ডিএসসিসির অভিযানে ৮ স্থাপনাকে লাখ টাকা জরিমানা
ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও এডিস মশার প্রজননস্থল নিধনে সাতটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। অভিযানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় আটটি বাসাবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এক লাখ ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (৯ আগস্ট) কর্পোরেশনের আওতাধীন এলিফ্যান্ট রোড, খিলগাঁও চৌরাস্তা, বউ বাজার, খিলগাঁও মডেল কলেজ, জগন্নাথ সাহা রো, লালবাগ, ছোট কাটর, সোয়ারী ঘাট, ইমামগঞ্জ, আর কে মিশন রোড, ওয়ারী ও পশ্চিম নন্দীপাড়া এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
বিজ্ঞাপন
ডিএসসিসির মুখপাত্র আবু নাছের জানান, আজকের অভিযানে ডিএসসিসির এক নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুল হাসান রুমি ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এলিফ্যান্ট রোডে ৪৭টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন। অভিযানে একটি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় একটি মামলায় পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
দুই নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাসলীমা বেগম এক নম্বর ওয়ার্ডের খিলগাঁও চৌরাস্তা, বউ বাজার ও খিলগাঁও মডেল কলেজ এলাকায় ৫২টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন। তিনি একটি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় একটি মামলায় পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
বিজ্ঞাপন
তিন নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজমুল হুসেইন খান ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জগন্নাথ সাহা রোড ও লালবাগ এলাকায় ৪৭টি বাসাবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করেন। এসময় আদালত কোনো স্থাপনায় মশার লার্ভা পাননি।
চার নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট কাটরা, সোয়ারী ঘাট ও ইমামগঞ্জ এলাকায় ৬৬টি স্থাপনা ও বাসাবাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় দুটি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় দুটি মামলায় ২২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
পাঁচ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মৌসুমি জেরিন কান্তা ৩৯ ওয়ার্ডের আর কে মিশন রোড ও ওয়ারী এলাকায় ৫০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি দুটি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় দুই মামলায় ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
ছয় নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী শুভাশিস ঘোষ ৭৪ নম্বর পশ্চিম নন্দীপাড়া এলাকায় ৬২টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং দুটি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় দুটি মামলায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
নয় নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনজুর হোসেন ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৪০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে আদালত তিনটি স্থাপনায় মশার লার্ভা পান এবং তিনটি বাড়ির মালিককে সতর্ক করেন।
আবু নাছের বলেন, আজকের অভিযানে সর্বমোট ৩৬৪টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়েছে। এসময় আটটি বাসাবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় আটটি মামলায় সর্বমোটিএক লাখ ১২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
উপ-কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়
এদিকে আজ অঞ্চল ছয় এর ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর ও পশ্চিম নন্দীপাড়া এবং রসুলবাগ এলাকায় ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ ও এডিস মশার প্রজননস্থল নিধনে গঠিত ওয়ার্ডভিত্তিক উপ-কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন অঞ্চল দুই এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সুয়ে মেন জো।
এসময় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সুয়ে মেন জো বলেন, আতঙ্কিত না হয়ে সঠিকভাবে সবাই মিলে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা যেন আমাদের বাড়ি, বাড়ির আঙিনা এবং আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখি সে বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে হবে। সেজন্যই আপনাদের নিয়ে এই উপ-কমিটিগুলো গঠন করা হয়েছে। আপনারা সবাই যার যার অবস্থান থেকে এডিস মশার প্রজননস্থল নিধনে কাজ করলে আমরা জনগণকে সুফল দিতে পারব।
আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এ সময় মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে জড়িত ডিএসসিসির কর্মীরা যেন নির্বিঘ্নভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন সেজন্য উপ-কমিটির কাছে সার্বিক সহযোগিতা চান।
জানা গেছে, মশক নিয়ন্ত্রণে ওয়ার্ডভিত্তিক ১০টি করে এই উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, এনজিও কর্মী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয় ১০ সদস্যের প্রতিটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আজিজুল হক, নবিয়াবাদ ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মমিন মিয়াজি, নন্দীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাজনীন বেগম ও সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শিহাব উদ্দিন।
এএসএস/কেএ