বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেছেন, মার্কিন ইস্যুতে সরকারের অবস্থানকে সমর্থন করেছে ১৪ দলীয় জোট। আমরা প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন করে বলতে চাই, বাইডেন সাহেব ট্রাম্পকে সামলান। তারা সেন্টমার্টিন চায়, কোয়াডে বাংলাদেশকে চায়।

বুধবার (১৪ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

তিরি বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে ছিনিয়ে নিতে মার্কিনিরা বঙ্গোপসাগরে সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল। তীব্র খাদ্য সংকটের সময় বঙ্গবন্ধুর সরকারকে বিব্রত করতে মধ্যসমুদ্র থেকে গমের জাহাজ ফিরিয়ে নিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে তাদের কালো হাত ছিল। এখন আবার বর্তমান সরকারকে হটানোর লক্ষ্যে তারা সবকিছু করছে। তারা সেন্ট মার্টিন চায়, কোয়াডে বাংলাদেশকে চায়।

মার্কিন ইস্যুতে সরকারের অবস্থানকে সমর্থন জানিয়ে ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম নেতা মেনন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন করে আমি বলতে চাই- বাইডেন সাহেব ট্রাম্পকে সামলান। আমাদের ঘর আমরা সামলাব, নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনার সরকারকে রেখেই হবে। বিএনপির উচিত হবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া। তারেক রহমান নির্বাচন না করে ২০২৯-এর জন্য অপেক্ষা করতে পারে। কিন্তু বিএনপি এর মধ্যে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে। তার সেই স্বপ্নও পূরণ হবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে, এগিয়ে যাবে।

জামায়াতকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়ার সমালোচনা করে বাম নেতা মেনন বলেন, ‘জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য আইনমন্ত্রী মাঝে মধ্যেই সরকারের উদ্যোগের কথা বলেন। সেই জামায়াতকে পুলিশ বেশ সমাদর করে ১০ বছর পর প্রকাশ্য সভা করার অনুমতি দিয়েছে। এটা কীসের আলামত আমরা জানি না। জামায়াত যুদ্ধাপরাধীর দল, ঘাতক দল। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাদের রায়ে এ কথা বলেছে। এর জন্য নতুন করে আদালতের রায়ের প্রয়োজন নাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে কথাটা আমি সবসময় বলি, এখনো বলছি, সাপের মুখে চুমু খেলে সাপ ছোবলই মারে। আদর করে না। জামায়াত-হেফাজতের সঙ্গে তোষামোদ-সমঝোতা সেই ফলই দেবে।’

প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘বাজেট শুনে-দেখে মনে হয়নি এটা সংকটকালের বাজেট। সংকট এখন সর্বব্যাপী। মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ কমে যাওয়া, জ্বালানি সংকট, ডলার সংকট, নদীর পানির সংকট, সংকট কোথায় নেই?’

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ‘বাজার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে চরম দুর্বলতার কারণে জিনিসপত্রের মূল্য একেবারেই লাগামছাড়া। পেঁয়াজের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধের ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপেই বোঝা যায়, তারা বাজার নিয়ন্ত্রণে আগ্রহী নয়। অথবা কাউকে সুবিধা দিতে চায়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শতভাগ বিদ্যুতায়নের যে গৌরব অর্জন করেছিলেন, সাম্প্রতিককালেই কেবল নয়, বেশ কিছুদিন ধরে দেশের অধিকাংশ স্থানকে অধিকাংশ সময় অন্ধকারে ডুবিয়ে রাখার মধ্য দিয়ে তাতে কালিমা লেপন করা হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ আসে, এটাই বাস্তবতা।’

রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আইনমন্ত্রী স্বীকার করেছেন- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে। বিদেশিদের কথায় নয়, নিজ দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, সাংবাদিকতার স্বাধীনতার প্রশ্নে এই আইন প্রয়োজনে পরিপূর্ণ বাতিল বা নির্দিষ্ট গণবিরোধী ধারাগুলো সংশোধন প্রয়োজন।’

এছাড়া শ্রম আইন সংশোধনের দাবি জানান ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি।

এসআর/এমজে