ফ্লাইওভারের নিচে বেহাল দশা, ছবি তুলতেও সতর্কতা!
ফ্লাইওভারের নিচে ময়লা রাখা হয়েছে
রাজধানীর মগবাজার-মালিবাগ ফ্লাইওভারের নিচের জায়গা পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের স্থানীয় কার্যালয়, ময়লা রাখার স্থান, ছিন্নমূলের অস্থায়ী নিবাস, ভ্যানস্ট্যান্ড, অস্থায়ী দোকান ও লেগুনাস্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে করে এ অঞ্চলের পরিবেশ যেমন অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ছে, তেমনি সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে।
সিটি করপোরেশন ফ্লাইওভারের নিচের জায়গা দখলমুক্তের ঘোষণা দিয়েও এখনও কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারেনি। পথচারী থেকে স্থানীয় লোকজন সবাই এমন পরিস্থিতিতে বিরক্তি প্রকাশ করছেন।
বিজ্ঞাপন
ফ্লাইওভারের নিচে সরেজমিনে দেখা যায়, মৌচাক এবং মালিবাগ রেলগেটের মাঝের একটি বড় অংশজুড়ে রাখা হয়েছে আবর্জনার কন্টেইনার। আশপাশের এলাকার বাসাবাড়ির বর্জ্য এখানে এনে জমা করা হচ্ছে। আশপাশের দোকানিরা বলছেন এখানকার পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ছে।
এ বিষয়ে পথচারী হাবিবুর রহমান বলেন, সুন্দর একটি সড়কে ময়লার ভাগাড় বানানো হয়েছে। এ পথে যাওয়ার সময় নাকে রুমাল চেপে যেতে হয়। ফ্লাইওভারের নিচে যেখানে সৌন্দর্যবর্ধন করার কথা, সেখানে গৃহস্থালির বর্জ্য স্তূপ করে রাখা হয়েছে। দুর্গন্ধে এখানে টেকা যায় না।
বিজ্ঞাপন
আবর্জনার কন্টেইনারের পাশেই দেখা গেল পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য করা হয়েছে একটি অস্থায়ী কার্যালয়, থাকার অস্থায়ী একটি ঘরও রয়েছে সেখানে। তার ঠিক পাশেই ভ্যানস্ট্যান্ড, ছিন্নমূলরা অস্থায়ীভাবে থাকার জন্য জিনিসপত্র রেখে বেশ কয়েকটি স্থান দখলে রেখেছেন।
আরেকটু এগিয়ে মালিবাগ অংশে ফ্লাইওভারের নিচে আরও একটি বর্জ্য রাখার স্থান দেখা গেল। পাশেই বেশ কিছু জায়গা জুড়ে মোটরসাইকেল পার্কিং করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, একেবারে বাণিজ্যিকভাবে একটি লেগুনাস্ট্যান্ডও পরিচালিত হচ্ছে এখানে।
লেগুনাস্ট্যান্ডের ছবি তুলতে গেলে ছুটে আসেন সংশ্লিষ্টরা। কেন ছবি তোলা হচ্ছে, এই ছবি দিয়ে কী করা হবে, নানা প্রশ্ন তারা ছুড়ে দেন ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদককে। প্রতিবেদকের উদ্দেশে তারা বলেন, এখান থেকে চলে যান, আর কখনও এখানে ছবি তুলতে আসবেন না।
স্থানীয় একটি মার্কেটের দোকানি ইদ্রিস আলী বলেন, ফ্লাইওভারের নিচের পরিবেশ খুবই খারাপ। ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে টেকা যায় না এখানে। প্রায় পুরো জায়গাটাই দখলে রয়েছে। রাতে মাদকসেবীদের আড্ডা হয় এখানে। সিটি করপোরেশনের চোখের সামনেই এমন হচ্ছে। তবুও তারা কেন নিশ্চুপ, বুঝতে পারি না।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ দখল উচ্ছেদে সম্প্রতি একটি পদক্ষেপ নিলেও এখনও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি চোখে পড়েনি। গত ১০ মার্চ মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের নিচের অংশ পরিদর্শনে আসেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। মেয়র মগবাজার চৌরাস্তা ও মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের নিচের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন এবং নানা দিকনির্দেশনা দেন।
সে সময় মেয়র তাপস বলেন, ফ্লাইওভারের নিচের জায়গাগুলো ব্যাপকভাবে দখল অবস্থায় আছে। অব্যবস্থাপনা আছে, ময়লা-আবর্জনায় ভরপুর। আমরা সেগুলো পর্যায়ক্রমে দখলমুক্ত করব। যাতে করে যান চলাচল করতে পারে, সে ব্যবস্থা আমরা করব। পাশাপাশি খোলামেলা পরিবেশও যাতে থাকে, সে ব্যবস্থাও আমরা করব।
ফ্লাইওভারের নিচের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মেয়র নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা শিগগির ফ্লাইওভারের নিচের জায়গা দখলমুক্ত করব এবং সেসব স্থানে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরু করব। এ বিষয়ে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি, এরপরই আমরা মাঠে নামব।
এএসএস/আরএইচ/এমএমজে