দুঃখী বইমেলা যেন দাঁড়িয়ে আছে অপেক্ষায়/ ছবি- ঢাকা পোস্ট

এবারের অমর একুশে বইমেলা শুরু থেকেই ক্রেতা-পাঠক-দর্শনার্থীর অভাবে মলিন হয়ে আছে। ছুটির দিনগুলোতে কিছুটা জমে উঠত। সাধারণ দিনে হাতেগোনা অল্পকিছু পাঠক ও ক্রেতা এলেও করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে তা আসছে না। তাই বই বিক্রি না হওয়ায় হতাশায় ২০টির মতো স্টল বন্ধ হয়। তবে বেশিরভাগ প্রকাশক এখনও সামনের ছুটির দিনগুলোর অপেক্ষা করছেন। তাদের আশা, আগামী শুক্র-শনি ও মেলার শেষদিন পহেলা বৈশাখে (১৪ এপ্রিল) মেলা জমে উঠবে। পুরো মাসের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়া যাবে।

বুধবার (৭ এপ্রিল) মেলার ২১তম দিনে গণপরিবহন চালু থাকলেও আশানুরূপ বইপ্রেমীর সমাগম ঘটেনি। প্রকাশকরা বলছেন, দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সময়টাতে মানুষ কর্মব্যস্ত থাকে। ৬টার দিকে মেলা জমে উঠত কিছু। কিন্তু এখন ৫টায় মেলা বন্ধ হয়ে যায়। তাই ছুটির দিন ছাড়া মেলায় কেউ আসতে পারবে বলে মনে হয় না।

আল-হামরা প্রকাশনীর কর্ণধার খান মোহাম্মদ মুরসালীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেলার অবস্থা ভালো না। এমনিতে মেলার শুরু থেকেই করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন কারণে ক্রেতা-পাঠক দর্শনার্থী ছিল না। ছুটির দিনগুলো মেলা কিছুটা জমত। আর এখন তো ‘লকডাউন’ চলছে, তাই মেলায় আমরা প্রকাশকরাই আছি মনে হয়। আশা করছি আগামী শুক্রবার মেলায় লোকসমাগম হতে পারে। এছাড়া মেলার শেষ দিন পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে মেলা জমবে।

ক্রেতা না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে কয়েকটি স্টল

 মেলার সোহরাওয়ার্দী অংশ থেকে আরও বেশি ক্রেতা ও পাঠক খরায় ভুগছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। সেখানে লোকজনের আনাগোনা একেবারেই কম। কারণ, এ বছর মেট্রোরেলের কাজ চলার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি দিয়ে মেলায় আসা-যাওয়া পথ বন্ধ। ফলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের প্রকাশকদের একেবারেই করুণ পরিণতি এবার।   

প্রকাশনা সংস্থা ‘মুক্তধারা’ স্টলটির বিক্রয়কর্মী জয় সেন জানান, তাদের স্টলে কিছু মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বই রয়েছে, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রামেন্দু মজুমদার রচিত ‘মাই বাংলাদেশ মাই বাংলাদেশ’, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর লেখা ‘তাজউদ্দীন আহমদের রাজনৈতিক জীবন’, সেলিনা হোসেন সম্পাদিত ‘মুক্তিযুদ্ধের কিশোর গল্প’ ও আহমদ ছফার ‘জাগ্রত বাংলাদেশ’র মতো বই রয়েছে। কিন্তু এবার এদিকে পাঠক আসছেই না।

বৃষ্টিভেজা বই রোদে দেওয়া হয়েছে/ ছবি- ঢাকা পোস্ট

মেলার নতুন বই
অমর একুশে বইমেলার ২১তম দিনে (৭ এপ্রিল) নতুন বই এসেছে ৬৯টি। জ্যোতি প্রকাশনী থেকে এসেছে আবু আলী’র লেখা ‘আকাশ থেকে জলে’, পাঞ্জেরী এনেছে পলাশ মাহবুবের ‘ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ’, অন্যপ্রকাশ এনেছে শিহাব শাহরিয়ারের ‘নিঃসঙ্গ নদী ছায়া’, দাঁড়িকমা এনেছে মাহিন খানের ‘প্রতিবাদ’, জিনিয়াস এনেছে আবদুল মান্নান সরকারের ‘জনক’ (২য়খ-), ড. আহমদ আব্দুল্লাহর ‘ঢাকার মুসলিম ঐতিহ্য’, ক্রিয়েটিভ এনেছে সন্দীপন ধরের ‘ভয়’, পুথিনিলয় এনেছে বুলবুল চৌধুরীর ‘বাছাই কিশোর গল্প’, বইপত্র এনেছে শামস রহমানের ‘বঙ্গবন্ধু নেতা, নেতৃত্ব ও আজকের বাংলাদেশ’, পেন্সিল এনেছে মোহাম্মদ তালুতের ‘নৈঋত’ প্রভৃতি।

বৃহস্পতিবার একুশে বইমেলার বাইশতম দিন। এদিন মেলা চলবে বেলা ১২টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।

এএইচআর/এইচকে