করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকার ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গণপরিবহনগুলো ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলাচল করবে। এতে করোনার ঝুঁকি কমার আশা করা হলেও পরিবহন সংকটে রাজধানীর অফিসগামী যাত্রীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।   

দীর্ঘসময় অপেক্ষায় থেকেও বাসে উঠতে পারছেন না অনেক যাত্রী। কখন উঠতে পারবেন তারও ঠিক নেই। এ কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে অনেকের অফিসযাত্রা। হঠাৎ ভোগান্তিতে পড়া যাত্রীরা বলছেন, রাজধানীতে এমনিতেই গণপরিবহনের সংখ্যা কম। এখন ৫০ শতাংশ যাত্রী নিলে এ সংখ্যাটাও তো অর্ধেক হয়ে গেল! বিকল্প ব্যবস্থা না করে সরকারি এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন তারা।

রাজধানীর মিরপুর-১ এলাকায় দেখা যায়, গাড়ির তুলনায় যাত্রী বেশি হওয়ায় হাজার হাজার অফিসগামী মানুষ পরিবহনের জন্য অপেক্ষা করছেন। অনেক সময় পরপর কিছু বাস আসছে, কিন্তু সেগুলোর বেশিরভাগই যাত্রী না তুলেই চলে যাচ্ছে। এতে অফিসগামী যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। 

অপেক্ষমাণ যাত্রী ইঞ্জিনিয়ার মনির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারি নির্দেশনায় আমরা সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছি। মাস্ক পরে যত সিট ততজন যাত্রী বসানোর নিয়ম করতে পারত। এখন একটি গাড়ি যদি অর্ধেক যাত্রী নেয় তাহলে তো পরিবহন সংকটে পড়তেই হবে। কারণ রাজধানীতে যাত্রীর তুলনায় গণপরিবহন খুবই কম। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি। কখন গাড়িতে উঠতে পারব বলতে পারছি না।

বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর মিরপুর ১, ২ ও ১০ নম্বর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় হাজার হাজার যাত্রী বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু সরকারের নির্দেশনার কারণে পঞ্চাশ শতাংশের বেশি যাত্রী নিচ্ছে না গণপরিবহনগুলো। তবে কিছু কিছু পরিবহনকে নিয়ম না মেনে অতিরিক্ত যাত্রী নিতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আব্দুল্লাহপুর থেকে মিরপুর হয়ে মোহাম্মদপুর রুটে পরিস্থান ও প্রজাপতি পরিবহন চলাচল করে। মিরপুর থেকে মোহাম্মদপুর যেতে এ পরিবহনগুলো এতদিন ২০ টাকা ভাড়া নিলেও গতকাল (বুধবার) থেকে ৩০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছে। তবে কোনো কোনো যাত্রীকে বর্ধিত ভাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানাতে দেখা গেছে।

মিরপুর ২ নম্বরে বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা বেলাল হোসেন জানান, ‘এক ঘণ্টা ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু বাসে উঠতে পারছি না। অফিস টাইম পার হয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় সিএনজি বা পাঠাওয়ের বাইকও পাচ্ছি না। কীভাবে অফিসে যাব সেটাই বুঝতে পারছি না৷ করোনার কারণে সরকার যে নিয়ম করেছে সেটা অবশ্যই ভালো। কিন্তু আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীদের জন্য খুব সমস্যা হয়ে যাবে যদি পর্যাপ্ত বাস না থাকে। তাই সরকারকে বলব রাস্তায় যেন পর্যাপ্ত বাস থাকে সে বিষয়টি নজরে রাখতে।’

এসআর/এসএসএইচ/জেএস