আদালতের আদেশে নিজ থানায় দায়ের করা মামলার আসামি হন চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন ও এসআই আবদুল আজিজ। মামলার আদেশ আসার সঙ্গে সঙ্গে রহস্যজনকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন দুজন। সেই অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে টানা ৮০ দিন চাকরিতে যোগ দেননি তারা। তবে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতেই দুজনে সুস্থ হয়ে ওঠেন। একসঙ্গে যোগ দেন থানায়।

অনেকটা ‘নিখুঁত অভিনয়’ শেষে দুজন সাময়িক বরখাস্ত ছাড়াই কর্মস্থলে নিরাপদে যোগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ আইনজীবী ও সংশ্লিষ্টদের।

আইনজীবীরা জানান, আমলযোগ্য অপরাধে থানায় মামলা হলে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। না হয় আসামি নিজে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। যদি দুজন গ্রেপ্তার হতেন তাহলে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করতে হতো। আবার আদালত থেকে জামিন নিলেও সাময়িক বরখাস্ত করতে হতো তাদের। অন্যদিকে, মামলা চলা অবস্থায় থানায় যোগ দিলে পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হতো। এসব কারণে মামলা দায়েরের আদেশের পর দুজনই অসুস্থ হয়ে পড়েন! চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর দুজন একত্রে সুস্থ হয়ে ওঠেন!

আরও পড়ুন- সেই ওসির বিরুদ্ধে রোগীর স্বজনকে মারধরের প্রমাণ পায়নি সিআইডি

মূলত বরখাস্তের হাত থেকে রেহাই পেতে দুজন অসুস্থতার নাটক করেছেন বলে জানিয়েছেন একাধিক আইনজীবী। তারা বলেন, আদালতের আদেশে থানায় নিয়মিত মামলা হয়েছে। তদন্তে এটি সত্য হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। মামলায় অভিযোগপত্র যেতে পারে, আবার চূড়ান্ত প্রতিবেদনও যেতে পারে। এটি তেমন কোনো সমস্যা না। তবে, থানায় মামলা হলে সবার জন্য যে নিয়ম তাদের জন্যও একই নিয়ম প্রযোজ্য ছিল। দুজনই আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তা। দুজনেরই আদালতকে সম্মান জানানো উচিত ছিল, নিয়মানুযায়ী আদালতে আত্মসমর্পণ করার দরকার ছিল। এক্ষেত্রে সাময়িক বরখাস্ত হলেও নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার পর দুজনেই কর্মস্থলে যোগ দিতে পারতেন। অন্তত এমন অসুস্থতার ‘অভিনয়’ না করলেও চলত।

এদিকে, ঢাকা পোস্টের অনুসন্ধান ও নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, ছুটির সময় পাঁচলাইশ থানার ওসি নাজিম উদ্দিনকে কেউ অসুস্থ অবস্থায় দেখেননি। তার বাসা খুলশী নাসিরাবাদ প্রপার্টিজ লিমিটেডের ২ নম্বর গলিতে। সেখানে আরওয়া নামের একটি বিল্ডিংয়ে থাকেন তিনি। ওই এলাকার একাধিক বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা পোস্টের এ প্রতিবেদক। স্থানীয়রা জানান, ছুটিতে থাকাবস্থায় তাকে প্রায়ই ব্যায়াম করতে দেখা যায়। বাইরেও ঘোরাফেরা করেছেন। অসুস্থ নয়, তাকে বেশ সুস্থই দেখেছেন স্থানীয়রা।

ওসি নাজিমের অসুস্থতার বিষয়টি শুনে তাজ্জব বনে যান নাসিরাবাদ প্রপার্টিজ এলাকার এক বাসিন্দা। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘কই আমি তো তাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে দেখেছি। তিনি সুস্থ অবস্থায় নিয়মিত চলাফেরা করেছেন। শুধু আমি না, এলাকার সবাই তাকে নিয়মিত দেখেছেন।’

আরও পড়ুন- পাঁচলাইশ থানার ওসির বিরুদ্ধে মামলা, সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ

সুস্থ অবস্থায় ওসি নাজিমকে একাধিকবার পাঁচলাইশ থানা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন কমিশনার কার্যালয়ে দেখা গেছে বলেও নিশ্চিত করেছেন কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী। এ প্রতিবেদক নিজেও গত ১১ এপ্রিল ওসি নাজিমকে সুস্থ অবস্থায় পাঁচলাইশ থানায় দেখেছেন। নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের এক আওয়ামী লীগ নেতা ওসি নাজিমকে কমিশনার কার্যালয়ে দেখেছেন। ওই সময় তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিলেন। তবে, অভিযুক্ত ব্যক্তি ওসি হওয়ায় প্রত্যক্ষদর্শীরা কেউ পরিচয় দিতে চাননি।

তাদের অসুস্থতার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে নগর পুলিশ উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘তারা অসুস্থ ছিলেন। সুস্থ হয়ে থানায় যোগ দিয়েছেন। তারা চিকিৎসার কিছু কাগজপত্রও দিয়েছেন।’

অসুস্থতার বিষয়ে ওসি মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘আমার ডকুমেন্টস প্রমাণ করবে আমি সুস্থ নাকি অসুস্থ।’ অন্যদিকে, এসআই আবদুল আজিজের সঙ্গে কথা বলতে কয়েকবার থানায় গিয়েও পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জিয়া হাবীব আহসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ওসি নাজিম ও এসআই আজিজ এখনও আসামি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন। আদালতে সেটি গৃহীত হয়নি। এর মধ্যে তারা থানায় দায়িত্ব পালন করছেন। আসামি হয়ে থানায় দায়িত্ব পালন করার বিষয়টি নৈতিকতাবিরোধী না। যদিও দুজনে আসামি হওয়ার দিনই একসঙ্গে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। আবার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর সুস্থ হয়ে গেলেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক আইনজীবী ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা বলে ওসি নাজিম বিশেষ সুবিধা পেলেন। সাময়িক বরখাস্তের হাত থেকে বেঁচে গেলেন। একই দিন দুজন ব্যক্তি অসুস্থ হলেন আবার রিপোর্ট দেওয়ার দিন দুজনে সুস্থ হয়ে গেলেন। নাটকীয় বিষয়! এটি পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।’

আরও পড়ুন- মোস্তাকিমকে থানা হেফাজতে মারধরের অভিযোগ

দুজনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রো ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) শাহনেওয়াজ খালেদ। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হয়েছে। মামলা তদন্তের সময় আসামিকে গ্রেপ্তার করতে হবে, এমন নিয়ম নেই। আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। তাই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। সুস্থতা-অসুস্থতার বিষয়ে তাদের কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।’

শোকজের জবাবও যথাসময়ে দেননি তারা

মামলা দায়েরের আদেশে বিচারক উল্লেখ করেছিলেন, অভিযুক্ত ওসি ও এসআইয়ের কাছ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে শোকজের জবাব নিয়ে জমা দিতে। আদেশ অনুযায়ী মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শোকজের জবাব নিতে পাঁচলাইশ থানায় চিঠি ইস্যু করেন। তবে, শোকজের জবাব ওসি নাজিম ও এসআই আজিজ দেননি। তাদের অসুস্থতা ও অনুপস্থিতির অজুহাত দেখিয়ে থানার পরিদর্শক সাদেকুর রহমান শোকজের জবাব দেন। তবে, সেই জবাব গ্রহণ করেননি আদালত।

পরে আবারও দুজনের কাছ থেকে শোকজের জবাব নিয়ে আদালতে জমা দেওয়ার জন্য সিআইডির এসপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন পর তারা শোকজের জবাব জমা দেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

যা বললেন ভুক্তভোগী মোস্তাকিম

ভুক্তভোগী মোস্তাকিম বলেন, আমাকে মারধরের ছবি-ভিডিও দুনিয়ার সবাই দেখেছে। ওসি নাজিম আমার আঘাতের চিহ্ন দেখে বলেছিলেন, আমি এক ধরনের পাতা লাগিয়ে লাল করেছি। এখন সিআইডি বলছে আমাকে মারেনি। তারা আমাকে পরীক্ষা করেছে এক মাস পর। এক মাস পর কি ব্যথা থাকে? মামলার রিপোর্ট দেওয়ার সময় আমাকে জানানোর কথা। কিন্তু আমাকে কোনো কিছু জানানো হয়নি। একটা কাগজ দিয়েছিলেন। ওটা আইনজীবী নিতে বলেছেন, তাই নিয়েছি। কিন্তু আমাকে যেভাবে অবহিত করার কথা সেভাবে করা হয়নি।

‘এটাই আমাদের দেশের সিআইডির তদন্ত আর কী! তাদের তদন্ত কেমন সেটি এখন বুঝতে পারলাম। সিআইডি-পুলিশ খালাতো-মামাতো ভাই। আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি, আদালতে হাজিরাও দেয়নি। তারা অসুস্থতার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু রিপোর্ট দেওয়ার এক দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে গেলেন। পরবর্তী তারিখে আদালতে সিআইডির প্রতিবেদনে নারাজি দেব।’

আদালত সূত্র জানায়, পুলিশ হেফাজতে মারধরের অভিযোগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন চমেক হাসপাতালের আন্দোলন থেকে গ্রেপ্তার সৈয়দ মোহাম্মদ মুনতাকিম ওরফে মোস্তাকিম। একই পিটিশনে আসামি করা হয় এসআই আবদুল আজিজকে। আদালত পিটিশনটিকে নিয়মিত মামলা হিসেবে পাঁচলাইশ থানায় রেকর্ডের আদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলাটি এসপি পদমর্যাদার কর্মকর্তা দিয়ে সিআইডিকে তদন্তের আদেশ দেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মোস্তাকিম তার মাকে সাত বছর ধরে ডায়ালাইসিস করান। ডায়ালাইসিস মূল্য বেড়ে যাওয়ায় তিনিসহ রোগীর স্বজনরা মিলে আন্দোলন করেন। ঘটনার দিন ১০ জানুয়ারি তারা চমেক হাসপাতালের প্রধান গেটে জড়ো হয়ে মানববন্ধন করেন। পাঁচলাইশ থানার ওসি নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে ওই সময় একদল পুলিশ সেখানে এসে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে ওসি নাজিম মোস্তাকিমকে গ্রেপ্তার করে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিচে মারধর করেন। এরপর তাকে থানায় নিয়ে পুনরায় মারধর করেন। মারধরের সময় এসআই আবদুল আজিজ মোস্তাকিমকে বলেন, ‘ওসি নাজিম স্যারের সাথে আর বেয়াদবি করবি?’। ওই সময় ওসি নাজিম বলেন, ‘শালারে রিমান্ডে এনে থানায় পেটাতে হবে, তারপর বুঝবি পুলিশ কী জিনিস?’। এরপর থানায় মারধরের বিষয়টি ফাঁস করলে মোস্তাকিমকে ক্রসফায়ার দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন- ৭৮ দিন ধরে ‌‘অসুস্থ’ রোগীর স্বজন পেটানো সেই ওসি-এসআই!

২২ ফেব্রুয়ারি পাঁচলাইশ থানায় নিয়মিত মামলা হয়। নিজের থানায় দায়ের হওয়া মামলার আসামি হন ওসি নাজিম উদ্দিন ও এসআই আবদুল আজিজ। তবে, মামলা দায়েরের আগের দিন অর্থাৎ ২১ ফেব্রুয়ারি অসুস্থতা দেখিয়ে ছুটিতে যান দুজনই। এরপর থেকে তারা আর কর্মস্থলে আসেননি।

উল্লেখ্য, ডায়ালাইসিস ফি বাড়ার প্রতিবাদে ২০২৩ সালের শুরুতে চমেক হাসপাতালে রোগী ও তাদের স্বজনরা আন্দোলনে নামেন। কয়েক দিন ধরে চলা ওই আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১০ জানুয়ারি বিক্ষোভকারীরা চমেকের প্রধান ফটকের সামনের সড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আন্দোলনকারীদের সড়ক ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু আন্দোলনকারীরা সড়ক না ছাড়ার ঘোষণা দেন। বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে পাঁচলাইশ থানার ওসি নাজিম উদ্দিন উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি নিজের মুঠোফোন বের করে বিক্ষোভকারীদের ভিডিও ধারণ করেন এবং তাদের পরে দেখে নেবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন। এরপর একযোগে সবাই ওসির বিরুদ্ধে হইচই শুরু করেন এবং ভিডিও ডিলিট করার দাবি জানান।

চমেক হাসপাতালে কিডনি রোগীদের স্বজনদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনাটি দেশব্যাপী আলোচনার জন্ম দেয়। ওই দিন ওসির মারমুখী আচরণের ফুটেজ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। মানবিক এ আন্দোলন থেকে একজনকে মারতে মারতে গ্রেপ্তার করেন ওসি নাজিম। গ্রেপ্তার মোস্তাকিম ওসির সেই মোবাইল সরিয়ে নিতে চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে হাতাহাতিতে ওসির মোবাইল মাটিতে পড়ে ভেঙে যায়। এরপর ওসি মোস্তাকিমকে পেটাতে পেটাতে চমেকের প্রধান ফটকের বিপরীতে অবস্থিত এপিক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেও তাকে আরেক দফা মারধর করা হয়। কিছুক্ষণ পর এপিকের সামনে থেকে আরও একজনকে ওসি ধরে ভেতরে নিয়ে যান। পাশাপাশি অন্য পুলিশ সদস্যরাও বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।

একপর্যায়ে একজনকে ছেড়ে দিলেও মোস্তাকিমকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ওই দিন রাতে সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচলাইশ থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় মোস্তাকিমকে। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলা ও কর্তব্যে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।

ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মোস্তাকিমকে ১১ জানুয়ারি আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। ১৫ জানুয়ারি তাকে জামিন দেন আদালত। জামিনে মুক্ত হওয়ার পর পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ করেন মোস্তাকিম।

এমআর/ওএফ