বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্তের দাবি জানিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে আবেদন করেছেন ব্যরিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। বুধবার (৩ মে) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান বরাবর করা আবেদনটি জমা দেন তিনি। 

অভিযোগ দাখিল করার পর ব্যরিস্টার সুমন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে বলেন, আবু নাঈম সোহাগ একা বাফুফেতে অনিয়ম- দুর্নীতি করেননি। তার সঙ্গে সভাপতি, সহ সভাপতিসহ ঊর্ধ্বতনরা জড়িত ছিলেন। 

আরও পড়ুন : যে ৪ কারণে নিষিদ্ধ হলেন বাফুফের সোহাগ

অভিযোগের ভিত্তিতে এক সপ্তাহের মধ্যে দুদক কোনো ব্যবস্থা না নিলে হাইকোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, দুর্নীতির প্রমাণ পেয়ে আবু নাঈম সোহাগকে দুই বছরের জন্য সব ধরনের ফুটবল কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করেছে ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ফিফা)। এছাড়া বাংলাদেশি মুদ্রায় তাকে প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়। এরপর বাফুফে থেকেও আজীবন বহিষ্কৃত হন আবু নাঈম সোহাগ। এ ব্যাপারে দুদকেরও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে দুদক কমিশনার (তদন্ত)  জহুরুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযোগ এসেছে, যাচাই-বাছাই শেষে দুদকের আইনি প্রক্রিয়া অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন : সোহাগ : কম্পিটিশন ম্যানেজার থেকে ফেডারেশনের সর্বেসর্বা!

সুমনের আবেদনে বাফুফের সভাপতি মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি ও অর্থ কমিটির সভাপতি সালাম মুর্শেদীসহ বেশকিছু কর্মকর্তার নাম রয়েছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ এপ্রিল তাদের ওয়েবসাইটে সোহাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ফিফা। যেখানে বলা হয়, আর্টিকেল ১৩, ১৫, ২৪ এবং ২৮ লঙ্ঘন করেছেন তিনি। অর্থাৎ অসততা, জালিয়াতি ও মিথ্যাচার এবং অর্থ অপব্যবহারের মতো গুরুতর বিষয়ে জড়িত সোহাগ।

কাতার বিশ্বকাপের আগে বাছাইপর্ব খেলার জন্য ওমান সফরে যায় বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। সেই সফরে ফ্লাইটের টিকিট বাবদ আল মারওয়া ইন্টারন্যাশনালকে ২০১৯ সালের নভেম্বরে ১৯ হাজার ৯২৫ ডলার প্রদান করে বাফুফে। যেখানে অনিয়মের অস্তিত্ব পেয়েছে আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থা।

আরও পড়ুন : বাফুফে থেকে মুছে গেল সোহাগের নাম!

২০২০ সালের জানুয়ারিতে ৪০০টি ফুটবল কিনতে ১৪ লাখ টাকার বেশি খরচ করে বাফুফে। এই টাকা ফিফার দেওয়া অনুদান থেকে খরচ করা হয়। এই ক্রয়ের ক্ষেত্রেও অসঙ্গতি পায় ফিফা। এছাড়া ঘাস কাটার যন্ত্র কেনা, পানির পাইপলাইন বসানো ইত্যাদি কাজেও হয়েছে নয়-ছয়। সবমিলিয়ে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রায় ৬ কোটি টাকার মতো গড়মিল পেয়েছে ফিফা। আর প্রতি ক্ষেত্রেই অভিযোগের তীর গিয়েছে সোহাগের বিরুদ্ধে। 

আরএম/এসকেডি