বঙ্গবাজারে মেয়েদের থ্রিপিস, শাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের জামা বিক্রি করতেন কুমিল্লার ব্যবসায়ী নূর আলম। গতকালের আগুনে তার দুটি দোকানের ৮০ লাখ টাকার সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়েছে। সব হারিয়ে পুড়ে যাওয়া দোকানে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছেন নূর আলম। বন্ধু-বান্ধব,আশপাশের দোকানদার কেউ তার কান্না থামাতে পারছে না।  

বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় নূর আলমের দোকানের আর কোনো চিহ্ন নেই, পড়ে আছে শুধু ছাই। সেই ছাইয়ের ওপর দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদলেন  নূর আলম। ভাই শাওন আলম তাকে থামানোর চেষ্টা করলেন, কিন্তু কিছুতেই শান্ত হচ্ছেন না নূর আলম।

নূর আলমের দোকানের নাম ছিল মল্লিকা গার্মেন্টস। কাঁদতে কাঁদতে ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, এই মার্কেটে আমার দুটি দোকান ছিল। এখন একটি দোকানও নেই। নগদ টাকা যা ছিল বস্তায় ভরেছিলাম। সব কিছু পুড়ে ছাই, এখন কিছু নেই।

তিনি বলেন, আগুন লাগার পর আমি মাল সরাতে চেষ্টা করেছি, কিন্তু এক সুতা কাপড় নিতে পারিনি। কারণ কাপড়ের বস্তার নিচে আমার পা পড়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, আমার দুটি সন্তান, বাসায় এক কেজি চাল নেই ঘরে। আমার স্ত্রীকে বলছি, আজকে চলো, কালকে দেখবোনি।

নূর আলম জানান, ঈদ ঘিরে স্ত্রীর গহনা, জমি বন্ধক এবং ব্যাংক ঋণ নিয়ে ৬০ লাখ টাকার মালামাল কিনেছিলেন তিনি। সব মিলে দোকানে এক কোটি টাকার মালামাল ছিল। এখন আর কিছু নেই।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তারা। পরে প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে তার আগেই আগুন কেড়ে নেয় সব। আগুনের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে আশপাশের মার্কেটগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এই আগুনে আশপাশের ৬টি মার্কেটের ৫ হাজার ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। প্রাথমিকভাবে আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

এমআই/এনএফ