সহযোগিতার জন্য ফেসবুক লাইভে হাটহাজারী মাদরাসা কর্তৃপক্ষ
দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় প্রতিবছরের মতো এ বছরও রমজানে সহযোগিতা করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আবেদন জানিয়েছে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২১ এপ্রিল) মাদরাসার ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে এ সহযোগিতা চাওয়া হয়।
হাটহাজারী মাদরাসা পরিচালনা পরিষদের প্রধান আল্লামা মুফতি আব্দুস সালাম চাটগামীর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাদরাসার শিক্ষক ড. নুরুল আফছার আজহারী।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ১২০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই মাদরাসা আল্লাহর রহমত ও দয়া এবং সর্বসাধারণের আর্থিক অনুদান ও সাহায্য-সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করেই ইসলামের নিরলস খেদমত করে আসছে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আপনারা জানেন, করোনা মহামারির কারণে গতবছরও কওমি মাদরাসাগুলো রমজানের যাকাত, ফিতরা, সাধারণ দান ও কোরবানির চামড়া বিক্রির অর্থসংগ্রহে বড় ধরনের সংকটে পড়ে। এ বছরও করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় কঠোর লকডাউন দেওয়া হয়েছে। যান চলাচল ব্যাপকভাবে সীমিত হয়ে যাওয়ায় মাদরাসার উস্তাদ ও প্রতিনিধিগণ গণমানুষের কাছে গিয়ে যাকাত, ফিতরা ও অন্যান্য দানের অর্থ সংগ্রহে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, আল্লাহ না করুন, এবারের রমজানেও গোরাবা ফাণ্ডের অর্থ সংগ্রহ প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়লে প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম এবং হাজার হাজার গরিব ও এতিম শিক্ষার্থীর খাবার সংস্থান সংকটের মুখে পড়তে পারে।
তিনি বলেন, চলমান লকডাউনের কারণে মাদরাসার প্রতিনিধিরা সরাসরি যাওয়ার সুযোগ পাবেন না। গত বছরের মতো এ বছরও রমজানে আপনাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানের বিশাল ব্যয় নির্বাহে সহযোগিতার অংশ হিসেবে নিজের ছদকা, ফিতরা ও দানের অর্থ দিতে পারেন। ব্যক্তিগত বা সম্মিলিতভাবে মাদরাসার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অথবা বিকাশ নাম্বারে জমা দিতে পারেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী জামেয়ার এই সংকটে আপনারা পাশে থাকবেন। স্থানীয় অন্যান্য কওমি মাদরাসার প্রতিও খেয়াল করবেন।
লাইভে আরও বলা হয়, রমজান কওমি মাদরাসার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মাস। এই সময়ে মুসলমানরা যাকাত, ফিতরা ও দান-সদকা বেশি পরিমাণে দিয়ে থাকে। আর মাদরাসাগুলোর লাখ লাখ গরিব ও এতিম ছাত্রের ভরণ-পোষণ ও শিক্ষা ব্যয়ের গোরাবা ফান্ডের বেশিরভাগ অর্থ এই রমজান মাসেই সংগ্রহ করা হয়। আর কিছু অর্থ সংগ্রহ হয়ে থাকে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রির অর্থ থেকে। যা দিয়ে গরিব এতিম ছাত্রদের সারা বছরের খাবার ও অন্যান্য খরচ নির্বাহ করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসা প্রতিষ্ঠার ১২০ বছর পর কিছু আদর্শচ্যুত ও স্বার্থান্বেষী দুষ্কৃতকারী দেশের ভেতরে ও দেশের বাইরে থেকে মাদরাসার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এলাকার তৌহিদী জনতার কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে, যখনই শুনবেন এই মাদরাসা দুষ্কৃতকারীদের কোনো ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে তখনই আপনারা যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসবেন।
এসময় হেফাজতে ইসলামের আমির ও মাদরাসার শিক্ষা পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, পরিচালনা পরিষদ সদস্য আল্লামা ইয়াহিয়া, সিনিয়র শিক্ষক মুফতি জসিম উদ্দিন, সরকারি শিক্ষা পরিচালক মাওলানা শোয়েবসহ সিনিয়র শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
কেএম/ওএফ/জেএস