করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। এর আওতায় গত দু’দিন বন্ধ ছিল গণপরিবহন চলাচল। এরপর আজ থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে সিটি করপোরেশন এলাকায় সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।  

সোম ও মঙ্গলবার গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকলেও খোলা ছিল অফিস। এ জন্য গত দুদিন অফিস যেতে ও অফিস থেকে ফিরতে মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আজ (বুধবার) গণপরিবহন চললেও ভোগান্তির চিত্র পুরোপুরি কাটেনি। রাজধানীর আসাদগেট, কলাবাগান, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, বাটা সিগন্যাল, আজিমপুর ও নীলক্ষেত এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা যায়।

গণপরিবহন চললেও তাদের সরকারি নির্দেশ অনুসারে ধারণক্ষমতার অর্ধেক আসন খালি রেখে চলাচল করতে হচ্ছে। আর এর কারণে স্বল্প দূরত্বের যাত্রীদের বাসে তুলতে অনীহা দেখাচ্ছেন কন্ডাক্টররা। ফলে বাসে উঠতে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে অনেক যাত্রীকে।  

আবার বাড়তি ভাড়া নিয়েও অভিযোগ অনেক যাত্রীর। তারা বলছেন, এমনিতেই রাজধানীজুড়ে গণপরিবহনের সংকট রয়েছে। তার মাঝেই যাত্রী পরিবহনে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এমন অবস্থায় যাত্রীরা পড়েছেন মহাবিপাকে। সময় মতো অফিস পাড়ায় পৌঁছাতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে। সেই সাথে ভাড়ার নৈরাজ্য তো রয়েছেই। মাসের শেষে যে টাকা বেতন আসবে তার অর্ধেকের বেশিই চলে যাবে অফিস যাতায়াতে গণপরিবহনের ভাড়ায়। 

ভাড়া নিয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতকারী যাত্রীরা। বাসে উঠলেই তাদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। 

নাজমুল হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, বাস থামানোর পর যখন স্বল্প দূরত্বের কথা বলছি তখন আর কেউ নিতে চাইছে না। সিট খালি থাকলেও গাড়িতে উঠতে দিচ্ছে না।

সাব্বির আহমেদ নামে এক যাত্রী বলেন, প্রতিদিন যাতায়াতেই চলে যায় আড়াইশো থেকে তিনশ টাকা। বেতন আর  কত পাই? এমন অবস্থা যদি দীর্ঘসময় চলতে থাকে তবে আমাদের বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পড়বে। গাড়িতে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করলে অর্ধেক ভাড়া বাড়ানো যেতে পারে কিন্তু ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করার কোনো মানেই হয় না। সংশ্লিষ্টদের উচিৎ অচিরেই এই বাড়তি ভাড়া প্রত্যাহার করা।

প্রশাসনের সমন্বয়হীনতার ভোগান্তি সাধারণ জনগণ পোহাচ্ছে বলে মনে করছেন যাত্রী অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক কেফায়েত শাকিল। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ৬০ শতাংশ বাড়তি ভাড়া আদায় মানুষের প্রতি চরম অবিচার। কেননা করোনাকালে এমনিতেই মানুষের আর্থিক দৈন্যদশা চলছে। তার ওপর এই বাড়তি ভাড়া মানুষের মানসিক যন্ত্রণা ছাড়া আর কিছুই নয় । এ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আরও ভাবা দরকার এবং বাড়তি ভাড়া প্রত্যাহার করে স্বাভাবিক ভাড়া ফিরিয়ে আনা উচিৎ।

আরএইচটি/এনএফ