আমাদের নতুন সময় এর সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান

গত বছর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে দেশের মুদ্রিত সংবাদপত্র শিল্প অভিঘাতের মুখে পড়েছে। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে কিংবা বেতন ভাতা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কমে গেছে বিভিন্ন সংবাদপত্রের প্রচারসংখ্যাও। 

এই সংকটের মাত্রা আরও বাড়িয়ে তুলছে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ। দেশের বিশিষ্ট সাংবাদিক, আমাদের নতুন সময় এর সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান মনে করেন, যতক্ষণ করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে না আসছে ততক্ষণ সংবাদপত্রে দুর্যোগকালীন জরুরি অবস্থা থাকবে।

সংবাদপত্র প্রকাশনায় আর্থিক সংকটসহ নানা ধরনের অনিশ্চয়তা দূর হওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ফেসবুক পোস্টে তিনি এসব বিষয়ে তার মতামত তুলে ধরেছেন। বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে বিশিষ্ট সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, এ বিষয়ে ১৪ এপ্রিল লেখাটি রচিত হয়েছে। আজ আপ করা হয়েছে।

ফেসবুক পোস্টে নাঈমুল ইসলাম খান লিখেছেন-

১. সংবাদপত্র প্রকাশনায় আর্থিক সংকট এবং নানাবিধ অনিশ্চয়তা দূর হবে না। (যেমন- আজ ১৫ এপ্রিল আমাদের পত্রিকাগুলোর জন্য নিউজপ্রিন্ট কেনার টাকা তহবিলে নেই।)

২. সংবাদপত্র ব্যবস্থাপনায় নৈরাজ্য এবং দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর প্রচেষ্টা চালানো যাচ্ছে না। (মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করতে হবে কিন্তু সে সুযোগ এই করোনাকালে হচ্ছে না।)

৩. সংবাদপত্রে বিক্রি ও পাঠক বৃদ্ধির ব্যাপক উদ্যোগ এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু করা যাবে না।

৪. কর্মীদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি এবং এ সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা দূর করা যাবে না। (যাচ্ছে না।)

৫. ততক্ষণ পর্যন্ত স্বেচ্ছায় স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণেচ্ছু কর্মীদের নিয়েই সার্বিক সতর্কতার মধ্যে পত্রিকা প্রকাশ করতে হবে।

৬. সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানে এখন কোনো কর্মীর অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা তথা খামখেয়ালীপনার ব্যাপারে জিরো টলারেন্সের সঙ্গে জিরো অকারেন্সের নীতি প্রয়োগ করতে হচ্ছে। (জিরো অকারেন্স)

৭. প্রতিষ্ঠানের সাথে খণ্ডকালীন বা প্রদায়কের মতো অথবা যারা ‘যখন যেমন যতটুকু খুশি’ ভিত্তিতে আমাদের সাথে যুক্ত রয়েছে, এখন সময় এসেছে তাদের জন্য দীর্ঘ বিরতির।

৮. প্রতিষ্ঠানের সর্বপ্রকার অপচয়, অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার এখনই সর্বোচ্চ প্রয়োজন।

৯. এসময় কর্মী হিসেবে কেবল তারাই উপযুক্ত যারা নির্ধারিত, সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব কর্তব্যের অনেক বেশি সময় দিয়ে অনেক বেশি কাজ করতে দ্বিধাহীনভাবে প্রস্তুত।

১০. এমন কঠিন দুঃসময়ে কর্মীদের একাংশ যারপরনাই পরিশ্রম করবেন অথচ কেউ কেউ ফাঁকি দিয়ে চলবেন এটা বরদাস্ত করার মতো নয়।

১১. এখন এমনই ক্রান্তিকাল যখন কর্মবণ্টন ভুলে গিয়ে অনেক সময় অন্য সহকর্মীর কাজে, এমনকি অন্য বিভাগের কাজে সহায়তার হাত প্রসারিত করতে হবে দ্বিধাহীনভাবে।

১২. চলমান পরিস্থিতিকে জরুরি অবস্থা হিসেবে মানতে হবে। এই সময়কালটা দীর্ঘায়িত হবে। এসময় ছোট বিচ্যুতি বড় সংকটে ফেলবে, তাই লঘু পাপেও গুরুদণ্ড এখন ন্যায্য বিবেচিত হবে।

সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খানের এই লেখার অনুলেখক ফাহমিদা তিশা

পিএসডি/আরএইচ