রাজধানীর মিরপুর-২ থেকে যাত্রী নিয়ে গুলিস্তান যাচ্ছেন পাঠাও চালক রনি। তবে দেড় ঘণ্টায়ও এই পথ পাড়ি দিতে পারেননি তিনি। যাত্রী নিয়ে মৎস্য ভবন পর্যন্ত এসেছেন। তপ্ত রোদে যানজটে হাঁপিয়ে ওঠার কথা জানান এই চালক।

রোববার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুর, বিজয় সরণি, তেজগাঁও, মগবাজার, কাকরাইল, মৎস্য ভবন ও প্রেসক্লাব এলাকায় যানজট লেগে থাকার চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনের চেয়ে রোববার পুরোদমে গণপরিবহন, প্রাইভেট কার ও রাইড শেয়ারিংয়ের বাইক চলছে। তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় যানজট ঠেলে চলতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠছেন যাত্রী ও রাইড শেয়ারিংয়ের চালকরা।

প্রেস ক্লাব এলাকায় শরিফুল নামে এক যাত্রী ঢাকা পোস্টকে বলেন, কুড়িল থেকে সদর ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি দুই ঘণ্টা আগে। রোদের সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় আজ যানজটও বেশি। গত কয়েকদিনের নিষেধাজ্ঞায় রাস্তায় চলাচল করে স্বস্তি পেয়েছি। কিন্তু আজ এত যানজট, ঘামে শরীর ভিজে গেছে। জানি না কখন পৌঁছাতে পারব।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় গত ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত সারাদেশে শপিংমল, দোকান-পাট, হোটেল, রেস্তোরাঁসহ গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। প্রজ্ঞাপনে ১১ দফার নির্দেশনায় সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত ও ব্যাংক জরুরি প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে খোলার রাখার কথা বলা হয়েছিল।

কিন্তু গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করলেও সরকারি-বেসরকারি কর্মজীবীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বুধবার (৭ এপ্রিল) থেকে ঢাকাসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন এলাকায় বাস চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার। অন্যদিকে দোকান মালিক ও কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ৯ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শপিংমল ও দোকান খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়।

এদিকে সাতদিনের কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই শুক্রবার (৯ এপ্রিল) সকালে সরকারি বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশে করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। কিন্তু এতেও কমেনি জনগণের উদাসীনতা। এ অবস্থায় জনস্বার্থে সরকার আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সক্রিয় চিন্তা ভাবনা করছে।’

পরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, সরকার ১৪ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত এক সপ্তাহ কঠোর লকডাউনে যাচ্ছে, যেটি হবে কমপ্লিট (পূর্ণাঙ্গ) লকডাউন। এই লকডাউনের সময় বাড়ানো হবে কি না তা নিয়ে ২০ তারিখে পুনরায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, মানুষের কাছে মেসেজ হলো- সতর্ক থাকতে হবে, বাইরে আসা যাবে না। এটি অত্যন্ত কঠিন একটি লকডাউন হবে। অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে, বাইরে আসা যাবে না। শুধু জরুরি সেবা চালু থাকবে৷ সব যানবাহনও বন্ধ থাকবে।

জানা গেছে, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউনের বিষয়ে আজই প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে।

এসআর/এসএসএইচ/জেএস