পিএইচডি করতে কানাডা যেতে চেয়েছিলেন আব্দুল্লাহ আল সোহান। কিন্তু হলো না। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বাড়িওয়ালাদের মারধরে তার মৃত্যু হয়।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাত ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ীর মানিকনগর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরে অসুস্থ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা ইউনুস খান। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাড়িওয়ালা জামালসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিহত সোহানের বাবা ইউনুস খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সম্প্রতি আমি জানতে পারি আমার ছেলে দোলা নামে একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে। কিন্তু বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে আমার ছেলে ওই মেয়ের বাসায় যায়। পরে সন্দেহ করে আমার ছেলেকে মারধরে করে বাড়িওয়ালা জামালসহ কয়েকজন হত্যা করে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

তিনি বলেন, আমার ছেলে যদি বিয়ে না করে ওই বাসায় যায়, তাহলে পুলিশকে খরব দিতে পারত। অথবা তাদের উদ্দেশ্য যদি খারাপ থাকে কিছু টাকা পয়সা নিয়ে আমার ছেলেকে ছেড়ে দিতে পারত। কিন্তু তারা তা না করে আমার একমাত্র ছেলেকে মেরে ফেলল। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত বাড়িওয়ালা জামালসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আমি গতকাল জানতে পারলাম আমার ছেলে বিয়ে করেছে। সবকিছুই ঠিক আছে, কিন্তু আমার ছেলেকে ওই মেয়ের সামনে এভাবে নির্যাতন করে মেরে ফেলল, তার কি কোনো ভূমিকা ছিল না?

সোহানের বাবা আরও বলেন, আমার ছেলে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স শেষ করেছে। আগামী এপ্রিলের ২২ তারিখে পিএইচডি করার জন্য কানাডা যাওয়ার কথা ছিল। সে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি করত। দেশের বাইরে চলে যাবে সেজন্য কয়েকদিন আগে সে চাকরিটা ছেড়ে দেয়। কিন্তু তার কানাডা যাওয়া হলো না। এই দুষ্কৃতিকারীরা আমার একমাত্র ছেলেকে হত্যা করেছে। 

এ ব্যাপারে যাত্রাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মফিজুল আলম বলেন, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ীর মানিকনগরে মনোয়ারা হাসপাতালের পেছনে ওই যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে রাত ১২টার দিকে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, নিহতের বাবা বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনায় অভিযুক্ত বাড়িওয়ালা জামালসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, ওই যুবককে মারধর করে হত্যা করা তাদের উদ্দেশ্য ছিল না।

এসএএ/কেএ