একদিন বাদেই পবিত্র ঈদুল আজহা। এ ঈদকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই জমে উঠেছে রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটগুলো। 

সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তুলনামূলক বড় গরুতে ক্রেতাদের চাহিদা কম। চাহিদার তুঙ্গে থাকা ছোট এবং মাঝারি গরুর দাম বেশি হওয়ায় বাধ্য হয়েই কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বড় গরু নিয়ে হতাশ বিক্রেতারা বলছেন, কাঙ্ক্ষিত দাম না পেলে গরু নিয়েই বাড়ি ফিরতে হবে।

মঙ্গলবার (২৭ জুন) বিকেলে রাজধানীর আফতাবনগর পশুর হাট ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

ঝিনাইদহ জেলা থেকে ছোট এবং মাঝারি আকৃতির ২৪টি গরু নিয়ে রাজধানীর আফতাবনগর হাটে এসেছেন খামারি অ্যাডভোকেট মো. লিখন। 

বাজারের অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিক্রি মোটামুটি ভালো হচ্ছে। টোটাল ২৪টি গরু নিয়ে এসেছিলাম, এখন আছে ১২টি। দুইদিনে আমার ১২টি গরু বিক্রি হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ, দামও আশানুরূপ পেয়েছি। আশা করি, আজকের দিন এবং কাল বাকিগুলো বিক্রি করে দিতে পারব।

বাজারে কোন ধরনের গরুর বেশি চাহিদা জানতে চাইলে মো. লিখন আরও বলেন, বাজারে এবার বড় গরুর সরবরাহ কম। চাহিদাও কম। মানুষ ঘুরেফিরে ছোট এবং মাঝারি সাইজের গরুর কাছে আসছে। অনেকের বড় গরু দুই দিনে একটাও বিক্রি হচ্ছে না, কিন্তু আমি ১২টা বিক্রি করে দিয়েছি।

এদিকে তৃতীয় দিনের মতো ১৫ লাখ টাকা মূল্যের 'কালো পাহাড়' নিয়ে হাটে বিক্রির অপেক্ষায় আছেন মালিক আসলাম মোল্লা। দ্বিতীয় দিনের মতো ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের কাঙ্ক্ষিত মূল্য ১৫ লাখ, কিন্তু এই দামের আশেপাশেও কেউ দাম হাঁকাচ্ছে না।

আসলাম মোল্লা আরও বলেন, প্রতিদিনই গরুটি দেখতে অসংখ্য মানুষ আসে, কিন্তু কেউ বিক্রির মতো দাম বলে না। ৩৩ মণ ওজনের গরুটির দাম হয় ৭/৮ লাখ টাকা বলছে। ১২ লাখ টাকা হলে ছেড়ে দেব।

গরু কিনতে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন বলেন, বিকেল থেকেই বাজার ঘুরেছি অবশেষে তিন মণ ওজনের একটা গরু কিনেছি প্রায় লাখ টাকায়। সে হিসেবে দামটা আমার কাছে একটু বেশিই মনে হয়েছে। এটা সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা হলেই ঠিক ছিল। কিন্তু কিছুই করার নেই, ছোট গরুর চাহিদা বেশি তাই দামও কিছুটা বেশি।

তিনি বলেন, বড় গরুর কাছে মানুষ যাচ্ছেই না, কিন্তু ছোট গরুর কাছে গিয়ে দামও বলা যাচ্ছে না। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কিছুটা মন্দা থাকায় যারা গত বছরও বড় গরু কোরবানি দিয়েছে, তারাও এবার মাঝারি-ছোট গরুর দিকে আসছে।

এদিকে আফতাবনগর পশুর হাট তথ্য কেন্দ্রে দায়িত্বরত মো. উজ্জ্বল বেপারি ঢাকা পোস্টকে বলেন, বেচাকেনা মূলত আজকে থেকেই শুরু হয়েছে। আশা করি, রাতের দিকে ক্রেতা আরও বাড়বে, আমাদের বেচাকেনাও আরও বেশি হবে ইনশাআল্লাহ। গতকাল টুকটাক বেচাকেনা হয়েছে, সেই তুলনায় আজকে আরও বেশি। আশা করি, শেষ দিনেই তিনদিনের সমান বিক্রি হবে।

তিনি বলেন, ঢাকার মানুষ আগেভাগে গরু কিনতে চায় না, অধিকাংশই ঈদের আগের দিন কেনে। কারণ দুই-তিন দিন এগুলো রেখে লালন পালন করা কঠিন। সে হিসেবে বাজারে আজকে এবং কালকে বেশি চাপ যাবে।

দাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিক্রেতারাও আশানুরূপ দামে বিক্রি করতে পারছেন, আবার ক্রেতারাও গরু কিনে সন্তুষ্ট। এবার বাজারে দুই পক্ষই খুশি। তবে বড় গরু যেগুলো রয়েছে, সেগুলো একটু বিক্রি কম হচ্ছে। আশা করি, আজ-কালকের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যাবে।

টিআই/এসকেডি