাণ করে যে, জায়গা দখলের মাধ্যমে খালের পানি প্রবাহ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে দখলদাররা যদি সচেতন না হন, তাহলে কিন্তু আমাকে এই ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে। আর এরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন, জনগণের কাছে এরা কিছুই না।
এএসএস/আরএইচ