চাঁদনি চক মার্কেটের পাশে ইসমাইল ম্যানশন কমপ্লেক্সের সামনের চিত্র/ ছবি- ঢাকা পোস্ট

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধে সাত দিনের কঠোর নিষেধাজ্ঞা চলছে দেশে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের তৃতীয় দিনে (৭ এপ্রিল) সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে বেচাকেনা চালাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর গাউছিয়া ও নিউমার্কেট এলাকার বেশ কিছু পাইকারি মার্কেটে চলছে ব্যবসায়ীক কার্যক্রম।

চাঁদনি চক ও গাউছিয়া মার্কেটে ছোট পিকআপে করে মালামাল আসছে/ ছবি- ঢাকা পোস্ট

৫ এপ্রিল থেকে সব ধরনের শপিংমল ও বিপণিবিতান বন্ধ রাখতে বলেছে সরকার। তবে শুরু থেকেই এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে গিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন গাউছিয়া ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা দিনের নির্দিষ্ট একটা সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট খোলা রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তাদের দাবির বিষয়ে কর্ণপাত করেনি কর্তৃপক্ষ। তবু সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে ব্যবসায়ীক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। 

মঙ্গলবার ও বুধবার (৭ এপ্রিল) দেখা যায়, চাঁদনি চক মার্কেটের পাশে ইসমাইল ম্যানশন কমপ্লেক্স, নূর ম্যানশন ও চিশতিয়া পাইকারি মার্কেটের ফটকের সামনে ভিড় করছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কামরাঙ্গীর চরের ব্যবসায়ী রুবেল জানান, সামনে রমজান। তাই পাইকারি দরে কাপড় কিনতে এসেছি। ইসমাইল ম্যানশন থেকে প্রায় লক্ষ টাকার মাল কিনেছি। 

পণ্য কিনে ফিরছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা/ ছবি- ঢাকা পোস্ট

সরকারি নিষেধাজ্ঞায় মার্কেট বন্ধ থাকার সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, লকডাউন তো এখন পুরোপুরি মানা হয় না। আমরা ব্যবসায়ী, ব্যবসা না থাকলে না খেয়ে থাকতে হবে। তাই যোগাযোগ করেই মালামাল কিনতে এসেছি। 

গাজীপুর থেকে আসা ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন বলেন, আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। দোকানে মালামাল নাই। তাই কিছু পাইকারি দরে কাপড় কিনতে এসেছি। আমাগোর মহল্লায়তো আর লকডাউন নাই। 

হাজারীবাগ থেকে আসা ব্যবসায়ী শওকত বলেন, বাইরে শাটার বন্ধ থাকলেও ভেতরে বেচাকেনা চলছে। তাই গাউছিয়া আসলাম কিছু মালপত্র কিনতে। রাস্তা অনেকটাই ফাঁকা। তাই মালামাল নিয়ে যেতে সুবিধা হবে। 

সরেজমিনে চাঁদনি চক ও গাউছিয়া মার্কেটে ছোট পিকআপ ভর্তি মালামাল আনতে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের। কথা হয় চিশতিয়া ম্যানশনে মালামাল ডেলিভারি দিতে আসা কয়েকজনের সঙ্গে। তারা জানান, পুরান ঢাকার ইসলামপুর থেকে চিশতিয়া মার্কেটে কাপড় ডেলিভারি দিতে এসেছি। পথে কোনো সমস্যা হয়নি।

মার্কেট খোলার বিধিনিষেধের বিষয়ে চাঁদনি চক বিজনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন বলেন, গত বছরের সাধারণ ছুটি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ধাক্কা জানুয়ারি মাস থেকে একটু একটু করে সামলে উঠতে শুরু করেছি। আমাদের কাপড়টা পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে যাবে। তারপর কাস্টমাররা কিনবেন, তারপর টেইলরের কাছে বানাতে দেবেন— ঈদকে সামনে রেখে এখন আমাদের আমাদের ব্যবসার পিকআওয়ার চলছে।

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রোধে সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে সারাদেশ সাত দিনের কঠোর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে সরকার। স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়ি আরোপের প্রজ্ঞাপনে ১১টি বিধিনিষেধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে বলা হয়েছে, শপিংমল বন্ধ থাকবে। তবে অনলাইনে পণ্য কেনাবেচা করা যাবে। মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ই-কমার্সের পণ্য ডেলিভারি চলমান রাখার নির্দেশনা দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। 

এসআর/এইচকে