মানিকগঞ্জে চাঞ্চল্যকর অন্তঃসত্ত্বা রোকসানা (১৭) হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হযরত আলী বেপারীকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্যরা।

শনিবার (৬ মে) দিবাগত রাতে র‌্যাব-৪ এর একটি দল সাভার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। রোকসানা হত্যা মামলায় রায়ের পর গত ৩ বছর ধরে পলাতক ছিলেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এ আসামি।

র‌্যাব-৪ এর সহকারী পরিচালক এএসপি মাজহারুল ইসলাম জানান, ২০০১ সালে মানিকগঞ্জ সদর থানার ফারিরচর এলাকার হযরত আলী বেপারী এবং ভিকটিম রোকসানা আক্তার প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। পরে রোকসানার গর্ভে একটি কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে।

এসময় হযরত আলী ও তার পরিবার মিলে রোকসানাকে যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করে। যৌতুকের টাকা না পাওয়ায় হযরত আলী তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।

২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর হযরত আলী ও অন্য আসামিরা রোকসানার বাবার বাড়িতে হাজির হয়ে যৌতুকের টাকার ব্যাপারে কথা বলে। এসময় উচ্চবাচ্য এবং কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে হযরত আলী ও অপর আসামিরা রোকসানাকে বেড়ধক পিটিয়ে হত্যা করে ও ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে বারান্দার সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে।

চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় হযরত আলীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।

পরে স্থানীয় থানা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হযরত আলী বেপারীকে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতে পাঠায়। ৪ বছর জেলহাজতে থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে আত্মগোপন চলে যায় আলী। চার্জশিটে অপর চার আসামিকে অব্যাহতি দেয় পুলিশ। তবে হযরত আলীকে অভিযুক্ত করা হয়।

বিজ্ঞ আদালত রোকসানা হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি হযরত আলী বেপারীকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। রায়ের পর থেকে হযরত আলী বেপারী পলাতক।

এএসপি মাজহারুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় গ্রেপ্তার এড়ানোর লক্ষ্যে সে আত্মগোপন করে। গত ৩ বছর ধরে তিনি নাম পরিবর্তন করে সজীব আহম্মেদ নাম ব্যবহার করেন। তিনি বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রথমে সাভার, আশুলিয়াসহ গাজীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

জেইউ/এসএম