তিস্তা নিয়ে আবারও আশ্বাস নয়াদিল্লির
বহুল প্রতীক্ষিত তিস্তা চুক্তিটি আশ্বাসের বৃত্তে আটকে আছে। প্রতিবারের ন্যায় এবারও ভারতের পক্ষ থেকে তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। শনিবার (২৭ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে ঢাকা ও নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের কাছে দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারতের কাছে তিস্তার বিষয়টি জোরালোভাবে উপস্থাপন করেছেন। জবাবে ভারত জানিয়েছে, তিস্তা চুক্তির বিষয়ে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। তারা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। তবে ভারতের পক্ষ থেকে চুক্তি চূড়ান্তের বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট সময় জানানো হয়নি।
বিজ্ঞাপন
এক দশক ধরে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি আটকে আছে। তিস্তার জট খোলা নিয়ে প্রতিনিয়ত ঢাকার পক্ষ থেকে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও অনিশ্চয়তার মেঘ যেন কাটছেই না।
অন্যদিকে নয়াদিল্লির পক্ষে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার কাছেও তিস্তার বিষয়ে প্রশ্ন রাখেন সাংবাদিকরা। জবাবে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তার বিষয়টি তুলেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, ভারত তিস্তার বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ; এটা চূড়ান্ত করতে অব্যাহতভাবে কাজ চলছে। এ নিয়ে ভারতের পক্ষ থেকে স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনাও হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল ২০১১ সালে। সে সময় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরে চুক্তি সইয়ের বিষয়টি চূড়ান্তও ছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে শেষ মুহূর্তে আটকে যায়। সেই মমতা এখনও বাধা হয়ে আছেন। তাকে বাগে আনতে পারেনি মোদি সরকার।
তিস্তার জট খোলার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল ২০১৭ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর ঘিরে। ওই বছরের ৭ থেকে ১০ এপ্রিলের সফরে ৩৫টি বিষয়ে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়। তবে সেখানে ছিল না তিস্তার প্রসঙ্গ। ওই সফরের দ্বিতীয় দিন ৮ এপ্রিল শেখ হাসিনা সরকার ওই চুক্তি করার অঙ্গীকার করেছিল।
২০১৮ সালের মার্চে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ভারত সফরেও তিস্তা চুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়। সে সময় আবদুল হামিদকে মোদি জানান, এ বিষয়ে মমতাকে রাজি করানোর চেষ্টা চলছে। একই বছরের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পশ্চিমবঙ্গ সফরকে ঘিরেও তিস্তার প্রসঙ্গ সামনে আসে। যদিও এই সফরের উদ্দেশ ছিল অন্য। তারপরও মোদির সঙ্গে তার এক ঘণ্টার একান্ত বৈঠক এবং পরে মমতার সঙ্গে আধা ঘণ্টার আলাপে তিস্তা নিয়ে কোনো ঘোষণা আসেনি।
এনআই/এসকেডি