বিশ্বের মুসলমানদের আরও সংহত করা ও শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করার বিষয়ে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) মহাসচিব হিসেইন ব্রাহিম তাহার সঙ্গে আলাপ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

রোববার (২৮ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশে সফররত ওআইসি মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করে এ তথ্য জানান মন্ত্রী।

ড. মোমেন বলেন, ‘বিশ্বে মুসলমানদের আরও সংহত এবং শক্তিশালী অবস্থান নিতে হবে। এটা নিয়ে আমরা আলাপ করেছি। নানান দেশে বিভিন্ন নামে মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পুড়িয়া ফেলে... এ নিয়ে কেবল শুধু অভিযোগই করা হয়। এটা নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও তারা (বিশ্ব সম্প্রদায়) নেন না। আমরা ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের কথা বলেছি।’

মুসলিম দেশগুলোর সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বলেছি, আমাদের নিজেদের মধ্যে যথেষ্ট সম্ভবনা আছে, আমরা যদি নিজেদের মধ্যে ঝগড়া না করি তাহলে আমাদের আরও উন্নতি হতো। বিশ্ব পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সেগুলোই আলোচনা করেছি।’

বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলাপের কথা উল্লেখ করে মোমেন জানান, আইসিজেতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মামলা চলমান রাখার বিষয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওআইসির মহাসচিব এবং গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট একটি তহবিল গঠন করার বিষয়ে যৌথ চিঠি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে পাঠিয়েছে (ওআইসির)।  

বাংলাদেশ সফরের কারণ হিসেবে ওআইসির মহাসচিব রোহিঙ্গা ইস্যু এবং ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) সমাবর্তনের কথা উল্লেখ করেন। তাহা বলেন, ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জন্য বাংলাদেশ খুব গুরত্বপূর্ণ একটি দেশ। সেই লক্ষ্যে আমি এখানে এসেছি। আমি এসেছি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে। কেননা, রোহিঙ্গাদের অভাবনীয় সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আমরা ওআইসির সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে ধন্যবাদ দিতে চাই।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা মুসলিম। তারা শান্তি পাওয়ার অধিকার রাখে, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার রাখে। তারা ভালো জীবন পাওয়ার অধিকার রাখে।

বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় কারণ তুলে ধরে ওআইসির মহাসচিব বলেন, আইইউটির কর্মকাণ্ড দেখতে এসেছি। এখানে ওআইসিভুক্ত বিদেশি শিক্ষার্থীরা পড়ছে। সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করছে। এজন্য আমি শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই।

রোহিঙ্গাদের তহবিল নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তাহা বলেন, রোহিঙ্গাদের তহবিল নিয়ে কাজ করে জাতিসংঘ। গাম্বিয়ার আইসিজেতে যে মামলা চলছে, সেখানে ওআইসি সহযোগিতা করছে। গাম্বিয়া খুব ধনী দেশ নয়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মামলা চলমান রাখতে ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রগুলো তহবিল গঠন করতে পারে। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সেরাটাই দিতে চাই। ওআইসি বিশ্বাস করে যে, রোহিঙ্গা ইস্যু সেরা এজেন্ডার একটা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওআইসি রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তারা যেকোনো ওআইসির সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যু তোলে। এমনকি জাতিসংঘেও। রোহিঙ্গা নিয়ে যে রেজ্যুলেশন পাস হয়েছে ওআইসি গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

এনআই/কেএ