মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিন চলছে রোববার (২৩ এপ্রিল)। ছুটি থাকায় পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে এবার রাজধানী ছেড়েছেন প্রায় সাড়ে ৮৫ লাখ মানুষ (মোস্তাফা জব্বারের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া তথ্য)। ফলে রাজধানীর বেশিরভাগ রাস্তাই ফাঁকা। সড়কে নেই গাড়ির চাপও।

ঈদ উপলক্ষ্যে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাইরে যেতে লোকজনকে বাহন হিসেবে ব্যবহার করতে হচ্ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা। তবে যাত্রী কম থাকায় কাঙ্ক্ষিত ভাড়া পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করছেন চালকরা। তারা বলছেন, তেমন যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। অপেক্ষাকৃত কম ভাড়ায় চলাচল করতে হচ্ছে। আর যাত্রীরা বলছেন, ভাড়া বেশিও নিচ্ছে না, আবার একবারে কমও নিচ্ছে না। অনেকটা স্বাভাবিক বলা যায়।

রোববার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজাধানীর মগবাজার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশার চালক ও ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, মগবাজার মোড়ে হাতেগোনা কয়েক সিএনজিচালিত অটোরিকশা দাঁড়ানো। অথচ অন্যান্য সময় এখানে বেশ কয়েকটি অটোরিকশা দাঁড়ানো থাকে। এসব অটোরিকশা চালকদের কেউ কেউ খোশ গল্পে মেতেছেন, কে কেমন ট্রিপ মেরেছেন সে নিয়ে। আবার কেউ পান-বিড়ি ফুঁকছেন। মাঝে মধ্যে যাত্রী এলে কথা বলছেন। ভাড়া নিয়ে বনিবনা হলে সেই যাত্রীকে নিয়ে রওনা দিচ্ছেন গন্তব্যে। আবার নতুন কোনো অটোরিকশা চালক এসে দাঁড়াচ্ছেন।

চালক আখের আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল ৭টায় বের হয়েছি। এখন পর্যন্ত একটি ট্রিপে ১৫০ টাকা এবং অন্য ট্রিপে ৩০০ টাকা পেয়েছি। এখন বাজে দুপুর গড়িয়েছে। যাত্রীই তো নাই, অতিরিক্ত ভাড়া নেবো কার কাছ থেকে?

তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ট্রিপের অবস্থা ভালো না। কালে ভাদ্রে যাত্রীর দেখা মেলে। ৪০০ টাকার ভাড়া ২৫০-৩০০ টাকাতেও যাচ্ছি। যারা একা যাত্রী আছেন, তাদেরকে কম ভাড়াতেও নিয়ে যাচ্ছি। কারণ, আমি ২৫০ টাকা ভাড়া চাইলে হুন্ডাওয়ালারা (রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের মোটরসাইকেল) ২২০ টাকা হলেই তাদের নিয়ে চলে যায়। তাই, যত ভাড়ার মধ্যে যাওয়া সম্ভব সেটা মিললেই ট্রিপ দিচ্ছি। কারণ, দিন শেষে তো গাড়ির জমার টাকা মালিককে দিতে হবে।

আরেক চালক আব্দুল হক বলেন, সকাল ৯টায় বের হয়ে এখন পর্যন্ত ১৫০ টাকার একটি ট্রিপ পেয়েছি। রাস্তায় যাত্রীই নেই। যেখানে আগে নরমালি ২৫০ টাকা ভাড়া যাত্রীরাই দিত, সেখানে গতকাল থেকে ২০০ টাকা হলেও যাই। যাত্রীরা ঈদ উপলক্ষ্যে মেটানো ভাড়ার বেশি ১০/২০ টাকা বেশিও দেয় না। সিএনজি নিয়ে বের হয়েছি। যে করেই হোক, দিনের খরচ তুলতে হবে। কথা বলতে বলতেই মিরপুরের যাত্রী পেয়ে যান আব্দুল হক।

পরিবার নিয়ে যাওয়া যাত্রী রবিউল চৌধুরী সুজনের কাছে ভাড়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিরপুর সাড়ে ১১-তে যাচ্ছি। ২৮০ টাকা ভাড়া মিটিয়েছি। আজকের দিনে এটি বেশিও না। আবার একেবারে কমও না, স্বাভাবিক বলা যায়।

আরেক যাত্রী রুহুল কাব্য বলেন, কুড়িল থেকে মগবাজারে এলাম ২৫০ টাকায়। অন্যসময় হলে এই ভাড়া সাড়ে ৩০০ টাকার নিচে কেউ আসতো না। ভাড়া খুব বেশি নিচ্ছে বলা যাবে না।

এমএইচএন/জেডএস