আমাদের ভাতা নির্ভর করতে চাচ্ছে সরকার : সুলতানা কামাল
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী এবং রাজনীতিবিদ সুলতানা কামাল বলেছেন, সরকার আমাদের ভাতা নির্ভর করে ফেলতে চাচ্ছে। কিন্তু কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর বিষয়ে সরকার নজর দিচ্ছে না।
সোমবার (১৫ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সিপিডি নাগরিক প্ল্যাটফর্মে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
‘আইএমএফের সময়কালে অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের কথা জাতীয় বাজেটে কীভাবে প্রতিফলিত হতে পারে’ শীর্ষক সভার আয়োজন করে সিপিডি।
সংলাপে অংশ নেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, অর্থনীতিবিদ ও সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ।
বিজ্ঞাপন
সুলতানা কামাল বলেন, ‘সরকার বলে দিয়েছে বাংলাদেশে আদিবাসী বলতে কিছু নেই। কিছুদিন পরে সরকার বলবে নির্যাতিত নারী বলতে কিছু নেই। আজকে আমরা সবচেয়ে বেশি সংকটে আছি বিচ্ছিন্নতা নিয়ে। নাগরিক সমাজের মধ্য থেকে কী আসছে সেটা সরকারের শোনার প্রয়োজন হয় না। তাদের সেই মানসিকতা বা সদিচ্ছা আমরা দেখতে পাচ্ছি না।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের ভাতা নিয়ে আমার ব্যক্তিগত আপত্তি আছে। সরকার আমাদের ভাতা নির্ভর করে ফেলতে চাচ্ছেন। কিন্তু কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর বিষয়ে সরকার নজর দিচ্ছে না। সরকার থেকে দলীয় লোকজনরা সবাই বলে থাকেন এইখানে এতো ভাতা দিচ্ছি, ওখানে এতো ভাতা দিচ্ছি। আমরা তো ভাতা পাওয়ার জন্য দেশ স্বাধীন করিনি। দেশ স্বাধীন করেছিলাম আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে দাঁড়ানোর জন্য, স্বাধীন জাতি হিসেবে দাঁড়ানোর জন্য। এই স্বাধীনতার সঙ্গে কিন্তু বাজেটের একটা সম্পর্ক আছে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এ উপদেষ্টা বলেন, এই দেশটা যে আমাদের সেটা আমরা কেউই মনে করি না। আমরা প্রতিদিন জাতীয় সংগীত গাই। এটা শুধু কণ্ঠে থেকেই গাই। বিশ্বাস থেকে গাই কি না নিঃশ্বাস থেকে গাই কি না এই প্রশ্নটা রাখতে চাই। মন থেকে যদি গাইতাম তাহলে তো আমার কর ফাঁকি দেওয়ার প্রশ্ন আসে না। কর দিয়ে দেশের উন্নয়নে অংশগ্রহণ করতে পারা একটা গর্বের ও অহংকারের বিষয়। কিন্তু আমরা সেই অহংকারের বিষয়টা থেকে নিজেদের বঞ্চিত করি।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ভোটের পরোয়া করেন আপনারা? কারণ আপনাদের তো ভোটের প্রয়োজনই নেই, সাধারণ মানুষকেও চেনার প্রয়োজন নেই। কাজেই সাধারণ মানুষদেরও আপনাদের চেনার প্রয়োজন নেই। আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক বা আশেপাশে যারা আছেন তারা যা চাইছে তাই করছেন। জনপ্রিয়তার একটা কথা এসেছে। আপনারা কোন জনপ্রিয়তার কথা বলছেন? সেই জনগণকে কি আপনার কাছে চেনেন? কার জন্য আসন ঠিক রাখতে হবে? কাকে ঠিক রেখে আসন ঠিক রাখতে চান আপনারা। বিচ্ছিন্নতা বন্ধ করে মানুষের কাছে এসে মানুষকে স্বীকার করলে দেখবেন আপনাদের অনেক সমস্যার সমাধান মানুষই করে দেবে।’
এসআর/এসকেডি