প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য
অসম প্রেম-বিয়ের সহায়ক ভূমিকায় অধ্যক্ষ! ‘কিং মুশতাক ও রানি সিনথিয়া উপাখ্যানে ‘বিব্রত’ আইডিয়াল— শিরোনামে গত ৪ জুলাই ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত সংবাদের একটি অংশের বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী।
বৃহস্পতিবার পাঠানো এক প্রতিবাদলিপিতে অধ্যক্ষ উল্লেখ করেছেন, প্রকাশিত প্রতিবেদনে কিছু অংশে আমাকে জড়ানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সিনথিয়াকে আইফোন দেওয়া ও খন্দকার মুশতাকের প্রস্তাবে রাজি করানোর মধ্যস্থতা করেছেন অধ্যক্ষ। এ অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এতে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। এ সংবাদ প্রকাশের ফলে আমি পারিবারিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবাদে তিনি আরও বলেন, সিনথিয়া ইসলাম ও খন্দকার মুশতাকের বিষয়টি আমি পূর্বে কখনই জানতাম না। গত মে মাসের শেষ সপ্তাহে বেনামে একটি চিঠি ও দুইটি অভিযোগ আসে। এই অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ৩১ মে গভর্নিং বডির আলোচ্যসূচিতে বিষয়টি নিয়ে আসি এবং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যা এখনও তদন্তাধীন। এতেই সিনথিয়ার বাবা সাইফুল ইসলাম আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে কুচক্রী মহলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমাকে এসব অভিযোগে জড়াচ্ছেন।
প্রতিবাদলিপিতে তিনি আরও বলেন, গত ১৮ মার্চ মুশতাক আহমেদের নরসিংদীর আনন্দপার্ক রিসোর্টে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে শিক্ষা সফরে যাওয়া হয়। এই ভেন্যু নির্বাচন মুশতাক আহমেদ বা অধ্যক্ষের একক সিদ্ধান্তে নয়, প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সদস্য ও আয়োজকদের যৌথ সিদ্ধান্তে হয়।
বিজ্ঞাপন
সংবাদে ছাত্রী সিনথিয়ার সঙ্গে খন্দকার মুশতাককে বিশেষভাবে মেশার সুযোগ দেওয়ার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে ফাওজিয়া রাশেদী বলেন, সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শিক্ষিকার উপস্থিতিতে এটা কীভাবে সম্ভব? ওইদিন শিক্ষাসফরে মুশতাক, সিনথিয়া ও আমার ছবি ছাপা হয়েছে। অধ্যক্ষের সঙ্গে পরিচালনা কমিটির সদস্য অথবা শিক্ষক/ শিক্ষিকা এবং ছাত্রীরা ছবি তুলতেই পারে। এটা অপরাধের কিছু নয় বলে আমি মনে করি।
সংবাদের অন্য একটি অংশে খন্দকার মুশতাক আহমেদকে আমার বন্ধু হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। খন্দকার মুশতাক আর আমি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার সুবাদে তিনি আমার সহপাঠী।
প্রতিবেদনে সিনথিয়ার বাবা সাইফুল ইসলামের বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে, তার মেয়েকে প্রথম একটি আইফোন গিফট করেন মুশতাক অধ্যক্ষের মাধ্যমে। তখন থেকে অধ্যক্ষ নানাভাবে সিনথিয়াকে মুশতাকের প্রস্তাবের ব্যাপারে রাজি করানোর চেষ্টা করেন। আইফোন দেওয়া ও খন্দকার মুশতাকের প্রস্তাবে রাজি করানো, এতে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। এ অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
মেয়ের বাবা তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ নষ্ট হওয়ার জন্য অধ্যক্ষ দায়ী। এটা আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য বলেছেন। ওনার মেয়ে নিজে তার বক্তব্যে বলেন, তিনি (সিনথিয়া) ১৮ বছর বয়সী একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী। অতএব তার নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তার আছে...। উপহার গ্রহণ বা প্রত্যাখান করার যথেষ্ট বয়স এবং মেধা তার আছে। যারা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। এ ঘটনার জন্য কখনই সিনথিয়া আমাকে জড়ায়নি। সাইফুল ইসলাম কুচক্রী কোনো মহলের যোগসাজশে এমন বক্তব্য প্রদান করেছেন।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলুর বরাত দিয়ে সংবাদের আরেকটি অংশে উল্লেখ করা হয়েছে, অধ্যক্ষের মধ্যস্থতায় এ ধরনের ঘটনা শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের উদ্বেগ বাড়াবে। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, এটা উনার মনগড়া বক্তব্য। আমার দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনের সুনাম নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সময় স্কুলে যারা অনৈতিক সুবিধা পাননি তারাই এমন অভিযোগ করছেন বলে আমার মনে হয়।
প্রতিবেদকের বক্তব্য
এ প্রতিবেদন তৈরিতে প্রতিবেদকের ব্যক্তিগত কোনো মতামত উল্লেখ করা হয়নি। অধ্যক্ষের সঙ্গে যেসব ছবির কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে তা মুশতাক আহমেদের ব্যক্তিগত ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেওয়া। নানা সময় তিনি তার ফেসবুকে বিভিন্ন ছবি-ভিডিও আপলোড করেছেন সেখানে তিনি সিনথিয়ার সঙ্গে মেশার কথা উল্লেখ করেছেন। অন্য একটি ভিডিওতে অধ্যক্ষকে সাক্ষী রেখে তিনি তার স্ত্রীকে ভালোবাসার কথা প্রকাশ করেন। পুরো অভিযোগ সিনথিয়ার বাবার করা, প্রতিবেদকের নিজের কোনো মতামত বা বক্তব্যে এখানে প্রতিফলিত হয়নি।
এনএফ