আসামি স্বামী-স্ত্রী
স্ত্রীকে ব্যবসায়ী সাজিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি ডিএসসিসির কর্মকর্তার
স্ত্রীকে ব্যবসায়ী সাজিয়ে দুর্নীতির টাকা বৈধ করার চেষ্টা সফল হয়নি। ৮৩ লাখ ৮৭ হাজার ১৯৩ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্ত্রী মোছা. ছানোয়ারা খাতুনসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম মামলার আসামি হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক সোমা হোড় বাদী হয়ে সংস্থাটির ঢাকা- ১ এর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
বিজ্ঞাপন
মামলার এজহারে বলা হয়, আসামি শফিকুল ইসলাম অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ স্ত্রীর মাধ্যমে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে বলা হয়, আসামি মোছা. ছানোয়ারা খাতুন ১৯৯০ সালে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে যোগদান করেন। ১৫ বছর চাকরি করার পর ২০০৫ সালে তিনি চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় নিয়োজিত হন। তিনি ব্যবসার ধরন হিসেবে প্রথম শ্রেণির ঠিকাদারি সরবরাহকারী উল্লেখ করেন।
বিজ্ঞাপন
আয়কর নথি পর্যালোচনায় ২০০৪-০৫ থেকে ২০১৮-১৯ করবর্ষ পর্যন্ত ব্যবসা থেকে আয় প্রদর্শন করেন ৯৩ লাখ ৩১ হাজার ৭০৫ টাকা। তিনি ব্যবসা সংক্রান্ত ট্রেড লাইসেন্স ব্যতীত ব্যবসা পরিচালনার সঙ্গে প্রযোজ্য রেকর্ডপত্র যেমন কর্মচারী নিয়োগ, তাদের বেতন, মালামাল ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র, কোনো গোডাউন/শোরুম/দোকান বা অফিস মালামাল ক্রয় বিক্রয়ের স্বপক্ষে কোনো গ্রহণযোগ্য তথ্য রেকর্ডপত্র উপস্থাপন করতে পারেননি।
এজহারে বলা হয়, মোছা. ছানোয়ারা খাতুন ব্যবসার পুঁজি ৯ লাখ টাকা উল্লেখ করেছেন। তিনি ৫১ লাখ টাকার বিপরীতে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৯(বি) ধারায় কর পরিশোধ করেছেন। এছাড়া হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স থেকে ৪৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে অগ্রিম ১ লাখ ২০ হাজার টাকা অগ্রিম গ্রহণ করেন।
অন্যদিকে আসামি শফিকুল ইসলাম বিদেশ থেকে প্রাপ্ত ২০ লাখ টাকা তার স্ত্রী মোছা. ছানোয়ারা খাতুনকে ঋণ দেন। আসামি শফিকুল ইসলাম ২০০৯ সালে ফেনী সোনাগাজী উপজেলার মির্জাপুর মৌজায় ১১ শতক নাল জমি ২ লাখ ৮ হাজার টাকায় ক্রয় করেন। ওই জমি পরের বছর তার স্ত্রীকে দান করেন।
সব মিলিয়ে ছানোয়ারা খাতুনের ১ কোটি ৯০ লাখ ৯২ হাজার ৪২৯ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের প্রমাণ পাওয়া যায় দুদকের অনুসন্ধানে। যার মধ্যে আয়, ঋণ ও ব্যয় মিলিয়ে ১ কোটি ৭ লাখ ৫ হাজার ২৩৬ টাকার সম্পদের পক্ষে গ্রহণযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। বাকি ৮৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকার সম্পদের হিসাব পাওয়া যায়নি। যা অবৈধ সম্পদ অর্জন করে বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়েছে। যা স্বামী-স্ত্রী পরস্পর যোগসাজশে অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন।
আরএম/এসএম