পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে মারা যাওয়া রায়হান/ ছবি : সংগৃহীত

সিলেট নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত সাব-ইন্সপেক্টর আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তারে আইনানুগ উদ্যোগ গ্রহণ না করায় শাস্তি পেয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের তখনকার সহকারী পুলিশ কমিশনার নির্মলেন্দু চক্রবর্তী। তবে তাকে কেবল ‘তিরস্কার‘ করার মতো লঘুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। নির্মলেন্দু চক্রবর্তী বর্তমানে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। 

এতে বলা হয়, ‌হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নির্মলেন্দু চক্রবর্তী ও ইতঃপূর্বে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে কর্মকালে গত ১১/১০/২০১০ তারিখ রায়হান আহমেদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই (নি.) আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্য কর্তৃক শারীরিকভাবে নির্যাতনের ফলে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। 

আপনার যথাযথ তদারকির অভাবে ভুল ধারায় সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় ১২/১০/২০২০ তারিখ মামলা নং ২০ দ. বি. ৩০২/৩৪ ধারায় এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ এর ১৫(১)/১৫(২) (১৫(৩) ধারায় মামলা রুজু হয়। আপনি অনুসন্ধান কমিটির সদস্য হিসেবে অনুসন্ধানকালে পুলিশ সদস্য দ্বারা শারীরিক নির্যাতনের কারণে রায়হান আহমেদের মৃত্যু ঘটে, যা ফৌজদারি অপরাধ হওয়া সত্ত্বেও এসআই (নি.) আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তারে আইনানুগ উদ্যোগ গ্রহণ না করে শুধু বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করে ১০/৩/২০১১ তারিখ অভিযোগনামা ও অভিযোগ-বিবরণী জারি করা হয়।  

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১১/০৯/২০২১ তারিখে কারণ দর্শানোর জবাব প্রদান করে ব্যক্তিগত শুনানির আবেদন করেন এবং ১৫/১২/২০২১ তারিখ তার ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণ করা হয়।’

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘তার দাখিল করা কারণ দর্শানোর জবাব, ব্যক্তিগত শুনানিতে পক্ষদের প্রদত্ত বক্তব্য এবং প্রাসঙ্গিক সকল তথ্যাদি বিবেচনা করে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হলে গুরুদণ্ড আরোপের সম্ভাবনা থাকার অভিযোগগুলো তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জিয়াউর রহমানকে এ বিভাগীয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক গত ২৩/১১/২০২২ তারিখে দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে নির্মলেন্দু চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তদন্ত ও সাক্ষ্য প্রমাণে প্রমাণিত হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে সরকারী কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(ক) বিধি মোতাবেক 'অদক্ষতা' প্রমাণিত হওয়ায় একই বিধিমালার বিধি ও এর উপবিধি ২(ক) মোতাবেক ''তিরস্কার" লঘুদণ্ড প্রদান করা হলো।’

এসএইচআর/এসকেডি