প্রতীকী ছবি/ সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে কক্সবাজারের মহেশখালীতে অবস্থিত ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে রাষ্ট্রায়ত্ত কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে একপ্রকার গ্যাসশূন্য হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম নগর। সংকটের কারণে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে রান্না বন্ধ রয়েছে। হাহাকার তৈরি হয়েছে হোটেল-রেস্তোরাঁয়ও।

রোববার (১৪ মে) সকাল থেকে নগরের বাজারগুলোতে লোকজন কেরোসিনের স্টোভ কিনতে ভিড় করেন। কেউ গ্যাসের সিলিন্ডার এবং চুলা কিনতে বিভিন্ন দোকানে ছুটে যান। কেউ বা কিনেছেন বৈদ্যুতিক চুলা। হঠাৎ করে বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় কোনো কোনো দোকানে এসব সরঞ্জামের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন।

চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার এলাকার বাসিন্দা ফারহানা আক্তার। শনিবার (১৩ মে) সন্ধ্যা থেকে তার বাসায় গ্যাস নেই। আগে থেকে তৈরি করা খাবার খেয়েছেন রাতে। রোববার সকালে দোকান থেকে পাউরুটি ও কলা এনে নাশতা করেছেন। এরপর বাজার থেকে একটি বৈদ্যুতিক চুলা কিনে দুপুরের খাবার রান্না করেছেন।

একই দশা নগরের বহদ্দারহাট ফরিদার পাড়া এলাকার বাসিন্দা জুলিয়া আক্তারের। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কোনো প্রভাব পড়েনি এখানে। শুধু গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। মূল ভোগান্তি হয়েছে গ্যাস না থাকায়। রান্না করা যায়নি। রোববার সকালে গ্যাসের সিলিন্ডার এবং নতুন একটি চুলা কিনেছি। এরপর রান্নাবান্না করতে হচ্ছে। অন্যসময় গ্যাসের সিলিন্ডার ২ হাজার থেকে ২১০০ টাকা হলেও আজ নিয়েছে ২৪০০ টাকা। হঠাৎ করে দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেড়ে গেছে।

এদিকে শনিবার সন্ধ্যা এবং রাত থেকে লাইনের গ্যাস না থাকায় কেউ কেউ ছুটেছেন হোটেল-রেঁস্তোরায়। রোববার গ্যাস সংকটের কারণে অনেকগুলো রেস্টুরেন্টে খাবার তৈরি হয়নি। যেসব রেস্টুরেন্টে বিকল্প ব্যবস্থা আছে শুধুমাত্র সেগুলোতে রান্না হয়েছে। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চট্টগ্রামের বাসিন্দারা।

নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের দোকানি মো. আলমগীর বলেন, রোববার সকাল থেকে কেরোসিনের চুলা বিক্রি হচ্ছে। গ্যাস না থাকায় এসব চুলা কিনছেন বলে ক্রেতারা জানিয়েছেন।

নগরের জিইসি মোড় এলাকার হোটেল জামানের ব্যবস্থাপক অরুণ কান্তি মজুমদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, শনিবার সকালে গ্যাস ছিল না। দুপুরে একটু একটু করে আসছিল। আবার সন্ধ্যা থেকে বন্ধ হয়ে গেছে। আজ (রোববার) রাত পর্যন্ত আর আসেনি। লাকড়ির চুলা দিয়ে সীমিত আকারে কার্যক্রম চলছে।

কেজিডিএল কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামে বিভিন্ন খাতে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এই গ্যাস এলএনজি টার্মিনাল থেকে সরবরাহ করা হয়। ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে মহেশখালীর দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল শুক্রবার (১২ মে) রাত ১১টা থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। এ কারণে সংকট তৈরি হয়েছে। 

গ্যাস বন্ধ রাখার বিষয়ে কেজিডিসিএলের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা আবু তাহের মাসুদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গ্যাস সরবরাহ একদম বন্ধ রয়েছে। জাতীয় গ্রিড থেকে কিছু গ্যাস চাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে দুয়েকদিনের মধ্যে পাওয়া গেলে সংকট কিছুটা কাটবে।

এমআর/এমজে