সন্ধ্যার পরও জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসার সামনে পুলিশের সতর্ক অবস্থান/ ছবি: ঢাকা পোস্ট

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গ্রেফতারের পর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। মূল সড়ক থেকে মাদরাসা গেটে প্রবেশের রাস্তার মুখে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এ বাহিনীর সদস্যরা। অন্যদিকে মাদরাসা গেটের ঠিক সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার (১৮ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে মামুনুল হককে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে কারণে মাদরাসার প্রবেশ পথের ঢালে আলী অ্যান্ড নূর রিয়েল স্টেট মোড়ের সামনে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ।

সন্ধ্যার পরও সেখানে পুলিশের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। পুলিশের অবস্থানের কারণে সাধারণ কোনো এখানে জটলা করতে পারছে না। পাশাপাশি জনসাধারণের চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

অন্যদিকে, মাদরাসা গেটের ঠিক সামনে দুপুর থেকে শিক্ষার্থীদের দেখা গেলেও সন্ধ্যার পর বাইরে একত্রিত অবস্থায় তাদের আর দেখা যায়নি।

এখানে দায়িত্বরত মোহাম্মদপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক দেবাশীষ মুদক বলেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে মাদরাসা গেটের সামনের দিকে অবস্থান নিয়েছি। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা বা অদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা তৎপর রয়েছি।’

মাদরাসা গেটের সামনে শিক্ষার্থীদেরও সরব উপস্থিতি দেখা গেছে/ ছবি: ঢাকা পোস্ট

সরেজমিনে দেখা গেছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের প্রায় শতাধিক সদস্য সেখানে উপস্থিত রয়েছেন। এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মাদরাসা ও আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

মামুনুল হককে গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গ্রেফতারের পর তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। আপাতত মোহাম্মদপুর থানার মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। অন্য মামলার বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মামুনুলের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা, থানায় হামলা, রেজিস্ট্রার অফিসে হামলা ভাঙচুরসহ অনেকগুলো মামলা রয়েছে। এসব মামলার তদন্ত চলছিল। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাকে নজরদারিতে রেখেছিলাম, পাশাপাশি এসব মামলার তদন্ত করছিলাম। তদন্তে তার সুস্পষ্ট সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

গত এক মাস ধরে ব্যক্তিগত বিষয় আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে হেফাজতের আন্দোলনসহ নানা কারণে আলোচনার কেন্দ্রে আছেন মামুনুল হক।

নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকালে ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সহিংসতায় দেশে ১৭ জনের মৃত্যু হয়। এসব সহিংসতার ঘটনায় সারাদেশে প্রায় অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে। মামুনুলকে এসব ঘটনার মূল ইন্ধনদাতা হিসেবে মনে করছে পুলিশ।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা যায়, ২৬ মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সহিংসতার ঘটনায় গত ৫ এপ্রিল হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় দুই হাজার জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-দফতর সম্পাদক খন্দকার আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলাটি করেন।

এএসএস/এমএসি/এফআর