বায়তুল মোকাররম মসজিদের সমানে পুলিশের সতর্ক অবস্থান

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দুদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদির সফর ঘিরে কয়েকদিন ধরেই রাজপথে আন্দোলন করছে ইসলামি দলগুলো। শুক্রবার জুমার নামাজের পর নতুন করে বিক্ষোভ ও সংঘাতের শঙ্কায় আগে থেকেই বাড়তি সতর্ক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও।

শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে দৈনিক বাংলার মোড় থেকে বায়তুল মোকাররম মসজিদ পর্যন্ত এলাকা ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে পুলিশ। মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লিদের ওপর কড়া নজর রাখছেন তারা। সন্দেহ হলে তল্লাশি করা হচ্ছে।

মসজিদের আশপাশের এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন রয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক র‍্যাব সদস্য। নামাজ শেষে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে জলকামানসহ সবধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

এদিকে ইসলামী দলগুলোর বিক্ষোভ মিছিলসহ যেকোনো ধরনের সহিংসতা মোকাবিলায় বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

সন্দেহ হলে তল্লাশি করছে পুলিশ, সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও আছেন

পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং জনবিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। নাম প্রকাশ না করে এক পুলিশ কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, জুমার নামাজ শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির আগমন উপলক্ষে আকস্মিক মিছিল ও সমাবেশের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে। এছাড়া নানা অপচেষ্টারও আশঙ্কা করা হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা বায়তুল মোকাররম মসজিদ ঘিরে শক্ত অবস্থান নিয়েছি। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখা দিলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

গত ৫ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানোর জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানায় হেফাজতে ইসলামসহ সমমনা ইসলামি দলগুলো। তারা ঘোষণা দেন, যেকোনো মূল্যে মোদির ঢাকা সফর প্রতিহত করবেন তারা। একইসঙ্গে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর দায়দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

বায়তুল মোকাররম মসজিদ ঘিরে পুলিশের সতর্ক অবস্থান

ওইদিন (৫ মার্চ) জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররমের উত্তর প্রাঙ্গণ থেকে হাজারও মুসল্লি ‘দিল্লিতে মুসলমানদের গণহত্যা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের প্রতিবাদে’ বিক্ষোভ মিছিল করেন।

এদিকে গত ১৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্রিফিংয়ে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, দেশ ও জাতির জন্য এ ধরনের সফর অত্যন্ত সম্মান ও গর্বের। বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ অতিথিদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ভেন্যু নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হবে। বাংলাদেশের মানুষের অনন্য সাধারণ এ উদযাপনকে ব্যাহত করতে যেকোনো অপচেষ্টাকে কঠোর হাতে দমন করা হবে। এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স প্রদর্শন এবং দেশ ও মানুষের সম্মান ও স্বার্থে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দৃঢ়চিত্তে পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন আইজিপি।

এমএসি/এমএআর