ওয়ার্ড ও গ্রাম বা মহল্লার দরিদ্র, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের তালিকা নেই। প্রকৃত তালিকা না থাকায় রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। এ তালিকা করার ক্ষেত্রে সরকারি লোক, জনপ্রতিনিধি, সিভিল সোসাইটি, স্থানীয় বস্তিবাসী ও শ্রমিকদের সঙ্গে রাখতে হবে। এছাড়াও জরুরি ভিত্তিতে সারা দেশে সার্ভে করে দরিদ্রদের তালিকা তৈরি করতে হবে। আসন্ন জাতীয় বাজেটে দরিদ্র মানুষের উন্নয়নে জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখতে হবে।

রোববার (২৮মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ) ও কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড আয়োজিত ‘নগর দরিদ্র বিমোচন : সামাজিক সুরক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ ও বৃদ্ধি’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।

কাপের চেয়ারপারসন ডা. দিবালোক সিংহের সভাপতিত্বে সংলাপে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন উন্নয়ন গবেষক আমিনুর রসুল বাবুল। এতে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এম আকাশ, সিপিআরডি প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা, এসএটিভির বিজনেস এডিটর সালাউদ্দিন বাবুল, কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড কান্টি ডিরেক্টর মানিশ কুমার আতরওয়াল, কাপের নির্বাহী পরিচালক খোন্দকার রেবেকা সান ইয়াত, বস্তিবাসী অধিকার সুরক্ষা কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হোসনে আরা বেগম রাফেজা, মোহাম্মদপুরবাসী ময়না আক্তার প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বাজেট বড় হলে দরিদ্র লোক বাড়বে। তাই বড় বাজেট থামাতে হবে। কারণ বাজেটে টাকা ধনী শ্রেণির মানুষের পকেট চলে যায়। লুটপাট ও দুর্নীতি না কমালে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে। একইসঙ্গে টিসিবির পণ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহার করার দাবি জানান তারা।

এম এম আকাশ বলেন, আমাদের প্রথম দাবি হওয়া উচিত, নাগরিক স্বীকৃতি। এরপর দরিদ্রের তালিকা করার দাবি। জাতীয় বাজেট বৈষম্যহীন ভাবে বাস্তবায়ন করা দরকার। দেশের ১০ শতাংশ ধনীর কাছে ৪০ শতাংশ দরিদ্র মানুষের ভাগ্যবন্দি। কারণ এই ৪০ শতাংশ মানুষের বাজেটের বরাদ্দের অর্ধেক নিয়ে যায় এই ধনী শ্রেণি। বাকি অর্ধেক দিয়ে দরিদ্রের ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভব হয় না। তাই লুটপাট বন্ধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা সবার আগে দরকার।

শামসুদ্দোহা বলেন, শহর ও গ্রামে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। রাষ্ট্রের সেবা খাতসহ অন্যান্য খাতে চাকরি করার জন্য গ্রাম ছেড়ে মানুষ শহরমুখী হয়েছে। গ্রামের মানুষ শহরে এসে সর্বপ্রথম আয় বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। অথচ এই দরিদ্র মানুষগুলো ইনফরমাল সেক্টরে কাজ করে ঢাকা সিটির অর্থনীতি চালু রেখেছে। কিন্তু সরকার তাদের মূল্যায়ন করছে না। এই দরিদ্র মানুষ কম ভোগ করে পরিবেশের সুরক্ষা দিচ্ছে। তাই রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা বেশি যারা ভোগ করছে তাদের ওপর ট্যাক্স আরোপ করতে হবে। আদায়কৃত অর্থ অর্থনীতি চালু রাখার কারিগরদের মধ্যে বণ্টন করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা দেখেছি করোনার সময় বড় ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে সরকার। সেই তুলনায় ছোট ব্যবসায়ীদের কোনো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে দরিদ্র মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে চলে গেছে।

ওএফএ/এসএসএইচ/