চলতি মাসেই রাজধানীর বড় দুটি মার্কেটে আগুনে পুঁজি হারিয়েছেন বহু ব্যবসায়ী। আজ ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের অনেক ব্যবসায়ীর ভাগ্যেও একই নিয়তি লেখা হয়ে গেছে। 

নিউ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় সুলতান ফ্যাশন নামের একটি দোকান ছিল আলেয়া নামে এক নারীর। 

আলেয়া জানান, ঈদের জন্য প্রায় ১১ লাখ টাকা ঋণ করে কয়েক হাজার প্যান্ট কিনেছিলেন। সব মিলিয়ে ৫০ লাখ টাকার বেশি প্যান্ট ছিল দোকানটিতে। কিন্তু এক আগুনে সব পুড়ে গেল।

আলেয়া বলেন, এমনিতেই তো সব শেষ। এখন এত টাকা ঋণ কীভাবে দেব, পরিবার নিয়ে ঢাকায় কীভাবে থাকব, বাড়ি ভাড়া দেব কীভাবে? গতকালও এই ফুটওভার ব্রিজের সিঁড়ি ভালো দেখে গেছি। সন্ধ্যার পর সিঁড়ি ভেঙে ফেলেছে। কেন এমন করল? কার কাছে এই কথা বলতে যাব। কে আগুন লাগিয়েছে?

আরেক ব্যবসায়ী মো. সজিব বলেন, সারা বছর ব্রিজ ভাঙার খবর নেই। এই ঈদের আগে চোরের মতো রাতের আঁধারে কেন ব্রিজ ভাঙতে হবে? পরশুদিন আর গতকাল রাতে ব্রিজ ভেঙে দিয়েছে যাতে মানুষ মার্কেটে উঠতে না পারে। আর আজ লাগল আগুন।

আয়েশা ফ্যাশনের কর্মী মোহাম্মদ সুমন বলেন, গতকাল থেকে মার্কেটে অনেক মানুষ হওয়া শুরু করেছে। আমি গতকাল রাত ১টা পর্যন্ত ডিউটি করেছি। আর আজ ভোরে আগুন লাগল। ওয়ান পিস আইটেমের দোকান ছিল। ঈদ উপলক্ষে অনেক টাকার মাল উঠিয়েছিল মহাজন। সব শেষ হয়ে গেল।

আগুনে কী পরিমাণ দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে তথ্য এসব দোকান মালিক-কর্মচারী বলতে পারেননি। তবে আগুন লাগার চেয়ে ‘লাগানো হয়েছে’ বলেই তাদের বিশ্বাস।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ বলেন, পুরাতন ফুটওভার ব্রিজ ভেঙে নতুন ফুটওভার ব্রিজ বানানোর দাবি ছিল জনগণের। যেহেতু ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ, তাই ঈদে ওভারলোডের কারণে যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সেজন্য বন্ধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঈদে কোনো একটা দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায়িত্ব কে নেবে?

এর আগে নিউ সুপার মার্কেটের আগুন পরিদর্শনে এসে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, আমরা তদন্ত করছি। ঈদ উপলক্ষে আমাদের বিভিন্ন মার্কেটে ডিউটি আছে। গোয়েন্দা তৎপরতা আরও বৃদ্ধি করে দেব। এখানে অন্য কোনো চক্রান্ত আছে কি না, এটা আমরা খতিয়ে দেখব।

এমএইচএন/এনএফ