» সেবাগ্রহীতাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ
» শিক্ষা সনদ ও জন্মনিবন্ধনেও সংশোধন হয় না এনআইডি
» সরেজমিনে তদন্ত করে কাগজ ‘সঠিক’ বললেও কাজ হয়নি
» কাগজপত্র নয় ছবি দেখে সংশোধনে মত দেন উপপরিচালক
» কাগজপত্র ঠিক থাকলে ১৫ দিনে সংশোধন : অতিরিক্ত সচিব 

জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম শেখ মঈনুল ইসরাম জিয়া। জন্ম ১৯৮৬ সালের ২ মার্চ। নামের আংশিক ও জন্মের সাল এসএসসি সার্টিফিকেট অনুযায়ী করতে এনআইডির সংশোধন চেয়ে ২০২০ সালে আবেদন করেন তিনি। আবেদনের পর ডেমরা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আল আমিন ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর সরেজমিনে তদন্ত করে মঈনুলের এনআইডি সংশোধনের সঙ্গে যুক্ত সব কাগজ ‘সঠিক আছে’ বলে বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার জন্য মত দেন। কিন্তু প্রধান কার্যালয়ে এসে আটকে যায় সংশোধনের ফাইল। সেই থেকে শুরু, এনআইডি সংশোধনে গত তিন বছর ধরে দপ্তরে দপ্তরে ঘুরছেন মঈনুল।

ফাইলের সর্বশেষ অবস্থা জানতে অপমান-অপদস্তও হতে হয় তাকে। পাগলের খেতাবও দেওয়া হয় মঈনুলকে। গত ২৬ এপ্রিল নিজ ফাইলের খোঁজ নিতে গেলে এনআইডি’র উপপরিচালক মোহাম্মদ শাহীন আকন্দের অধীনস্থ (কারিগরি সহায়ক) মো. আব্দুল হালিম তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। দায়িত্বরত আনসার সদস্যকে দিয়ে তাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে বলেন। ভুক্তভোগী নিজেই ঢাকা পোস্টের কাছে এমন অভিযোগ করেন।

আরও পড়ুন >> এনআইডি সংশোধনীর ভুল আবেদনে এডিটের সুযোগ থাকছে না 
 
তিনি বলেন, ‘আমি খুবই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। খুব ছোট থেকে পরিবারের হাল ধরতে হয়। সংসারের সচ্ছলতা আনতে পরিবার থেকে আমাকে বিদেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করতে বলে। কিন্তু বয়স কম হওয়ায় পাসপোর্ট করা সম্ভব হচ্ছিল না। এজন্য বয়স বাড়িয়ে আমার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে পাসপোর্ট করার জন্য আবেদন করি। কিন্তু আমার ওই আত্মীয় টাকা নিয়ে পাসপোর্ট করে দেয়নি। বিদেশেও যাওয়া হয়নি। বিদেশ যেতে না পেরে আমি দিনমজুরের পাশাপাশি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া শুরু করি। উন্মুক্তে এসএসসি পাস করার পর আমি ঢাকা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পাস করি। বর্তমানে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন তিতুমীর কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।’

পাঁচ বছর ধরে এনআইডি সংশোধনে বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে ঘুরছেন মঈনুল। কিন্তু এখনও সংশোধন করতে পারেননি / ঢাকা পোস্ট

এনআইডি সংশোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গত তিন বছর ধরে এনআইডি সংশোধনের জন্য প্রধান কার্যালয়ে ঘুরছি। এর আগে দুই বছর থানা নির্বাচন অফিসে ঘুরে তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। শাহীন আকন্দ স্যারের কাছে ঘুরেও আমার আবেদনের কোনো প্রতিকার পাইনি। কারণ, তারা আমার সঙ্গে দেখা বা কথা বলতে চাইতেন না। জোর করে দেখা করতে চাইলে আনসার দিয়ে বের করে দিতেন। এর আগে শাহীন আকন্দ স্যারও আমাকে কয়েকবার তার রুম থেকে আনসার দিয়ে বের করে দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘গত ২৬ এপ্রিল এনআইডি ডিজির দপ্তর থেকে আমাকে বলা হলো, আপনার ফাইল এসেছিল, ডেস্কে পাঠিয়ে দিয়েছি। আপনি শাহীন আকন্দ স্যারের ওখানে যোগাযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি শাহীন আকন্দ স্যারের দপ্তরে যাই। তিনি না থাকায় তার সহকারী হালিম স্যারের কাছে জিজ্ঞেস করি। তিনি আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। আমাকে তারছেড়া বলে আনসার দিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। এটাও বলেন যে আমি যেন আর সেখানে ঢুকতে না পারি।’

‘গত পাঁচ বছর ধরে এনআইডি সংশোধনের জন্য ঘোরাঘুরি করছি। এর মধ্যে দুই বছর পার হয় থানা নির্বাচন অফিসে। থানা নির্বাচন অফিসার সরেজমিনে তদন্ত করে আমার আবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করেন। ২০২০ সালে শাহীন আকন্দ স্যারের দপ্তর থেকে ফাইলটা ডিজির দপ্তরে যায়। কিন্তু আমি দপ্তরে দপ্তরে ঘুরেও ফাইলের আপডেট জানতে পারিনি। আজও (২৬ এপ্রিল) আমি শাহীন আকন্দ স্যারের ওখানে তিনবার যাই।’

‘দুবার আমাকে শাহীন আকন্দ স্যারের দপ্তরের হালিম স্যার আনসারের মাধ্যমে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। আমাকে কেন গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিল? একজন নাগরিক হিসেবে আমি এখানে সেবা নিতে এসেছি। তাহলে আমি কি স্বাধীন দেশের নাগরিক না? আমার কি কোনো স্বাধীনতা নেই? আমার যদি স্বাধীনতা না থাকে তাহলে তারা আমাকে বলে দিক, আমার স্বাধীনতা নেই।’

আরও পড়ুন >> প্রিন্ট হয়ে পড়ে আছে ৭২ লাখ স্মার্টকার্ড 

‘গত তিন বছর ধরে প্রধান কার্যালয়ে ঘুরছি এনআইডি সংশোধনের জন্য। সংশোধন আবেদনের সঙ্গে জন্মনিবন্ধন, এসএসসির সার্টিফিকেট ও মার্কশিট, এইচএসসির সার্টিফিকেট ও মার্কশিট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ছবিযুক্ত রেজিস্ট্রেশন নম্বরসহ তিতুমীর কলেজে অধ্যয়নের সব কাগজ ও রেজাল্ট শিট দিয়েছি। তারপরও সংশোধন হচ্ছে না। যে রাষ্ট্র আমাকে দুটি সার্টিফিকেটসহ অনার্সে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে, সেই রাষ্ট্রের এক দপ্তর আমার শিক্ষার সনদগুলো আমলে নিচ্ছে না। তারা (এনআইডি কর্তৃপক্ষ) আমাকে বলে দিক, আমার শিক্ষার সনদ ও জন্মনিবন্ধনের কোনো মূল্য নেই। তাহলে তো আমি আদালতে যেতে পারব। দিনমজুর হয়ে আমি এভাবে আর কত দিন ঘুরব?’

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনে সর্বোচ্চ ১৫ দিন সময় লাগে— সর্বোচ্চ কর্তাদের পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য দেওয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না / ঢাকা পোস্ট

শেখ মঈনুল ইসরাম জিয়া বলেন, ‘ডিজির দপ্তর থেকে পাঠানোর পর আজ আমি শাহীন স্যারের ওখানে যাই। কিন্তু আনসাররা আমাকে আটকে দেয়। দুজন আনসার আমার হাত ধরে রাখে। তাদের ডিজি স্যারের দপ্তরের কথা বললেও তারা আমাকে ঢুকতে দেয়নি। অনেক চেষ্টার পর ভেতরে গেলেও হালিম স্যার আনসার ডেকে আমাকে বের করে দেন। তিনি আমাকে তারছেড়া বলে সম্বোধন করেন। আমি যদি পাগল হতাম তাহলে তো আমি দুটা টিউশনি করতে পারতাম না। হয়তো আমি গরিব, এ কারণে আমার জামাকাপড়ের অবস্থা খারাপ কিন্তু পাগল নই।’

আরও পড়ুন >> এনআইডি সংশোধনের আবেদন প্রক্রিয়া জানে না বেশিরভাগ ভুক্তভোগী 

যেসব বিষয়ে সংশোধন চেয়েছেন শেখ মঈনুল ইসরাম জিয়া

নিজ নামের ‘ইসরাম’ এর জায়গায় ‘ইসলাম’ এবং বয়স ‘১৯৮৬-০৩-০২’ থেকে শিক্ষাসনদ ও জন্মসনদ অনুযায়ী ‘১৯৯৯-১২-১১’ এর সংশোধন চেয়েছেন শেখ মঈনুল ইসরাম জিয়া। সংশোধনের পক্ষে উন্মুক্তের এসএসসি সার্টিফিকেট, ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের এইচএসসি সার্টিফিকেট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছবিযুক্ত রেজিস্ট্রেশন কার্ড আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করেছেন তিনি।

সরেজমিন তদন্ত করে যে প্রতিবেদন দিয়েছেন কর্মকর্তা

ডেমরা থানা নির্বাচন অফিসার আল আমিন সরেজমিনে তদন্ত করে গত ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর এনআইডি মহাপরিচালক বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। প্রতিবেদনের একটি কপি ঢাকা পোস্টের কাছে সংরক্ষিত আছে। সেখানে উল্লেখ আছে, “উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রস্থ স্মারকের আলোকে জানানো যাচ্ছে যে, শেখ মঈনুল ইসলাম জিয়া (৮৬৮৩৭৩৫৯২৫), পিতা- শেখ নওশের আলী, মাতা- মোমেনা খাতুন, বাসা- ২৬৮/২, ফরিদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা, জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম, জন্ম তারিখ, পিতা ও মাতার নাম সংশোধন করার জন্য আবেদন করেছেন। সব দলিলাদি পর্যবেক্ষণ শেষে প্রতীয়মান হয় যে আবেদনকারীর চাহিত সংশোধনী দাখিলকৃত দলিল মোতাবেক সঠিক আছে। আবেদনকারীর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হতে এসএসসি পাসের বিষয়টি সদয় বিবেচনায় আনা যেতে পারে।”

সরেজমিনে তদন্ত করে সব কাগজ ‘সঠিক’ বলে উল্লেখ করা হলেও তা আমলে নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তারা / ঢাকা পোস্ট

থানা নির্বাচন অফিসার তার প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, ‘সাক্ষীদের মূল বক্তব্য অনুযায়ী সংশোধন করা যেতে পারে।’

ঢাকা পোস্টের পর্যালোচনা

ফাইলটি ২০২১ সালের ১০ মার্চ ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন খান তদন্ত করে এনআইডি মহাপরিচালক বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে হেলাল উদ্দিন উল্লেখ করেন, ‘মঈনুল ইসরাম জিয়া সংশোধনের সপক্ষে হলফনামা, মাধ্যমিক শিক্ষাসনদ, পারিবারিক সনদ, প্রশংসাপত্র, জন্মসনদ, পিতা-মাতা-বোন ও ভাইয়ের ওয়ারিশ সনদ দাখিল করেছেন। তার দাখিলকৃত কাগজপত্রাদি সার্বিক পর্যালোচনা করে পরবর্তী কার্যক্রম ও সদয় নিষ্পত্তির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হলো।’

আরও পড়ুন >> ডিজিটাল বাংলাদেশে সেবা কি ফ্রি? 

হেলাল উদ্দিনের মতামতে পর ২০২১ সালের ১৮ মার্চ সংশোধনের আবেদনটি উপপরিচালক মোহাম্মদ শাহীন আকন্দের দপ্তর থেকে এনআইডি মহাপরিচালক বরাবর তোলা হয়। ফাইলটি ওই সময় ডিজির কাছে আসতে প্রায় দুই মাস লেগে যায়। দেখা যায়, ২০২১ সালের ১৮ মার্চ শাহীন আকন্দ ফাইলে সই করার পর ডিজি ফাইলে সই করেন একই বছরের ৩০ মে।

সব কাগজপত্র সঠিক থাকলেও উপপরিচালক শাহীন আকন্দের দপ্তর থেকে আবেদনটি আংশিক সংশোধনের জন্য সুপারিশ করা হয়। ফাইলে লেখা হয়, ‘আবেদনকারীর এনআইডির তথ্য পরিবর্তনের সপক্ষে অনলাইন জন্মসনদ (২০২০ সালে ইস্যুকৃত), এসএসসি সনদ (উন্মুক্ত, অনলাইন ওকে), ওয়ারিশ সনদ ও ভাই-বোনের এনআইডি দাখিল করেছেন। তিনি ২০১২ সালের ভোটার হওয়ার পর উন্মুক্ত থেকে এসএসসি পাস করেছেন। ভোটার নিবন্ধন ফরম- ২ তে এনআইডির বিদ্যমান জন্ম তারিখ ০২-০৩-১৯৮৬। চাহিত জন্ম তারিখ পরিবর্তন করা হলে ভোটার হওয়ার সময় তার বয়স হয় মাত্র ১৩ বছর। কিন্তু ডিবিতে বিদ্যমান ছবি দেখে মনে হয় তিনি প্রাপ্ত বয়স্কই ছিলেন। দাখিলকৃত দলিলাদি যাচাই করে জন্মতারিখ ব্যতীত এনআইডি সংশোধন করা যেতে পারে

সব কাগজপত্র সঠিক থাকলেও উপপরিচালক শাহীন আকন্দের দপ্তর থেকে আবেদনটি আংশিক সংশোধনের জন্য সুপারিশ করা হয়। ফাইলে লেখা হয়, ‘আবেদনকারীর এনআইডির তথ্য পরিবর্তনের সপক্ষে অনলাইন জন্মসনদ (২০২০ সালে ইস্যুকৃত), এসএসসি সনদ (উন্মুক্ত, অনলাইন ওকে), ওয়ারিশ সনদ ও ভাই-বোনের এনআইডি দাখিল করেছেন। তিনি ২০১২ সালের ভোটার হওয়ার পর উন্মুক্ত থেকে এসএসসি পাস করেছেন। ভোটার নিবন্ধন ফরম- ২ তে এনআইডির বিদ্যমান জন্ম তারিখ ০২-০৩-১৯৮৬।

আরও পড়ুন >> এনআইডি ডাউনলোড করে দেখেন তারা ‘তুরস্কের বাসিন্দা’ 

চাহিত জন্ম তারিখ পরিবর্তন করা হলে ভোটার হওয়ার সময় তার বয়স হয় মাত্র ১৩ বছর। কিন্তু ডিবিতে বিদ্যমান ছবি দেখে মনে হয় তিনি প্রাপ্ত বয়স্কই ছিলেন। দাখিলকৃত দলিলাদি যাচাই করে জন্মতারিখ ব্যতীত এনআইডি সংশোধন করা যেতে পারে।’

শাহীন আকন্দের ওই মতামতের ভিত্তিতে এনআইডির ডিজি ‘আংশিক পরিবর্তনের জন্য আবেদনকারীর সম্মতি প্রয়োজন’ লিখে নির্দেশনা দিয়ে ফাইল উপপরিচালকের কাছে ফেরত পাঠান। এরপর ফাইলের নোটে শাহীন আকন্দ লেখেন, ‘তিনি বিদেশে যাওয়ার জন্য বয়স বাড়িয়ে এনআইডি নিবন্ধন করেন। পরবর্তীতে তিনি ২০১৬ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হতে এসএসসি পাস করেন। দাখিলকৃত দলিলাদির ভিত্তিতে সদয় সিদ্ধান্তের জন্য পুনরায় নথি উপস্থাপন করা হলো।’ সেই থেকে এখন পর্যন্ত ফাইলটি এনআইডির দপ্তরে দপ্তরে ঘুরছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সামনে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের জন্য আসা ভুক্তভোগীদের জটলা / ঢাকা পোস্ট 

এরপর হলফনামা, এসএসসি সনদ, কমিশনারের প্রত্যয়ন, পারিবারিক সনদ এবং প্রত্যয়নপত্রের সত্যতা যাচাইয়ে এনআইডি কর্তৃপক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন চায় ডেমরা থানা নির্বাচন অফিসারের কাছে। এনআইডি কর্তৃপক্ষের চাহিত তথ্যের মধ্যে অনলাইন জন্মনিবন্ধন, এসএসসি সনদ, পারিবারিক সনদ, কমিশনারের প্রশংসা সনদ, হলফনামা এবং ভাই-বোনের এনআইডি নম্বরসহ ওয়ারিশ সনদ থানা নির্বাচন অফিসার পেয়েছেন মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন। সর্বশেষ ডিজি ঢাকা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন।

আরও পড়ুন >> সাড়ে চার মাসে ছয় জেলায় ৪ লাখ এনআইডি সংশোধনের আবেদন 

ভুক্তভোগী শেখ মঈনুল ইসরাম জিয়ার এনআইডি সংশোধনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘কাগজপত্র ঠিক থাকলে এনআইডি সংশোধনে সর্বোচ্চ ১৫ দিন সময় লাগে। এসএসসি শিক্ষাসনদ থাকলে সে অনুযায়ী এনআইডি সংশোধনে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

তবে, যদি কেউ আগে এসএসসি পাস করে পরে আবার উন্মুক্ত থেকে এসএসসি পাস করেন সেক্ষেত্রে সচিবালয়ের নির্দেশনা রয়েছে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করলে যে এনআইডি সংশোধন হবে না, বিষয়টা এমন নয়। এনআইডি সংশোধনের ক্ষেত্রে আমরা প্রতিটি শিক্ষাবোর্ডকে সমান গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ে সব ঠিক থাকলে এনআইডি সংশোধন ১৫ দিনের মধ্যেই হয়ে যায়।’

আরও পড়ুন >> মায়ের চেয়ে ছেলে ৩ বছরের বড়! 

আনসার সদস্যের মাধ্যমে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সেবাগ্রহীতাকে বের করে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ুন কবীর (গ্রেড-১) ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমরা সবসময় সাধারণ জনগণকে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। আমি নিজে প্রতিদিন ব্যক্তিগত শুনানির মাধ্যমে সংশোধনের জন্য আসা ফাইল নিষ্পত্তি করি। তবে, সেবাগ্রহীতার সঙ্গে খারাপ আচরণ বা ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়াটা অনুচিত। বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই আমি ব্যবস্থা নিয়েছি।’

এনআইডি সংশোধনের বিষয়ে জানতে জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি এ প্রতিবেদকের পরিচয় শুনে বলেন, ‘আমি ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলব।’ কখন ফোন দেব— জানতে চাইলে তিনি কিছু না জানিয়ে কেটে দেন।

এসআর/ওএফ