চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নির্মাণাধীন দেশের বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের ভেতর থেকে বিভিন্ন বিদেশি ইলেকট্রনিকস সরঞ্জাম চুরির ঘটনা ঘটেছে।

রোববার (২ এপ্রিল) ও সোমবার (৩ এপ্রিল) দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় একজনের কাছ থেকে প্রায় ৮৮ লাখ টাকার চোরাই সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- তোফায়েল হোসেন (৩০) ও মো. শাহ আলম (৪০)। তাদের মধ্যে তোফায়েল বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্টোরকিপারের দায়িত্বে ছিলেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, তোফায়েল ও এরশাদ চোরাই হওয়া ইলেকট্রনিকস সরঞ্জামের স্টোর কিপারের দায়িত্বে ছিলেন। তারা দুজন পালাবদল করে ডিউটি করেন। তাদের যোগসাজশে চুরি হওয়ায় কোনো ধরনের তালা ভাঙতে হয়নি বলে কর্তৃপক্ষ অনেকদিন বিষয়টি টের পাননি। তবে একপর্যায়ে ইলেকট্রনিকস সরঞ্জামের পরিমাণে গরমিল হলে তাদের দুজনের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দায়ের করে প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ।

রোববার মামলা করলে তোফায়েলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার বাঁশখালীর কালিপুর ইউনিয়নের গুনাগরি এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশি চালিয়ে শাহ আলমকে গ্রেপ্তার হয়। এ সময় বাস থেকে ১১০টি ইলেকট্রিক্যাল ফ্লেক্সিবল চেইন উদ্ধার করা হয়।

বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, উদ্ধার হওয়া সরঞ্জামগুলো চীন থেকে আনা হয়েছে। এগুলো তামার তৈরি ও অনেক দামি। উদ্ধার হওয়া সরঞ্জামের বাজারমূল্য প্রায় ৮৮ লাখ টাকা। গ্রেপ্তার দুজনকে আজ (সোমবার) আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের তীরে বাঁশখালীর গণ্ডামারায় ৬০৬ একর জমিতে গড়ে উঠছে কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্র। ২০১৬ সালে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় এই বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও এসএস পাওয়ারের মধ্যে চুক্তি সই হয়। পাশাপাশি বিদ্যুৎ কেনাবেচা সংক্রান্ত চুক্তিও সই হয়। ওই বছরই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ যৌথভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং।

প্রকল্পের দুটি ইউনিটের মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। এই প্রকল্পের ৭০ শতাংশের মালিকানা থাকছে এস আলম গ্রুপের ছয়টি প্রতিষ্ঠানের। অবশিষ্ট ৩০ শতাংশের মধ্যে সেপকো ২০ শতাংশ ও চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান এইচটিজি ১০ শতাংশের মালিক।

এমআর/ওএফ