প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত আছে : তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্রের চর্চা আছে বলেই উন্নয়নের ধারাও অব্যাহত আছে। গণতন্ত্রবিরোধীরা বারবার গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হয়নি। গণতন্ত্রের সঠিক চর্চা আছে বলেই একজন রাষ্ট্রপতি তার নির্ধারিত সময় দায়িত্ব পালন করে সম্মানের সঙ্গে বিদায় নিতে পেরেছেন। এটা নিশ্চয়ই আমাদের একটি অর্জন।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় এবং সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলোচনার সময় এ কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজ দেশের ইতিহাসে ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করছেন মো. সাহাবুদ্দিন। একইসঙ্গে ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে সফলভাবে অবসরে যাচ্ছেন মো. আব্দুল হামিদ। দেশের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র রাষ্ট্রপতি যিনি টানা ১০ বছর সফলভাবে দেশ পরিচালনা করে অবসরে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে ঈদ, পূজা এবং বিভিন্ন উৎসবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পণ্যের দাম অতিরিক্ত বাড়িয়ে দেয়। এটা অনৈতিক এবং জনস্বার্থবিরোধী। এ কথাগুলো বলার ফলে যদি অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের মনস্তাত্বিক চাপ থেকে সঠিক পথে ফিরে আসে, তবে সেটা হবে ইতিবাচক। তবে সবকিছু মিলিয়ে এবারের খুব ভালো কেটেছে৷
বিজ্ঞাপন
তথ্যমন্ত্রী এ সময় নতুন রাষ্ট্রপতির জীবনের ওপর আলোকপাত করে বলেন, মো. সাহাবুদ্দিন একজন প্রাজ্ঞ, বিজ্ঞ, বিচক্ষণ মানুষ। তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ইতিপূর্বে পালন করেছেন। তিনি জেলা জজ, দুর্নীতি দমন কমিশনার, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করেছেন।
সব ক্ষেত্রে তিনি তার যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন। একই সঙ্গে তিনি মুক্তিযোদ্ধা এবং ’৭৫ এর পরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মর্মান্তিক ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে কারাবরণ করেছেন, পদ্মা সেতু থেকে যখন বিশ্বব্যাংক মুখ ফিরিয়ে নিলো তখন দেশের পক্ষে অত্যন্ত প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, যিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে আজকে শপথ গ্রহণ করেছেন, তিনি অত্যন্ত যোগ্যতার সঙ্গে বিচক্ষণতার সঙ্গে বিগত রাষ্ট্রপতির মতো জনবান্ধব রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
সাংবাদিকরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাষ্ট্রপতির ভূমিকা বিষয়ে জানতে চাইলে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সেখানে সরকারের ভূমিকা গৌণ। সরকার শুধু ফ্যাসিলেটেটরের ভূমিকা পালন করে। এমনকি তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সমস্ত সরকারি দপ্তর এবং তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত হয়। নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে সফলভাবে বেশ কয়েকটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছে এবং সামনে মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনগুলো নিয়ে কোনো প্রশ্ন আসেনি।
আমি মনে করি, নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচনও একটি অবাধ অংশগ্রহণমূলক, উৎসাহব্যঞ্জক ও সবার অংশগ্রহণে বিশ্বময় গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠিত হবে এবং সেই ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে, তিনি যেমন আগে বিচক্ষণতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন এ ক্ষেত্রেও অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, দেশ আমাদের। এই দেশের মালিক দেশের জনগণ। এ দেশের সরকার নির্বাচিত করার, সরকারকে বিদায় দেওয়ার দায়িত্ব কিংবা ক্ষমতা বা এখতিয়ার শুধু এ দেশের জনগণের। এ দেশের সরকার পরিবর্তনের এখতিয়ার বিদেশি কোনো রাষ্ট্রের নেই এবং এটি বিদেশিদের কাজও নয়। যে রাজনৈতিক দল বা যে রাজনৈতিক নেতারা ক্ষণে ক্ষণে দেশের বিষয় নিয়ে বিদেশিদের কাছে ধর্না দেন, বিদেশিদের হাতে পায়ে ধরেন, সেটি দেশবিরোধী কাজ।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের যদি কোনো সমস্যা থাকে সেটি আমাদেরকেই সমাধান করতে হবে। অতীতেও আমরাই সমাধান করেছি। বিএনপির কোনো বক্তব্য থাকলে তারা নির্বাচন কমিশনে বলতে পারে। তাদের যদি কোনো বক্তব্য থাকে যে তারা সরকারের সঙ্গে কথা বলতে চায় সেটাও তারা বলুক। কিন্তু বিদেশিদের কাছে গিয়ে আমাদের বিষয়াদি নিয়ে ধর্না দেওয়া দেশবিরোধী কাজ।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ দেশ রচনার, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দেশ পরিচালনার সার্থকতাটা সেখানেই যে, পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। যে পাকিস্তানিদের অনেকেই আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের পর বলেছিল, ‘ভুখা বাঙালি চলে গেছে, খুব ভালো হয়েছে’। আজ সেই পাকিস্তান, পাকিস্তানের জনগণ, রাজনীতিবিদরা এমনকি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও আমাদের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশে যে রাজনীতিবিদরা পাকিস্তানপন্থি কিংবা পাকিস্তানপন্থি হিসেবে পরিচিত ছিলেন তাদেরই সন্নিবেশ ঘটিয়ে বিএনপি তৈরি হয়েছে। আর ফখরুল সাহেবও যে পাকিস্তানপন্থি, ক’দিন আগে ‘পাকিস্তানই ভালো ছিল’ বলে সেটা উনি প্রমাণ করেছেন। যে পাকিস্তানে রমজানের সময় ১৬ জন পদদলিত হয়ে মারা গেছে, যে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি ৩১ শতাংশের ওপরে, যে পাকিস্তানকে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক ঋণ দিচ্ছে না, সেই ‘পাকিস্তানই ভালো ছিল’ বলেছেন ফখরুল সাহেব।'
এমএম/জেডএস