ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় কোনো রোগী যখন হাসপাতালে যায় তখন সিট খালি না থাকলেও জরুরি বিভাগে রেখে যেকোনভাবেই হোক চিকিৎসা দেওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে মুমূর্ষু রোগীদের নিয়ে কেনাবেচা হয়, তাদের নিয়ে টাকাপয়সার লেনদেন হয়। এমন খবরে আমরা খুব দুঃখ পেয়েছি। অনেক সময় দেখা যায় রোগীর চাপে হাসপাতালে বেড ফাঁকা থাকে না। তখন যদি কোনো মুমূর্ষু রোগী আসে তাকে ইমার্জেন্সিতে রেখে মানবিকতার দৃষ্টি দিয়ে হলেও চিকিৎসা দেওয়া উচিৎ।’

সোমবার (১৪ আগস্ট) সকালে ঢাকা শিশু হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা শুনেছি এখানে সিন্ডিকেট রয়েছে। বিভিন্ন সময় এসব সিন্ডিকেটের সদস্যরা রোগীদের কাছ থেকে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে এখান সিট ফাঁকা নেই বলে প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে পাঠিয়ে দেয়৷ খুব দুঃখজনক হলেও সত্যি যে এখানকার প্রশাসনিক কিছু লোক এবং আনসারই এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত বলে শুনেছি। আমরা এই ব্যাপারটিই বলবো এসব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুত একটি ব্যবস্থা নিতে হবে।’

হাসপাতাল প্রাঙ্গন অপরিষ্কার ও যেখানে-সেখানে পানি জমে থাকে রোগীদের এমন অভিযোগে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা সকাল থেকে হাসপাতাল ঘুরে তেমন কোনো জায়গা বা অবস্থা দেখতে পাইনি। তবে যেহেতু হাসপাতালের ভেতরে বেশিকিছু স্থানে উন্নয়নমুলক সংস্কার কাজ চলছে সেখানে হয়তো পানি জমে থাকতে পারে। আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলবো তারা যেন সবসময় রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি পরিবেশটাও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখেন।’

এসময় ঢাকা শিশু হাসপাতাল পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাদের এখানে ৬০০ এর অধিক বেড রয়েছে। তার মধ্যে ১০০ বেড স্পেশাল কেয়ারিং। আপনারা যে মুমূর্ষু রোগীর কথা বলছেন আমাদের এখানে স্পষ্ট  নির্দেশনা দেওয়া আছে। যে কোনো মুমূর্ষু রোগী এলে তাকে প্রথমে জরুরি বিভাগে রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে হবে। ঠিক মতো স্যালাইন দিতে হবে। তারপর একান্তই বেড খালি না থাকলে সরকারি হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। তাছাড়া আমরা তো পারি না যে ইনস্ট্যান্ট একটি বেড তৈরি করতে বা এক বেডে দুজনকে রেখে চিকিৎসা দিতে।’

এর আগে সকালে ১১ টার দিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদসহ একটি টিম ঢাকার শ্যামলিতে অবস্থিত ঢাকা শিশু হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডসহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন এবং রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসা সেবা নিয়ে কথা বলেন।

এসআই/এমএসএ