ফাইল ছবি

‘গণতান্ত্রিক নির্বাচনে বাধা হলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদেরও ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হতে পারে’— মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে হস্তক্ষেপ করে বা সীমিত করে দেয় এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ তারা (যুক্তরাষ্ট্র) নেবে না বলে প্রত্যাশা করি।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমন প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেন তিনি।

শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা আগেও বলেছি যে ভিসা নীতি নিয়ে মানুষ যেন ভুল না বোঝে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে বিষয়টি আরও পরিষ্কার করার প্রয়োজন। বিশেষ করে আমরা গণমাধ্যমকে সম্পৃক্ত করার একটা কথা শুনেছি। যেটা মনে হয় না খুব একটা রাইট চয়েজ। এ বিষয়ে নিশ্চয়ই আপনাদেরও (গণমাধ্যমকর্মীদের) একটা বক্তব্য রয়েছে। সে দেশের (যুক্তরাষ্ট্র) রাষ্ট্রদূত কেন এটা বললেন, এটা নিশ্চই সেই দেশ (যুক্তরাষ্ট্র) খতিয়ে দেখবে।

আরও পড়ুন >> মার্কিন পররাষ্ট্রের ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের ওপর ভিসা নীতি প্রসঙ্গ

তিনি বলেন, আমরা আশা করব যে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে হস্তক্ষেপ করে বা সীমিত করে দেয় এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ তারা (যুক্তরাষ্ট্র) নেবেন না।

চলতি বছরের মে মাসের শেষে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। তখন জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দেশটির ভিসা দেওয়া হবে না। ওই ঘোষণার প্রায় চার মাসের মাথায় গত ২২ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানান, তার দেশ ভিসা নীতির প্রয়োগ শুরু করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরা এর আওতায় রয়েছে।

আরও পড়ুন >> ভিসা নীতির আওতায় পড়ছেন কারা স্পষ্ট করলেন পিটার হাস

এর মধ্যেই গত রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, ভবিষ্যতে গণমাধ্যমও ভিসা নীতির আওতায় যুক্ত হবে। রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য ধরে গত সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এক সাংবাদিক। জবাবে তিনি বলেন, ভিসার তথ্য গোপনীয়। সে কারণে যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, সেই ব্যক্তির নাম নির্দিষ্ট করে প্রকাশ করা হয়নি। তবে এটা স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী দলের কর্মীদের ওপর সেটি কার্যকর করা হবে।

শাহরিয়ার আলম বলেন, ভিসা নীতি ঘোষণায় যা বলা হয়েছে, এখানে সাধারণ মানুষের তো চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। রাজনীতি যারা করেন তারা অনেক ঝুঁকি নিয়ে রাজনীতি করেন, সুতরাং এটা তাদের জন্য কোনো বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় তাদের জন্য যারা বিদেশে গিয়ে আবাস খোঁজেন এবং সুর্নিষ্টভাবে ওই দেশে যদি কারও কোনো পরিকল্পনা থাকে।

আরও পড়ুন >> ভিসা নীতি নিয়ে পুলকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই : তথ্যমন্ত্রী

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভিসা নীতি যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারনাল প্রসেস। আমরা এটাকে গ্রহণ করেছি। কিন্তু আমরা আবারও বলব যে, এটা যেন আরবিটরিটেশন না হয়। আশা করি, আমরা জানতে পারব যখন সেই ইন্ডিভিজুয়ালদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। আমরা সেই বিষয়গুলো গবেষণা করে বোঝার চেষ্টা করব কাদের জন্য এ নীতিটি প্রয়োগ করা হয়েছে। সেখানে যদি কোনো ব্যত্যয় দেখি অবশ্যই আমরা মার্কিন দূতাবাস এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে জানাব।

তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে কী পরিমাণে বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্র সফর গেছেন... সেই ডেটাতে দেখা গেছে যে, করোনার সময়ের নিষেধাজ্ঞা থাকায় এ সংখ্যাটা কমে গিয়েছিল। তবে আগের যেকোনো বছরের তুলনায় চলতি বছরের আগস্টের শেষ দিন পর্যন্ত বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন। অনেক ডিফরেন্ট নোট।

এনআই/কেএ