রাজধানীর বনানী মাঠে তিন দিনব্যাপী শুরু হওয়া মুজিব’স বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল টেস্ট অব বাংলাদেশে এসেছে ছোটন মামার ‘আগুন পান’। মেলায় ৭ থেকে ১৮ ধরনের মশলা দিয়ে বানানো বাহারি এ পান খেতে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা।

বৃহস্পতিবার ফেস্টিভ্যালে গিয়ে দেখা গেছে, মোহাম্মদপুরের ছোটন মামার ফায়ার মিষ্টি পানের এই স্টলটিতে ২৯ ধরনের পান বিক্রি করছেন। স্টলটিতে পান এবং পানের মশলা সাজানো রয়েছে সারি সারি করে। স্টলটিতে সর্বনিম্ন ৩০ টাকা থেকে ১০০০ টাকার পান বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা পছন্দ মতো পান খাচ্ছেন সেখান থেকে।

সহকর্মীদের সঙ্গে বনানী মাঠের এ মেলায় ঘুরতে আসা সেভার ট্রাভেলস নেটওয়ার্কস বাংলাদেশের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার সাইফুল্লার রাব্বি ঢাকা পোস্টকে বলেন, পান খেয়ে ভালো লেগেছে, খুবই চমৎকার।

আফসোস করে তিনি বলেন, পান মুখে দেওয়ার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে শেষ হয়ে গেলো। আরও কিছুক্ষণ থাকলে ভালো লাগত। এ পানের দাম নিয়েছে ৫০ টাকা।

ছোটন মামার ফায়ার মিষ্টি পানের মালিকের ছোট ভাই মোহাম্মদ সাঈদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগুন পানের কারণে ‘ছোটন মানা ফেমাস’। আগুন পানে ৬৫টি মশলা ব্যবহার করি। এই মেলায় ৩০ ধরনের পান এনেছি। সাত থেকে ১৮ ধরনের মশলা ব্যবহার করছি।

তিনি বলেন, ছোটন মামার দোকানে নতুন পান এনেছি ‘সোনার পান’।  নাম দিয়েছি ‘চব্বিশ ক্যারেট গ্লোন্ড পান’, দাম ৩০০০ টাকা। এই পানে, খাওয়ার উপযোগী সোনা, জাফরান,কস্তুরি, বাদাম কিসচিন জেলি, লিকুইড চাটনিসহ ১৮ ধরনের মশলা দেওয়া হয়।

ফুটপাতে শুরু হওয়া ব্যবসার বয়স বর্তমানে ২০ বছর। এখন দিনে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা কেনা বেচা হয় বলে জানান সাঈদ। তিনি বলেন, ছোটন ভাই ফুটপাতে পানের ব্যবসায় করতেন, এরপর একদিন তিনি আগুন পান আবিষ্কার করেন। আগুন পান বিক্রি করেই এখন তিনি বিখ্যাত হয়েছেন। তার নতুন আবিষ্কার ‘সোনার পান’ দাম ৩০০০ টাকা। কয়েকদিনের মধ্যে এ পানও দেখবেন বিখ্যাত হয়েছে। 

সাধারণ পানের মধ্যে রয়েছে, মনচুরি পান, রাজশাহী পান, শাহী বাংলা মিষ্টি পান, মধু রস মিষ্টি পান, মহেশখালী সাচি পান  এবং বৌ-সাজি সাচি পান। এই পানগুলোর বিক্রি করছেন ৩০ টাকা মূল্যে।

আগুন পান বলে খ্যাত ‘স্পেশাল ফায়ার পান’,‘স্পেশাল চকলেট পান’, স্পেশাল গুজরাতি সাচি মিষ্টি পান, পাকিস্তানি সাচি পান, স্পেশাল দিলখোশ সাচি মিষ্টি পান, চুইনগাম সাচি পান, চিটাগাং সাচি পান, বরফ সাচি পান ও স্পেশাল হাইদারাবাদি পান বিক্রি করছেন ৫০ টাকায়। ‘মেওয়া সাচি পান’ বিক্রি করছেন ৭০ টাকায়।

১০০ টাকা করে বিক্রি করেন পাকিস্তানি হালুয়া সাচি পান, সুরমা সাচি পান, স্পেশাল জামাই বউ সাচি পান, বানারস সাচি পান, লখনৌ সাচি পান, গুলকান সাচি পান।‘পান রানী সাচি পান বিক্রি করছেন ১২০ টাকায়, সবুজ সাথী সাচি পান ১৫৯, জাফরান সাচি পান ২০০, রাজস্থানি সাচি পান ২০০, কম্ভরী সাচি পান ৩৫০, রাজ প্রাসাদ সাচি পান ৫০০ এবং  ভালোবাসা সাচি পান ১০০০ টাকা বিক্রি করছেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক ছাদের নিচে দেশের সব ঐতিহ্যবাহী ও বিখ্যাত খাবারের মেলা বসেছে বনানীর মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক পার্কজুড়ে। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে মুজিব’স বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল ‘টেস্ট অব বাংলাদেশ’।

এমআই/এসকেডি