গণপরিবহণ না পেয়ে পিকআপ ভ্যানে মানুষ। ছবি : মাহমুদুল হাসান বাপ্পি

রাজধানীর উত্তর বাড্ডা। সময় সকাল সাড়ে ৮টা। অন্য দিনগুলোতে এমন সময় এই এলাকায় ব্যস্ততার শেষ থাকে না। গণপরিবহনে চড়ে জনবহুল এই এলাকাটি থেকে নিজ গন্তব্যে রওনা হন সবাই।

সোমবার (৫ এপ্রিল) করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারের কঠোর নিষেধাজ্ঞার প্রথমদিনে, এই এলাকায় বাস চলাচল দেখা যায়নি। অন্যদিনের তুলনায় কিছুটা কম হলেও মানুষের চলাচল স্বাভাবিক ছিল। বেশির ভাগ মানুষই কর্মস্থলে যেতে দাঁড়িয়ে আছেন গাড়ির অপেক্ষায়।

কারো কারো অফিসের নিজস্ব পরিবহন থাকলেও, অনেকেরই তা নেই। এসব মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন হঠাৎ কোনো বাস এসে সামনে হাজির হবে, এমন এক আশায়। তা নাহলে কীভাবে পৌঁছাবেন কর্মস্থলে?

এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল উত্তরার একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মে কর্মরত আমিরুল ইসলামকে। জবাবে তিনি বললেন, ‘কী আর করব! ভোগান্তি পোহাতে হবে। বাসে গেলে যেখানে ৪০ টাকা লাগত। এখন লাগবে ২৫০ টাকা।’

কার্যত নিষেধাজ্ঞার প্রথমদিনে সিএনজির চাহিদা বেড়েছে প্রায় কয়েকগুণ। রাস্তায় চলাচল করছে এমন বেশির ভাগ সিএনজিতেই যাত্রী আছে। খালি সিনএনজি আসলেই তড়িঘড়ি করে অপেক্ষারত যাত্রীরা সেটা আগে ভাড়া করতে চাইছেন।

এর মধ্যেই সড়কে দেখা গেল অন্যরকম এক চিত্র। পণ্য পরিবহনে ব্যবহার হওয়া পিকআপ ভ্যানে এখন যাত্রী বোঝাই। ছোট্ট এই পিকআপে গাদাগাদি করে উঠেছেন প্রায় ১৫-২০ জন। কারো কারো মুখে মাস্ক থাকলেও, অনেকের মুখ ফাঁকা।

কেন এই পিকআপ ভ্যান বেছে নেওয়া? এমন প্রশ্নে বেশির ভাগ যাত্রীই কথা বলতে না চাইলেও একজন বললেন, ‘রাস্তায় তো কোনো গাড়ি নেই। পিকআপে না উঠে কী করব। একেকজন একেক জায়গায় যাবে। কিছু না পেয়ে বাধ্য হয়েই পিকআপে উঠতে হয়েছে।’

এদিকে অন্য সব যানের চাহিদা বাড়লেও রাজধানীতে খুব একটা নেই রিকশার চাহিদা। এমনটিই জানালেন মোহাম্মদ ফারুক নামের এক রিকশা চালক। তিনি বলেন, বাসের যাত্রীরা রিকশায় উঠছেন না।

ফারুক আরও বলেন, ‘মানুষ ঘর থেকে খুব একটা বের হচ্ছে না। যারা বের হচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগই বাসের যাত্রী। এজন্য রিকশার চাহিদা খুব একটা নেই।’

সরকারের নিষেধাজ্ঞায় রাজধানীর সড়কে বাসের রাজত্ব না থাকলেও রয়েছে প্রাইভেট কার, স্টাফ বাস ও সিএনজির ব্যস্ততা। তবে বাস না থাকায় খোলা থাকা অফিসগুলোতে যেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক পরিবহন না পাওয়া কর্মীদের।

এমএইচ/এমএইচএস